কাজ শুরুর কয়েক মাসের মাথায় নকশায় ধরা পড়ে ত্রুটি। আটকে যায় মহাসড়ক ঝুঁকিমুক্ত করার প্রশস্তকরণের সেই কাজ।
এদিকে এ সময়ের মধ্যে মহাসড়কের এসব স্থানে দুর্ঘটনায় পড়ে অনেক তাজাপ্রাণ ঝরে গেছে। আহত হয়েছেন অনেকে। আহতদের অনেকেই চিরদিনের জন্য পঙ্গু হয়ে গেছেন, চলাফেরার শক্তি হারিয়েছেন, কাজ করার ক্ষমতা হারিয়েছেন। আর বিপুল পরিমাণ অর্থ সম্পদেরও ক্ষতির কথা তো বলাই বাহুল্য।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, মহাসড়কের বগুড়া ও গাইবান্ধা জেলার মোট পনেরটি মোড়কে ঝুঁকিপূর্ণ চিহ্নিত করে ২০১৫ সালের মে মাসে দুই লেন করার প্রকল্পটি হাতে নেওয়া হয়। এতে ব্যয় ধরা হয় প্রায় ১৫ কোটি টাকা।
গেল কোরবানি ঈদের প্রায় মাস দুয়েক আগে এসব মোড়ে কাজও শুরু করে সংশ্লিষ্ট ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। খোঁড়াখুঁড়ি থেকে শুরু করে বালু ও খোয়া দিয়ে ওইসব স্থান পুরণের কাজও গুটিয়ে আনা হয়।
এরই মধ্যে নকশায় ধরা পড়ে ত্রুটি। ফলে ঈদের আগেই কাজ বন্ধ হয়ে যায়। ত্রুটি সংশোধনের জন্য পুনরায় নকশা সংশ্লিষ্ট দপ্তরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। সম্প্রতি সংশোধিত হয়ে সেই নকশা সংশ্লিষ্টদের হাতে এসে পৌঁছেছে। এরপরই মোড়ে মোড়ে নতুন করে কাজ শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে দেখা যায়, ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের মির্জাপুর, নয়মাইল, গোকুলসহ সাতটি ঝুঁকিপূর্ণ মোড়ে শ্রমিকরা কাজ করছেন। বাকি মোড়গুলোতেও কাজ শুরুর প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। ট্রাকে ভরে এসব স্থানে বালু ও ইট নিয়ে আসা হচ্ছে। ফেলে স্তুপ করে রাখা হচ্ছে। নকশা অনুযায়ী মহাসড়কের দু’পাশে সীমানা নির্ধারণ করে গর্ত খোঁড়া হচ্ছে।
সেই গর্তে খাড়া করে ইট ফেলা হচ্ছে। আবার অনেক শ্রমিক কোদাল হাতে গর্ত খোঁড়ায় ব্যস্ত সময় পার করছেন। ময়লা-আবর্জনা সরিয়ে ফেলছেন। পাশাপাশি আকাশে চলছে মেঘের গর্জন। আকাশজুড়ে ভেসে বেড়াচ্ছে মেঘের ভেলা। চলছে মেঘ-বৃষ্টির লুকোচুরি। এরই মধ্যে এগিয়ে চলছে মোড় ঝুঁকিমুক্তকরণের কাজ।
মুনজিল, শাকিল, জহুরুল, তাইজুলসহ একাধিক ব্যক্তি বাংলানিউজকে জানান, মহাসড়কের মোড় ঝুঁকিমুক্তকরণের কাজ আরো কয়েক মাস আগে শেষ করতে পারলে ভাল হতো। কারণ ইতোমধ্যেই বৃষ্টির ঝনঝনানি শুরু হয়েছে। বর্ষা শুরু হলে কাজ করা অনেকটা মুশকিল হবে। সেক্ষেত্রে কাজের মানও ভাল হবে না। এখন দেখা যাক, কত দ্রুত এই কাজ শেষ করতে পারে সংশ্লিষ্টরা।
মঙ্গলবার (০৪ এপ্রিল) দুপুরে বগুড়া সড়ক ও জনপথ বিভাগের (সওজ) নির্বাহী প্রকৌশলী আব্দুল হালিম বাংলানিউজকে জানান, চলতি মাসের মধ্যেই মহাসড়কের ঝুঁকিপূর্ণ মোড় প্রশস্তকরণের কাজ শেষ করতে সংশ্লিষ্টদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
মহাসড়কের পাশ দিয়ে পোঁতা বৈদ্যুতিক খুঁটিগুলো দ্রুত সরিয়ে নিতে সংশ্লিষ্টদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। এজন্য সব ব্যয়ভার সওজ বহন করবে। সব মিলিয়ে বর্ষা আসার আগেই কাজ সম্পন্ন হবে বলেও আশা প্রকাশ করেন সওজের উর্ধ্বতন এই কর্মকর্তা।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৭
এমবিএইচ/জেএম