ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সম্ভব নয়

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৭
আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সম্ভব নয় অতিথি এটিএম শামসুল হুদাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা, ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা: সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের দিকে যেতেই হবে। এ যন্ত্র ব্যবহারে এটা একদিকে যেমন অর্থ সাশ্রয়ী তেমনি ফলাফল প্রকাশও দ্রুত করা যায়। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সম্ভব নয়। কেননা, এই ভোটযন্ত্রের প্রতি রাজনৈতিক দল ও জনগণের এখনও আস্থা তৈরি হয়নি। আর এজন্য সময়ের প্রয়োজন।

সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ড. এটিএম শামসুল হুদা শনিবার (০১ এপ্রিল) বাংলাদেশ ফিল্ম ডেভেলপমেন্ট করপোরেশনের (বিএফডিসি) আট নম্বর ফ্লোরে আয়োজিত এক ছায়া সংসদে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। ছায়া সংসদটি দুইটি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের নিয়ে আয়োজন করে ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি।



এটিএম শামসুল হুদা বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য প্রশাসন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী, রাজনৈতিক দল- সবার ভূমিকা রাখা প্রয়োজন। আমাদের দেশে সবচেয়ে বড় সমস্যা হচ্ছে আস্থার অভাব। বিশেষ করে দলগুলো নির্বাচন কমিশনের প্রতি আস্থা রাখতে চায় না। ফলে নির্বাচন সুষ্ঠু হলেও তা নিয়ে প্রশ্ন তোলে।
 
তিনি বলেন, বিরোধীদলের অবস্থানই হচ্ছে সমালোচনা করা। তারা ভোটের আগেই নির্বাচন সুষ্ঠু হচ্ছে না বলে একটা জনমত গঠনের চেষ্টা করে। এতে বিরোধীদলের প্রার্থী জয়ী হলেও তারা নির্বাচন নিয়ে প্রশ্ন রেখেই দেন। সদ্য অনুষ্ঠিত কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনের বিজয়ী প্রার্থীও বলেছেন- আমি আরও বেশি ভোট পেতাম...।
 
সাবেক এই সিইসি বলেন, বড় সমস্যা হচ্ছে নির্বাচনে জয়ী হওয়ার মানসিকতা। কেননা, আমাদের মতো দেশে একটা কথাই আছে-উইনার টেকস অল। অর্থাৎ নির্বাচনে যে জয়ী হয় সে ব্যবসা, সামাজিক প্রতিপত্তিসহ সব অর্জন করে।

তিনি বলেন, সংসদ নির্বাচনে ১০ কোটি ভোটারের জন্য ব্যালট পেপার ছাপানো ও তা কেন্দ্রে কেন্দ্রে বিতরণ একটি বিরাট কর্মযজ্ঞ। এ কাজে দেড় লাখেরও বেশি সরকারি-বেসরাকরি লোকবল কাজে লাগাতে হয়। সেক্ষেত্রে ইভিএমে একবার সেই টাকা বিনিয়োগ করলেই বারবার তার প্রয়োজন হয় না। এছাড়া আমাদের দেশের ইভিএম’র সঙ্গে কোনো নেটওয়ার্ক নেই। কাজেই এটি বাইরে থেকে হ্যাক করারও কোনো ব্যবস্থা নেই। আবার ফলাফলও দ্রুত দেওয়া যায়। বর্তমানে পৃথিবীর ২৭টি দেশ ইভিএম ব্যবহার করছে। এরমধ্যে অনেক দেশের ইভিএম অনলাইনের সঙ্গে যুক্ত। বিশেষ করে আমেরিকার ইভিএম, সেটি ইন্টারনেটের সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় হ্যাক করার শঙ্কা থেকে যায়। কিন্তু আমাদের ইভিএম তা নয়।
 
তিনি আরও বলেন, সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের দিকে যেতেই হবে। এ যন্ত্র ব্যবহারে এটা একদিকে যেমন অর্থ সাশ্রয়ী তেমনি ফলাফল প্রকাশও দ্রুত করা যায়। তবে আগামী সংসদ নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার সম্ভব নয়। কেননা, এই ভোটযন্ত্রের প্রতি রাজনৈতিক দল ও জনগণের এখনও আস্থা তৈরি হয়নি। আর এজন্য সময়ের প্রয়োজন।
 
কাজী রকিবউদ্দীন কমিশনের সমালোচনা করে তিনি বলেন, তাদের নেতৃত্বাধীন কমিশন ইভিএম-এর ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখতে পারেনি। তারা ব্যর্থ হয়েছে। এটা খুব দুঃখজনক। তাদের সব ক্ষমতা ছিল। কিন্তু তারা প্রস্তুতকারী প্রতিষ্ঠান বুয়েটের সঙ্গে চুক্তি নবায়ন করেননি। আবার পাওনা টাকাও পরিশোধ করেননি। তাই বুয়েটও আর এগিয়ে আসেনি। ফলে ইভিএম নষ্ট হওয়ায় তা আর সারানোও যায়নি।

‘ইভিএম ব্যবহার নির্বাচনে সর্বোচ্চ স্বচ্ছতা নিশ্চিত করবে কি না’ শীর্ষক ছায়া সংসদে সরকারি দলে বক্তব্য রাখে, বিজিএমইএ ইউনিভার্সিটি অব ফ্যাশন অ্যান্ড টেকনোলজি। আর বিরোধীদলের ভূমিকা নেয় ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি। এতে স্পিকারের আসনে ছিলেন আয়োজক সংগঠনের চেয়ারম্যান হাসান আহমেদ চৌধুরী কিরণ।
 
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৭/আপডেট ১৬০০ঘণ্টা
ইইউডি/আইএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।