ঢাকা, শনিবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ফরিদগঞ্জে সেতু আছে রাস্তা নেই

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫০৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৭
ফরিদগঞ্জে সেতু আছে রাস্তা নেই নলডগী গ্রামের লেদি খালের ওপর নির্মিত সেতু

চাঁদপুর: চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার ১০ নম্বর গোবিন্দপুর (দক্ষিণ) ইউনিয়নের নলডগী গ্রামের লেদি খালের ওপর সেতু নির্মাণ করা হলেও সেতুর দুই পাশে নেই কোনো রাস্তা।  

২০১৬ সালের জুন মাসে সেতুটি নির্মাণ শেষ হলেও এখনো রাস্তা নির্মাণের কোনো উদ্যোগ দৃশ্যমান নয়। বিষয়টি নিয়ে স্থানীয়দের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।

সেতুটি নির্মাণে ব্যয় হয়েছে ৩০ লাখ ৯০ হাজার টাকা।

ওই সেতু সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা জানান, সেতুর একপাশে বাড়িতে যাওয়ার সরু রাস্তা, অপর পাশে ফসলি জমি। কার প্রস্তাবে এই সেতু নির্মাণ করা হয়েছে তা স্থানীয়রা জানেন না।  

স্থানীয় গাজী বাড়ির নলি মিয়া গাজীর ছেলে শাহনুর গাজী বাংলানিউজকে বলেন, লেদি খালের ওপর যে সেতু নির্মাণ করা হয়েছে, এর জন্য গ্রামবাসী কোনো প্রস্তাব কিংবা আবেদন করেননি। বরং এই সেতু নির্মাণের কারণে তাদের ফসলি জমি থেকে মাটি কেটে ফসল নষ্ট করা হয়েছে। বছর খানেক আগে সেতু নির্মাণ শেষ হয়েছে। অথচ এখনো পর্যন্ত সেতুর দুই পাশে কোনো রাস্তা নির্মাণের উদ্যোগ নেই।  লেদি খালের ওপর নির্মিত  সেতু

একই এলাকার আবুল হোসেন সরদার বলেন, এলাকার মানুষের চলাচলের জন্য পূর্ব থেকেই কয়েক দিক দিয়ে রাস্তা আছে। কি কারণে খালের উপর সেতু নির্মাণ হয়েছে আমাদের জানা নেই। আমাদের ফসলি জমির ওপর দিয়ে কোনোভাবেই রাস্তা তৈরি করতে দেওয়া হবে না।

ফরিদগঞ্জ উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির এক সভায় নেওয়া সিদ্ধান্তের প্রেক্ষিতে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক বরাবর সেতু নির্মাণের আবেদন পাঠানো হয়। সেই আলোকে অধিদপ্তর ২০১৬ সালের ৪ মার্চ সেতু নির্মাণের জন্য একটি জাতীয় দৈনিকে দরপত্র আহ্বান করে। দরপত্র পক্রিয়া সম্পন্ন হলে একই সালের ১৭ এপ্রিল মেসার্স ইমন ট্রেডার্সকে ৪৪ দিনের মধ্যে সেতু নির্মাণ করার জন্য কার্যাদেশ দেওয়া হয়। ইমন ট্রেডার্সের সত্ত্বাধিকারী মো. জহির আলম নির্দিষ্ট সময়ের কয়েকদিন বেশি সময় নিয়ে সেতুটি নির্মাণ করেন।

উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা আওরঙ্গজেব বাংলানিউজকে বলেন, স্থানীয়দের চলাচলের সুবিধার্থে সেতুটি নির্মাণ করা হয়েছে। এর চেয়ে বেশি কিছু আমি জানি না।

উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ড. মোহাম্মদ শহীদ হোসেন চৌধুরী জানান, তিনি এই উপজেলায় যোগদানের আগেই সেতুটি নির্মিত হয়েছে। রাস্তা ছাড়া কেন সেতু নির্মাণ করা হয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তবে তিনি আসার আগে উপজেলা প্রকল্পের অনেক কাজ কাগজে কলমে থাকলেও বাস্তবে ছিল না। এখন বাস্তবে প্রকল্পগুলোর কাজ শতভাগ করার চেষ্টা চলছে।
ফরিদগঞ্জ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আবু সাহেদ সরকার বাংলানিউজকে বলেন, তিনিও প্রকল্প বাস্তবায়ন কমিটির সদস্য। সেতুটি করার জন্য উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান ওয়াহিদুর রহমান রানা প্রস্তাব করেছিলেন।

চাঁদপুর জেলা ত্রাণ কর্মকর্তা মো. নাছির উদ্দিন জানান, জেলা পর্যায় থেকে শুধুমাত্র টেন্ডার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়। প্রকল্প বাস্তবায়নের বাকি কাজ উপজেলা পর্যায় থেকে করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এসআই 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।