সোমবার (৩ এপ্রিল) গভীর রাতেও জেলার বিভিন্ন উপজেলায় শিলাবৃষ্টি হয়। এ পরিস্থিতিতে ফসলের দুরাবস্থার কথা ভেবে দিশেহারা হয়ে পড়েছেন কৃষক।
২৮ মার্চ (মঙ্গলবার) দিনগত রাত ১টা থেকে হঠাৎ বৃষ্টি শুরু হয়। ওই রাতেই জেলার ভারত সীমান্তবর্তী কলমাকান্দা উপজেলার খারনৈ ও লেঙ্গুরা দুই ইউনিয়নের কয়েক হাজার একর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে যায়।
খারনৈ ইউনিয়নের বাউসাম গ্রামের কৃষক আবু তাহের ও মো. ফজলুল হক বাংলানিউজে জানান, তেলেঙ্গা, ভাইগ্নাহরি, রতনপুরি, ছিচড়াখালি ও গলইয়ের সমস্ত ফসল বৃষ্টির পানিতে তলিয়ে গেছে।
কৃষক তাহের বলেন, ধারদেনা করে ১২ একর জমিতে ফসল চাষ করেছিলাম। এখন বৃষ্টিতে জমির সব ফসল ডুবে গেছে। যে ক্ষতি হয়েছে তা কিছুতেই কাটিয়ে উঠতে পারবোনা।
সুদে টাকা নিয়ে ৪ একর জমিতে ধান লাগিয়েছি। সব শেষ হয়ে গেল। এর আগে অসময়ে এ ধরনের বৃষ্টি কখনো দেখেনি বলে মন্তব্য করেন কৃষক ফজলু।
চরম হতাশা নিয়ে কৃষক দ্বীন ইসলাম, আব্দুল গণি ও সোবহান মিয়া জানান, দীর্ঘদিন ধরে এ অঞ্চলের কৃষকরা ফসল রক্ষার বাঁধ নির্মাণের জন্য জোর দাবি জানিয়ে আসছেন। ফসল রক্ষা বাঁধ নির্মাণ হলে জমিগুলো পানিতে তলিয়ে কৃষকদের এতো বড় ক্ষতি হতো না। হাওরাঞ্চল মোহনগঞ্জ ও খালিয়াজুরি দুই উপজেলায় বৃষ্টির পানিতে ভাসিয়ে নিয়েছে ১০টি ফসল রক্ষা বাঁধ। এতে তলিয়ে গেছে ৫ হাজার হেক্টর জমির ফসল।
নেত্রকোনা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক বিলাস চন্দ্র পাল বাংলানিউজকে জানান, বৃষ্টিতে সব মিলিয়ে জেলায় পাঁচ হাজার হেক্টরের মতো জমির ফসল পানির নিচে রয়েছে। যা কৃষক ও ফসলের জন্য হুমকি স্বরূপ। হাওরাঞ্চলের ঝুঁকিপূর্ণ সব বাঁধ টিকিয়ে রাখতে হাজারো কৃষক দিনরাত পরিশ্রম করছেন।
জনপ্রতিনিধিসহ কৃষকদের অভিযোগ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অবহেলার কারণে কৃষক বারবার ক্ষতির মুখে পড়ে সর্বশান্ত হচ্ছেন।
পাউবো নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু তাহের বাঁধ ভাঙার জন্য অসময়ে শুরু হওয়া বৃষ্টিকে দায়ী করে বলেন, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের উপর কারো হাত নেই।
বাংলাদেশ সময়: ১১৪০ ঘণ্টা, ০৩ এপ্রিল, ২০১৭
আরএ