জরিমানা বা মাইকে প্রচার করলেও বদলাচ্ছে না ঝুঁকি নেওয়ার বদভ্যাস।
সোমবার (৩ এপ্রিল) সরেজমিনে রাজধানীর মহাখালী, শাহবাগ, কারওয়ান বাজার, আসাদগেট, ঘুরে দেখা যায়, ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পার হচ্ছেন পথচারীরা।
রাজধানীর কারওয়ান বাজার মোড়ে দুপুর ২ টার দিকে দেখা যায় প্রতি এক-দুই মিনিট পরপর সিগন্যাল ফেলা হয়, জটলা পেকে থাকা মানুষ ছুটতে থাকে একের পর এক। অবস্থা দেখে মনে হয় যেন গাড়ি নয়, মানুষ পারাপারের জন্যই সিগন্যাল পড়েছে।
এখানে দেখা যায়, প্রতি ১০ মিনিটে দুই পাশ দিয়ে প্রায় শ’খানেক পথচারী পারাপার হন। তাদের সবাই বলছেন, অফিস ছুটির সময় এভাবে ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপারকারীর সংখ্যাটা বেড়ে যায় বহু গুণে।
ইয়াসমিন চাঁদনী নামের এক পথচারী বাংলানিউজকে বলেন, ভাল ব্যবস্থাপনা না থাকায় ফুট ওভার ব্রিজের প্রতি একটা অনীহা সবারই আ। তবে কারওয়ান বাজারের ঠিক এই মোড়টাতেই একটা ফুটওভার ব্রিজ খুব দরকার ছিল। যেহেতু নেই, তাই বেশ কিছুক্ষণ অপেক্ষা করছি রাস্তা পার হতে। সিগন্যালও পড়ছে না, যেতেও পারছি না। এই দিকে সময় চলে যাচ্ছে।
সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চলছে জীবননাশের ঝুঁকি। বলছিলেন বেসরকারি চাকুরীজীবী রমজান মল্লিক। বাংলানিউজকে তিনি বলেন, ইচ্ছা করলেই কষ্ট করে ঘুরে যাওয়া যায়। কে যায় বলুন! এতো সময় কি আর হাতে আছে! সময়ের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে হয়। হোক না জীবনের ঝুঁকি।
এদিকে বছরের শুরু থেকেই ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) ভ্রাম্যমাণ আদালত, ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার না করায়, বিভিন্ন স্থানে প্রায়ই বিভিন্ন অংকে জরিমানা করছেন। সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে মাইকিং করছেন। তবুও থেমে নেই ঝুঁকি নিয়ে রাস্তা পারাপার। ঝুঁকি নিয়ে চলন্ত গাড়ির ফাঁকে ফাঁকে রাস্তা পারাপার হতে নিয়মিতই দেখা যাচ্ছে পথচারীদের।
এবিষয়ে মহাখালী ট্রাফিক জোনের এসি আশরাফ উল্লাহ বাংলানিউজকে বলেন, পদচারীদের ব্রিজ ব্যবহারের আগ্রহ কম। আমি নিয়মিত ফুটওভার ব্রিজের নিচে দাঁড়িয়ে থেকে পথচারীদের নিরাপদে যেতে অনুরোধ করি, প্রয়োজনে তুলে দিই। আসলে আইন জানা এবং মানার একটা বিষয় আছে। ট্রাফিক আইন সম্পর্কে পথচারীদের ধারণা দিতে হবে। আর আমরা সেটা নিয়েও কাজ করছি।
এদিকে যানজট ও দুর্ঘটনা কমাতে ট্রাফিক বিভাগ ২০১৫ সালে বেশ ঘটা করে বাধ্যতামূলক পদচারী-ফুট ওভার ব্রিজ ব্যবহারের নিয়ম চালু করে। বেশ কিছু দিন ব্যবহার করলেও, বর্তমানে পদচারীদের উৎসাহ আগের মত নেই। পথচারীবান্ধব এই সব ফুট ওভার ব্রিজ তাই ফাঁকাই পড়ে আছে।
সড়ক বিভাজক কাঁটাতারের বেড়া ছিঁড়ে-ডিঙিয়ে মৃত্যুঝুঁকি নিয়ে পারাপার হওয়ার কারণ এটাই। সময়ের অভাব। বলছেন পথচারীরা। একারণে ঘটছে দুর্ঘটনা। বাড়ছে মৃত্যু ঝুঁকি।
বাংলাদেশ সময়: ১১২৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
জেএম/