সম্মেলনে আইপিইউ-ভুক্ত দেশের আইন প্রণেতাদের বেশিরভাগ অঙ্গীকার করেছেন অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে কোনো হস্তক্ষেপ করবেন না। বিশেষ কারণে যদি হস্তক্ষেপের প্রয়োজনও হয় তাহলে জাতিসংঘের আইন অনুযায়ী করার ওপর মত দেন এসব আইন প্রণেতারা।
মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) বিকেলে বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলনে কেন্দ্রের সেলেব্রেটি হলে ‘স্ট্যান্ডিং কমিটি অন পিস অ্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল সিকিউরিটি’ বিষয়ে খসড়া প্রস্তাবটি গৃহীত হয়।
কমিটিতে প্রস্তাবটি গ্রহণ করার পর এক্সিকিউটিভ কমিটিতে যাবে। ১৭ সদস্যের ওই এক্সিকিউটিভ কমিটির সভাপতি আইপিইউ প্রেসিডেন্ট সাবের হোসেন চৌধুরী। এছাড়া ৬ জন ভাইস প্রেসিডেন্ট এবং ১০ জন সদস্য রয়েছেন এক্সিকিউটিভ কমিটিতে। সেখানেই চূড়ান্ত হবে প্রস্তাবটি। বুধবার (০৫ এপ্রিল) প্রস্তাবটি চূড়ান্ত করা হবে।
অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ বন্ধে আনীত এই খসড়া প্রস্তাবটির ওপর গত দুই দিন বিভিন্ন দেশের সংসদ সদস্যরা তাদের মতামত তুলে ধরেন। এ সময় এক দেশ অন্য দেশের দোষারোপ করতে থাকেন।
প্রস্তাবটি আলোচনা শেষে স্ট্যান্ডিং কমিটিতে গ্রহণের আগে ভোট অনুষ্ঠিত হয়। সেই ভোটে বাংলাদেশ, ভারতসহ ৪৪টি দেশ পক্ষে মত দেয়। অন্যদিকে ১০টি দেশ এই প্রস্তাব সরাসরি বাতিলের পক্ষে মত দেয়। একটি দেশ ভোট দান থেকে বিরত থাকে। বিপক্ষে ভোট দেয়া রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে, -জার্মানি, যুক্তরাজ্য, সুইডেন, ফিনল্যান্ড, কানাডা, তুরস্ক, আইসল্যান্ড, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড ও ইউক্রেন। ভোট না দেয়া দেশটি হচ্ছে বেলজিয়াম।
বিপক্ষে ভোট দেওয়া দেশের ফিনল্যান্ডের প্রতিনিধি বলেন, প্রস্তাবটি আমরা ঠিকমতো বুঝতে পারিনি। যে কারণে আমি মনে করি অনেক দেশের প্রতিনিধিই এই প্রস্তাব বুঝতে না পেরে ভোট দেয়নি।
বাংলাদেশ ডেলিগেশন টিমের প্রধান ডেপুটি স্পিকার অ্যাডভোকেট মো. ফজলে রাব্বী মিয়া বাংলানিউজকে বলেন, এটা সত্য কোনো দেশই অন্য দেশের ওপর হস্তক্ষেপ করতে পারবে না। এটা করাও উচিত না। আইপিইউ যদি সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে, তাহলে আমি মনে করি কিছুটা হলেও ওইসব মোড়ল দেশের ওপর চাপ সৃষ্টি করা যাবে।
সাবেক মন্ত্রী ফারুক খান বাংলানিউজকে বলেন, খসড়াটির মূল উদ্দেশ্যে হচ্ছে কোন দেশ অভ্যন্তরীণ বিষয়ে ইন্টারভেইন করবে না। আর যদি এমন কোনো পরিস্থিতি হয় তাহলে সেই দেশকে জাতিসংঘের মাধ্যমে এটা করতে হবে। খসড়া প্রস্তাবটি গ্রহণ করার পর অভ্যন্তরীণ বিষয়ে হস্তক্ষেপ করার ক্ষমতা থাকবে না।
প্রস্তাবটি গ্রহণ করায় চীনের প্রতিনিধি সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, আমরা খুব খুশি যে প্রস্তাবটি গ্রহণ করা হয়েছে। এটা গণতন্ত্রের জন্য ভালো।
ভোট প্রদানের পর বাংলাদেশ প্রতিনিধি দলের সদস্য মঈনুদ্দিন খান বাদল বলেন, আমরা কোনো দেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে না খোঁচাই না। সম্মেলনে আমরা বলতে চাই সব শেষে গণতন্ত্রকে সমর্থন দিতে হবে।
বাংলাদেশ সময়: ১৯০১ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৪, ২০১৭
এসএম/এমজেএফ