ঢাকা, শুক্রবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

বিসিসি’র কর্মচারীদের ধর্মঘটে বরিশাল নগরে ময়লার স্তুপ

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১, ২০১৭
বিসিসি’র কর্মচারীদের ধর্মঘটে বরিশাল নগরে ময়লার স্তুপ বিসিসি’র কর্মচারীদের ধর্মঘটে বরিশাল নগরে ময়লার স্তুপ-ছবি: বাংলানিউজ

বরিশাল: বকেয়া বেতন-ভাতার দাবিতে বরিশাল সিটি করপোরেশনের (বিসিসি) কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ধর্মঘট ও লাগাতার কর্মবিরতির কারণে চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন নগরবাসী।

গত সোমবার (২৭ মার্চ) থেকে শুরু হওয়া এ কর্মসূচির কারণে করপোরেশনের কোনো বিভাগেই কোনো কাজকর্ম না হওয়ায় স্থবিরতা দেখা দিয়েছে পুরো নগরে।

নগর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার দায়িত্বে থাকা প্রায় ১ হাজার ২শ' পরিচ্ছন্নতাকর্মীও তাদের কাজকর্ম বন্ধ রেখেছেন।

ফলে শনিবার (০১ এপ্রিল) পর্যন্ত টানা ছয়দিন ধরে নগরের বিভিন্ন আবাসিক ও বাণিজ্য এলাকা থেকে কোনো বর্জ্য অপসারণ করা হচ্ছে না। বিসিসি’র কর্মচারীদের ধর্মঘটে বরিশাল নগরে ময়লার স্তুপ-ছবি: বাংলানিউজবর্জ্য অপসারণ বন্ধ থাকায় ছোট-বড় সব সড়কেই জমেছে ময়লার স্তুপ। দুর্গন্ধে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষকে বেশিরভাগ সময়ে বিভিন্ন সড়ক দিয়ে নাক চেপে হাঁটতে হচ্ছে।

সকালে নগর ঘুরে দেখা গেছে, ব্যস্ততম এলাকা সদর রোড, ফজলুল হক অ্যাভিনিউ, হাসপাতাল রোড, কালীবাড়ি রোড, আলেকান্দা এলাকা, পোর্ট রোড, বগুড়া রোড, বটতলা রোড, ফকিরবাড়ি রোডসহ ছোট-বড় বিভিন্ন সড়কের ওপর ময়লার স্তুপ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে পড়ে রয়েছে। বিভিন্ন এলাকায় ময়লা এমনভাবে জমা হয়েছে যে, চলাচলের সড়ক কিংবা পায়ে হাঁটা ফুটপাত বন্ধ হয়ে যাওয়ার উপক্রম।

আন্দোলনরত স্টাফ আবুল কালাম রানা জানান, পাঁচ মাসের বকেয়া বেতন ও ৩২ মাসের প্রভিডেন্ট ফান্ড না দেওয়া পর্যন্ত নিয়মিত পাঁচশ’ ৪২ জন স্টাফ ও তিন মাসের বকেয়া বেতন দেওয়া না পর্যন্ত প্রায় দেড় হাজার অনিয়মিত কর্মচারী আন্দোলন করছেন। ফলে পরিচ্ছন্নতা বিভাগসহ বিভিন্ন দফতরের কর্মকাণ্ড বন্ধ হয়ে যায়।

বিসিসি’র পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা জানান, বেতনের দাবিতে চলমান আন্দোলনের কারণে গত কয়েকদিন ধরে নগরের ময়লা অপসারণ না করায়  সমস্যা হয়েছে। আন্দোলন বন্ধ না হলে এ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব নয়। বিসিসি’র কর্মচারীদের ধর্মঘটে বরিশাল নগরে ময়লার স্তুপ-ছবি: বাংলানিউজচকবাজারের ব্যবসায়ী রিয়াজ উদ্দিন বলেন, রাস্তাঘাটে ময়লা থাকায় দুর্গন্ধে চকবাজার এলাকায় তেমন ক্রেতা আসছেন না। কাঠপট্টি, গির্জা মহল্লারও চিত্র একই।

অপরদিকে স্বল্প সময়ের মধ্যে নগর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন করতে গত বুধবার (২৯ মার্চ) বিসিসি’র মেয়র, প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তাকে উকিল নোটিশ দিয়েছিলেন একজন আইনজীবী।

বেসরকারি সংগঠন স্কোপের নির্বাহী পরিচালক কাজী এনায়েত হোসেন সিটি করপোরেশনের বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে শ্বেতপত্র প্রকাশ এবং দুর্বিসহ অবস্থা থেকে মুক্তি ও নগরবাসীর জনদুর্ভোগ কমাতে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়ার আহ্বান জানান।

লিখিত বার্তায় তিনি বলেন, বরিশাল নগরে ময়লা-আর্বজনা অপসারিত না হওয়ায় জনজীবন আজ বিপর্যস্ত। পরিবেশ দূষণের ফলে সর্বসাধারণের ভয়াবহ স্বাস্থ্যঝুঁকির আশঙ্কাও প্রকাশ করেন তিনি।

কিন্তু দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়া ও প্রয়োজনে আরো কঠোর কর্মসূচির ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারীরা। তারা শুক্রবার (৩১ মার্চ) রাতে শহীদ আবদুর রব সেরনিয়াবাত প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে বিসিসি’র পরিচ্ছন্নতা কর্মকর্তা দীপক লাল মৃধা বলেন, করপোরেশনের আয় বেড়েছে। বকেয়া বেতন পরিশোধে মেয়রকে স্মারকলিপি দিয়েও কোনো কাজ না হওয়ায় প্রতীকী আন্দোলন আজ লাগাতারে রুপ নিয়েছে।

মেয়র আহসান হাবিব কামাল বলেন, শ্রমিকদের বকেয়া আছে দুই মাসের বেতন। কিছু কর্মকর্তা ব্যক্তিস্বার্থে শ্রমিকদের নিয়ে আন্দোলন করছেন। সেবা বন্ধ থাকায় নগরবাসী দুর্ভোগে পড়েছেন, যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৬০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০১, ২০১৭
এমএস/এএটি/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।