ঢাকা, শনিবার, ২৫ মাঘ ১৪৩১, ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ০৮ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সাক্ষাৎকার-৩

আরো ২৬০ ফায়ার স্টেশন স্থাপনের কাজ চলছে

বাংলানিউজ টিম | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৬৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ৬, ২০১৭
আরো ২৬০ ফায়ার স্টেশন স্থাপনের কাজ চলছে বাংলানিউজ টিমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি আলী আহাম্মেদ খান; ছবি- বাদল

যে কোনো দুর্যোগ-দুর্ঘটনায় প্রথম সাড়াদানকারী সেবাধর্মী প্রতিষ্ঠান বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতর।গতি, সেবা ও ত্যাগের মূলমন্ত্রে উজ্জীবিত হয়ে এ বিভাগের কর্মীরা দিন-রাত ২৪ ঘণ্টা মানুষের সেবায় নিয়োজিতদুর্যোগ-দুর্ঘটনায় প্রথম সাড়া দেয়াই এই বিভাগের প্রতিটি কর্মীর নৈতিক দায়িত্বফায়ার সার্ভিসের উন্নয়নে সরকার প্রতিনিয়তই নতুন নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছেস্থাপন করা হচ্ছে নতুন ফায়ার স্টেশন

ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান বাংলাদেশ ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের মহাপরিচালক (ডিজি) 

সম্প্রতি বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত সাক্ষাৎকারে ফায়ার সার্ভিসের সাফল্য, ব্যর্থতা, সীমাবদ্ধতা, স্বপ্ন, ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা এবং নিজের পেশাগত অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরেছেন তিনি

সাক্ষাৎকার নিয়েছেন বাংলানিউজের সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট আবাদুজ্জামান শিমুল, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শেখ জাহাঙ্গীর আলম ও প্রশান্ত মিত্রবাংলানিউজের পাঠকদের জন্য সাক্ষাৎকারটির চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো

প্রশ্ন: ফায়ার সার্ভিসের আধুনিকীকরণে সরকারের পরিকল্পনা কী?

উত্তর: দেশের উন্নয়নের সঙ্গে সঙ্গে ফায়ার সার্ভিসকে আরও আধুনিক করতে বর্তমান সরকার নানা ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে। এই পদক্ষেপের অংশ হিসেবে প্রতিটি উপজেলায় একটি করে ফায়ার স্টেশন নির্মাণ করা হবে। কারণ উপজেলাগুলোতে নতুন ঘরবাড়ি হচ্ছে, কল-কারখানা হচ্ছে তাই জনগণের জানমালের নিরাপত্তার বিষয়টি বিবেচনা করেই এই পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।

তিনি বলেন, আগে আমাদের এক থেকে দেড়শ’ ফায়ার স্টেশন ছিলো। কিন্তু এই সরকার আসার পরে প্রায় দ্বিগুণ স্টেশন বাড়ানো হয়েছে। দেশে বর্তমানে মোট ৩২০টি স্টেশন আছে। এছাড়া, আরও ২৬০ স্টেশন স্থাপনের কাজ চলছে।

প্রশ্ন: আগুন নিয়ন্ত্রণে ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বেড়েছে কি?

উত্তর: অবশ্যই ফায়ার সার্ভিসের সক্ষমতা বেড়েছে। এর আগে বহুতল ভবনের ৮ তলা পর্যন্ত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনার ক্যাপাসিটি ছিলো। কিন্তু বর্তমান সরকার আমাদেরকে একটি উচ্চতর ল্যাডার দিয়েছে, যেটা দিয়ে ২০ তলা পর্যন্ত আমরা কাজ করতে পারি। সেদিক থেকে আমাদের বহুতল ভবনের আগুন নিয়ন্ত্রণের ক্যাপাসিটি বৃদ্ধি পেয়েছে।

প্রশ্ন: ফায়ার সার্ভিসে জনবল বৃদ্ধি করা হবে কি না?

উত্তর: নতুন ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের সঙ্গে সঙ্গে পর্যায়ক্রমে জনবলও বৃদ্ধি পাবে।

প্রশ্ন: রাজধানীতে আরও ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের প্রয়োজন আছে কি না?

উত্তর: অবশ্যই রাজধানীতে ফায়ার সার্ভিসের স্টেশন আরও বাড়ানোর প্রয়োজন। কম করে হলেও রাজধানীতে আরও ১৫-২০টি ফায়ার স্টেশন বাড়াতে হবে। এই নগরীতে ট্রাফিক জ্যাম অত্যন্ত বেশি। যেহেতু আমরা জ্যামের সঙ্গে নেগোসিয়েট করতে পারছি না। সেহেতু দ্রুত সাড়া দিতে আমাদের স্টেশনের সংখ্যা বাড়াতে হবে বলে আমি মনে করি। বাংলানিউজ টিমের সঙ্গে সাক্ষাৎকারে ফায়ার সার্ভিসের ডিজি ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহাম্মেদ খান; ছবি- বাদল এছাড়া, নগরীতে ছোট ছোট স্যাটেলাইট ফায়ার পোস্ট করা যেতে পারে। যেন অগ্নিকাণ্ডের কোনো ঘটনায় খবর পেয়ে দ্রুত ওই পোস্ট থেকে ফায়ার কর্মীরা ছুটে গিয়ে আগুন নেভাতে পারে।

অগ্নিকাণ্ডের পর চ্যালেঞ্জগুলো কী?

উত্তর: অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় রাজধানীতে আমার যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হই, সেটা হলো নগরীতে পানির ব্যবস্থা কমে যাচ্ছে। এলাকাগুলোতে হাই-ড্রেন সিস্টেম নেই। আগুন লাগলে আমাদের গাড়ি দিয়ে পানি আনা নেওয়া করতে হয়। এতে সময় বেশি নষ্ট হয়। আর প্রতিটি এলাকায় যদি পানির ব্যবস্থা থাকে তবে সেখান থেকে পানি নেয়া যায়। এতে দ্রুত আগুন নেভানো যায়। কিন্তু নগরীর বেশির ভাগ স্থানে পানি সরবরাহের তেমন ব্যবস্থা নেই।

এদিকে, আরও একটি সমস্য আছে যেটি হলো রাস্তা অনেক সরু, যার কারণে গাড়িগুলো টার্ন নিতে পারে না। ঘটনাস্থল পর্যন্ত আমাদের ফায়ারের গাড়ি যেতে পারছে না। এতে আগুন নেভাতেও সময় লেগে যাচ্ছে।

এদিকে পুরান ঢাকায় অধিকাংশ বাড়িতেই কেমিক্যাল গোডাউন গড়ে উঠেছে। এসবে যদি আগুন লেগে যায়, তবে অনেক ক্ষতি হবে। এই সবগুলো মিলিয়ে রাজধানী ঢাকায় অগ্নিকাণ্ড নির্বাপন করা একটি বড় চ্যালেঞ্জের বিষয়।

প্রশ্ন: প্রতিকারে কি কি করণীয়?

উত্তর: প্রতিটি বাসায় অবশ্যই একটি রিজার্ভার থাকা প্রয়োজন যাতে পানির সহজলভ্যতা বজায় থাকে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীও জনগণের উদ্দেশ্যে বলেছেন, আপনার বাসার পাশে একটি জলাধার রাখুন।

আমি মনে করি, এখনই সঠিক সময়, আমাদের দেশ উন্নয়নের দিকে যাচ্ছে, তাই এই নগরীকে যদি পরিকল্পিত না করা হয়, তবে এটি আরও ঝুঁকিপূর্ণ নগরীতে পরিণত হবে।

প্রশ্ন: জনগণের কাছে প্রত্যাশা কী?

উত্তর: আপনার বাড়ি-ঘর নির্মাণ করুন। কিন্তু এমনভাবেই করতে হবে যেন পর্যাপ্ত রাস্তাঘাট থাকে। যদি রাস্তা না থাকে তবে অগ্নিকাণ্ডে কিভাবে ফায়ার সার্ভিসের গাড়ি পৌঁছাবে আর কিভাবে আপনাদের উদ্ধার করবে। অনেকেই রাস্তা দখল করে বাড়ি-ঘর নির্মাণ করছেন। এই যে আইন না মানার প্রবণতা এটা বাদ দিতে হবে।

বাংলাদেশ সময়: ১২৪৬ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৫, ২০১৭
এজেডএস/এসজেএ/পিএম/আরআই

** বৈদ্যুতিক গোলযোগেই ৭৫ শতাংশ অগ্নিকাণ্ড
** মিসড কল পেলেও রেসপন্স করে ফায়ার সার্ভিস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।