ঢাকা, শনিবার, ২৪ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অবৈধ স্পিডবোটে জীবনের ঝুঁকি

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫২১ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৭
অবৈধ স্পিডবোটে জীবনের ঝুঁকি

মানিকগঞ্জ: আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে স্পিডবোট। কোন প্রকার নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করে অদক্ষ চালকদের হাতে তুলে দেওয়া হচ্ছে অনুমোদনহীন স্পিডবোটের দায়িত্ব। ফলে মাঝেমধ্যেই ঘটছে স্পিডবোট দুর্ঘটনা।

লঞ্চ-ফেরি বা অন্য কোন জলযানে যেখানে দীর্ঘ নৌপথ পাড়ি দিতে অনেক সময় লাগে, সেখানে স্পিডবোট অনেক কম সময়ে পৌছে দেয় গন্তব্যে। তাই দ্রুত গন্তব্যে পৌঁছুতে চাওয়া মানুষের চাপ থাকে দ্রুতগতির এ নৌযানে।

আর এ সুযোগে স্পিডবোটগুলোতে তোলা হয় নির্ধারিত আসনের ২/৩ গুণ যাত্রী। আরিচা-কাজিরহাট নৌপথে প্রতিদিন এভ‍াবে শত শত যাত্রী নদী পাড়ি দিচ্ছেন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে।

বিআইডব্লিউটিএ আরিচা কার্যালয়ের ট্রাফিক বিভাগের সহকারী পরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) ফরিদুল ইসলাম  বাংলানিউজকে বলেন, আরিচা কাজিরহাট নৌপথে স্পিডবোট চলাচল বন্ধ করার জন্য প্রশাসনের কাছে একাধিকবার আবেদন করা হয়েছে। তবে অজ্ঞাত কারণে কোন ফলাফল আসেনি।

মানিকগঞ্জের শিবালয় উপজেলার আরিচা ঘাট থেকে পাবনার কাজির হাটের দূরত্ব ৮ থেকে ১০ কিলোমিটার। এই নৌপথে প্রশাসনের অনুমতি নিয়ে লঞ্চ চলাচল করলেও স্পিডবোট চলছে অনুমোদন ছাড়াই। তারওপর অধিকাংশ বোটেরই নেই প্রয়োজনীয় কাগজপত্র। দক্ষতার ঘাটতি রয়েছে চালকদেরও। স্পিডবোটে ‍দুর্ঘটনা তাই নিত্যসঙ্গী এ রুটে।

গত ২ এপ্রিল রোববার বিআইডব্লিউটিসিতে কর্মরত রতন তার সাত বছরের শিশু ও পরিচিত আরো ৪/৫ জনকে সঙ্গে নিয়ে স্পিড বোটে করে ঘুরতে যান। রাত ৮টার দিকে আরিচা ৪ নং ঘাট এলাকা থেকে প্রায় দেড় কিলোমিটার পথ যাওয়ার পরে বোটের নিচের অংশ (তলা) ফেটে পানি উঠতে থাকে।

বোটচালক মোহাম্মদ আলী মোবাইলে আরিচা ঘাট এলাকার বোট চালকদের বিষয়টি অবহিত করেন। পরে ঘাট এলাকা থেকে আরো দুই বোট ঘটনাস্থলে গিয়ে তাদের উদ্ধার করে। শেষ তক স্পিড বোটটি ডুবেই যায় বলে জানান পাটুরিয়া নদী ফায়ার স্টেশনের ডুবুরি খাদেমুল ইসলাম।

এর আগে ২০১৬ সালের আগস্ট মাসে আরিচা থেকে কাজিরহাট যাওয়ার পথে যমুনা নদীতে ডুবে যায় কে-১৬ নামে আর এক স্পিডবোট। এ ঘটনায় দুজন নিখোঁজ হন।

শিবালয়ের আরিচা স্পিড বোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোবারক হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, আরিচা-কাজিরহাট নৌরুটে ১৯ টি স্পিড বোট চলাচল করছে। প্রতি বোটে ১২ খেকে ১৫ জন যাত্রী যাতায়াত করতে পারে।

প্রতিজন যাত্রীর কাছ থেকে ২০০ টাকা করে ভাড়া আদায় করা হয়। সময় লাগে ২০ থেকে ২৫ মিনিট। বিভিন্ন উৎসবে চাপ বাড় যাত্রীর।

শিবালয় থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মনিরুল ইসলাম জানান, নৌপথের নিরাপত্তার বিষয়টি দেখাশুনা করে নৌ-পুলিশ। ওই নৌপথের প্রায় ১৪টি স্পিড বোটের প্রয়োজনীয় কাগজ আছে। বাকীগুলোর কাগজপত্র পক্রিয়াধীন রয়েছে।

পাটুরিয়া নৌ-পুলিশের সহকারী  উপ-পরিদর্শক (এএসআই) হাসান মিয়া বলেন, নৌ-পুলিশের ইনচার্জ সামছুল আলম ছুটিতে রয়েছেন। তিনি ফিরলে তার স‍াথে কথা বলুন।

শিবালয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) কামাল মোহাম্মদ রাশেদ বলেন, নৌ-মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্ট অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মাঝে মাঝে ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করে থাকে। এর বেশি কিছু জানা নেই আমার।

বাংলাদেশ সময়: ১১০৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ৪, ২০১৭
জেডএম/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।