সে আস্থায় এবার চিড় ধরালো স্বয়ং প্রতিষ্ঠানটির নীতিনির্ধারকরা। চলতি বছর নতুন সদস্য নেওয়ার প্রক্রিয়া হিসেবে ভাইভা নিয়ে উঠেছে অস্বস্তিকর সব অভিযোগ।
ফেসবুক এবং ভাইবা ফেস করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, প্রশ্ন করা হয়েছে, ১০ জন পর্নস্টারের নাম বলো? বান্ধবীর সঙ্গে শেষ কবে ফিজিক্যাল হয়েছে? কয়টা মেয়ে ফ্রেন্ড আছে? বড় আপুদের প্রতি ইন্টারেস্ট আছে কি না? লাস্ট কবে .....করেছে?
সদস্য হতে ভাইভা দেওয়া শিক্ষার্থীদের অভিযোগের সত্যতা মিলেছে সংগঠনটির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে।
অভিযোগ আমলে নিয়ে এ ধরনের প্রশ্ন করা সদস্য বাছাই প্রক্রিয়ার অংশ বলে দাবি করেছেন সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন তাহা। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, হ্যাঁ শারীরিক সর্ম্পক একটা ম্যাচিউর ছেলে......আমার মেম্বারকে আমি নেবো.... এই পলিসি ডিসক্লোজ করা তো ঠিক না.....আমাদের ভাইভা কঠিন প্রক্রিয়া। এটা আমাদের বাছাই প্রক্রিয়ার অংশ।
![ঢাবি চলচ্চিত্র সংসদের ভাইভায় পর্নোগ্রাফি নিয়ে প্রশ্ন!](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/edit--inn20170404131832.jpg)
চলচ্চিত্র সংসদ সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ মার্চ থেকে নতুন সদস্য হওয়ার জন্য আবেদনকারীদের ভাইভা চলছিল। যার সর্বশেষ সময় ছিল ২ এপ্রিল পর্যন্ত।
বিব্রতকর পরিস্থিতির শিকার হওয়া ছাত্ররা বলছেন, ২ এপ্রিল ভাইভা দিতে গেলে চলচ্চিত্র বিষয়ক কোনো প্রশ্ন না করেই যৌনতা ও অশ্লীল প্রশ্ন করা হয়। এমন প্রশ্নও করা হয়েছে যা কারও সামনে মুখে আনতেও পারছেন না তারা।
ঘটনার প্রত্যক্ষ সাক্ষী এক শিক্ষার্থী বাংলানিউজকে বলেন, পর্ন তারকা, ফিজিক্যাল রিলেশন, কয়টা মেয়ে ফ্রেন্ড আছে... এগুলো কোনো ভাইভার প্রশ্ন হতে পারে? ঢাবির মতো প্রতিষ্ঠানের একটি সংগঠনের এ ধরনের প্রশ্ন মেনে যায় না। মানুষের নৈতিক মূল্যবোধ দিন দিন হ্রাস পাচ্ছে।
আরেকজন শিক্ষার্থী বলেন, একজন আপু আমাকে জিজ্ঞেস করেন বান্ধবীর সঙ্গে লাস্ট কবে ফিজিক্যাল হয়েছে?
সংগঠনটির সাধারণ সম্পাদক ও নৃবিজ্ঞান বিভাগের মাস্টার্সের ছাত্র দেলোয়ার হোসেন নিজ থেকে প্রশ্ন তুলে বলেন, চলচ্চিত্রের সঙ্গে এ ধরনের প্রশ্নের সম্পর্ক কোথায়? যে ছেলেটা চলচ্চিত্র জানে তাকে তো নিয়ে আমার লাভ নেই। আমরা তো তাকে চলচ্চিত্র জানাবো।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টেলিভিশন, চলচ্চিত্র ও ফটোগ্রাফি বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ জে এম শফিউল আলম ভূইয়া বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের অশ্লীল প্রশ্নের সঙ্গে চলচ্চিত্রের কোনো সম্পর্ক নেই।
প্রশ্নের কিছু অংশ শুনে তিনি বিস্ময় প্রকাশ করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ও সংগঠনটির উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. আ আ ম স আরেফিন বাংলানিউজকে বলেন, এ ধরনের অশ্লীল প্রশ্ন কোনো ভাইবার প্রশ্ন হতে পারে না। বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।
এদিকে যখন সুস্থ চলচ্চিত্রকে উৎসাহ দিতে চলচ্চিত্রে সরাসরি ধর্ষণের দৃশ্য দেখানো যাবে না, অশ্লীল ও কুরুচিপূর্ণ ভাষা পরিহার করাসহ বেশ কিছু নির্দেশনা দিয়ে জাতীয় চলচ্চিত্র নীতিমালা ২০১৭-এর খসড়ার অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা, তখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এ ধরনের ঘটনা অনভিপ্রেত।
বাংলাদেশ সময়: ১৩১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এসকেবি/এএ