সূত্র জানায়, স্মার্টকার্ড নিয়ে মানুষের ব্যাপক সাড়া পাওয়ায় এবার সেবাটিকে আরো সহজ করার চিন্তা করছে নির্বাচন কমিশন। এ পরিকল্পনার অংশ হিসেবেই ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেবাটি চালু করা হবে।
পরিকল্পনাটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যে নির্বাচন কমিশন সব কর্মকর্তা-কর্মচারীর কাছে ইনোভেটিভ আইডিয়া চেয়েছে। ইতোমধ্যে আইডিয়া দিতে উপজেলা ও থানা পর্যায় পর্যন্ত সব কর্মকর্তাকে নির্দেশনা পাঠিয়েছে সংস্থাটি। ইসি’র প্রোগ্রামার (উপাত্ত প্রক্রিয়াকরণ) প্রকৌশলী মোহাম্মদ আরিফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ সংক্রান্ত আইডিয়া আহবান করা হয়েছে।
নির্দেশনায় আগামী ০৬ এপ্রিলের মধ্যে এ সংক্রান্ত আইডিয়া পাঠাতে বলা হয়েছে।
ইসি’র উপ-সচিব পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এখন পর্যন্ত স্মার্টকার্ড বা এনআইডি সেবা নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কোনো সেবা দেওয়া হচ্ছে না। অথচ সরকারের অনেক সংস্থা অনেক আগেই তাদের সেবা ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিয়ে গেছে। এ পরিকল্পনাটি বাস্তবায়িত হলে জনসাধারণের অনেক উপকার হবে।
সম্প্রতি সাতক্ষীরার ভোটার আব্দুল হালিমকে স্মার্টকার্ড সম্পর্কিত তথ্য পেতে ইসিতে এসে ঘোরাফেরা করতে দেখা গেছে। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমার এনআইডি সংশোধনে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কাছে আবেদন করেছিলাম। কিন্তু একমাস হয়ে গেলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তাই নির্বাচন কমিশনে এসেছি সমাধান পেতে’।
এমন হাজারো নাগরিক প্রতি মাসে এনআইডি সংশোধন ও স্থানান্তর সংক্রান্ত সমস্যা সমাধানের তথ্য পেতে নির্বাচন কমিশনে আসেন। ইসি’র কর্মকর্তারা মনে করছেন, ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে সেবাটি নিয়ে যেতে পারলে মানুষের দুর্ভোগ কমে আসবে।
ইসি’র জনসংযোগ পরিচালক এসএম আসাদুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের ওপেন কোনো পেজ বা গ্রুপ ফেসবুকসহ অন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পেজ নেই, যার মাধ্যমে সেবা দেওয়া যায়। তাই এটি হলে ভালো হবে’।
ইসি’র সচিব মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘জাতীয় পরিচয়পত্র সেবাকে আরো সহজ করতে আমরা চেষ্টা করছি। তাই কর্মকর্তাদের কাছে ইনোভেটিভ আইডিয়া চাওয়া হয়েছে। তাদের আইডিয়াগুলো পর্যালোচনা করে যথাযথ সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে’।
২০০৭ সালে এটিএম শামসুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন দেশের প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র সরবরাহের উদ্যোগ নেয়। এরপর তারা ২০১১ সালে দেশের ভোটারদের স্মার্টকার্ড দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়। সে অনুসারে বর্তমানে স্মার্টকার্ড সরবরাহের কাজ চলছে। তবে সে সময় তড়িঘড়ি করে তথ্য নেওয়ায় ১ কোটিরও বেশি ভোটারের তথ্যে ভুল রয়েছে। তাই ভুল সংশোধন, নতুন ভোটার হতে কিংবা ভোটার এলাকা স্থানান্তরের জন্য প্রতিদিনই আবেদন করছেন ভোটাররা। আর এতো ভোটারের আবেদন সামলাতে হিমশিম খাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। কেননা, আবেদনগুলো যথাযথ হচ্ছে না। ফলে সময় ব্যয় হলেও নির্বাচন কমিশন তার সমস্যার সমাধান দিতে ব্যর্থ হচ্ছে।
এনআইডি শাখার পরিচালক (অপারেশন্স) মো. আব্দুল বাতেন বলেন, ‘অনেক ভোটার সঠিক নিয়ম মেনে আবেদন করেন না। তাই তাদের আবেদন পর্যালোচনা করার পর সমস্যার সমাধান দেওয়া যায় না। ফলে ওই ব্যক্তিকে আবারো আবেদন করতে হয়। আর এটি হয় সঠিক তথ্য না পাওয়ার কারণে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অফিসিয়াল কার্যক্রম চালানো গেলে এ সমস্যার সমাধান হবে’।
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৩, ২০১৭
ইইউডি/আরআর/এএসআর