জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান প্রতিষ্ঠিত ইসলামিক ফাউন্ডেশনের ৪২তম প্রতিষ্ঠাবাষির্কী উপলক্ষে আয়োজিত ইমাম সম্মেলনের ভেন্যু এখন কানায় কানায় পূর্ণ।
সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যোগ দেওয়ার আগেই দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে লাখ লাখ ওলামা মাশায়েখ হাজির হন।
বিকেল ৩টায় কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সম্মেলনের আনুষ্ঠানিক কার্যক্রম। এর আগে থেকে ঢাকার বিভিন্ন এলাকা ও দেশের নানা প্রান্ত থেকে আসা ওলামা মাশায়েখরা খণ্ড খণ্ড মিছিল নিয়ে হাজির হন সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে।
মৎস্যভবন থেকে ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনের সড়ক দিয়ে পশ্চিমে এগিয়ে সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে প্রবেশ পথ থাকলেও সেদিক দিয়ে সাধারণ মুসল্লিদের ঢুকতে দিচ্ছেন না আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যরা। এ পাশ দিয়ে ঢুকছেন মন্ত্রিসভার সদস্য, রাষ্ট্রদূত, বিদেশি মেহমান ও সরকারের উচ্চ পদস্থ কর্মকর্তারা।
মৎস্যভবনের এ পাশ দিয়ে আসা মুসল্লিদের সভাস্থলে ঢুকতে হচ্ছে দোয়েল চত্বর ঘুরে তিন নেতার মাজার গেট, মন্দির গেট, বাংলা একাডেমি গেট, টিএসসি গেট ও চারুকলা গেট দিয়ে। তবে ভেতরে ঢোকার বিড়ম্বনা এড়াতে হাজার হাজার মুসল্লি বাংলা একাডেমির সামনের সড়ক, টিএসসি মোড় ও শাহবাগ সড়কের গাছের ছায়ায় অবস্থান নিয়েছেন।
কিন্তু এ নিয়ে কোনো অভিযোগ নেই ঢাকার বাইরে থেকে আসা ওলামা মাশায়েখদের। তারা বলছেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী যে সম্মেলনে প্রধান অতিথি সে সম্মেলনে বাড়তি নিরাপত্তা ব্যবস্থা থাকতেই হবে। এ নিয়ে উষ্মা প্রকাশের সুযোগ নেই।
এদিকে ইসলামী ফাউন্ডেশনের এ ইমাম সমাবেশ ঘিরে প্রধানমন্ত্রীর কাছে ওলামা মাশায়েখদের প্রত্যাশাও কম নয়। তারা একদিকে যেমন দেশের শান্তি, শৃঙ্খা, নিরাপত্তা, উন্নয়ন ও ইসলামের খেদমতের অবারিত দ্বার প্রত্যাশা করেন, অন্যদিকে তেমনি ইমাম, শিক্ষক তথা ওলামা মাশায়েখদের জীবনমান উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রীর সুনজর আশা করেন।
নরসিংদীর মনোহরদী থেকে আসা মকতব শিক্ষক মাওলানা রবিউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, যা কিছু চাওয়ার প্রধানমন্ত্রীর কাছেই চাই। ওনার আমলেই মকতব শিক্ষকদের বেতন ৮শ’ টাকা থেকে বেড়ে ২৩শ’ টাকা হয়েছে। আমরা আশা করি, আজকের সমাবেশ থেকে উনি এমন একটা ঘোষণা দেবেন যাতে অন্যান্য পেশার লোকজনের মকতব শিক্ষকরাও ভালো বেতন পান।
মৌলভীবাজারের বড়লেখা থেকে আশা মসজিদের ইমাম ক্বারী মেছবাহ উদ্দিন বলেন, ইসলামী ফাউন্ডেশন প্রতিষ্ঠা করেছিলেন জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার যোগ্য কন্যা এখন এর অভিভাবক। আমরা চাই ওনার নেক দৃষ্টি ফাউন্ডেশনের লাখ লাখ কর্মীর ওপর পড়ুক। সবাই ভালো মতো জীবন যাপন করুক।
সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে যোগ দেওয়া মক্কা-মদিনার দুই ইমামের কাছেও ওলামা মাশায়েখদের রয়েছে আলাদা আলাদ প্রত্যাশা। তারা চান ইসলামের খেদমতের জন্য সৌদি আরব বাংলাদেশে যেমন ৩৬০টি মসজিদ নির্মাণ করে দিচ্ছে, তেমনি যেন এই মসজিদের খেদমতে নিয়োজিত ওলামা মাশায়েখদের দিকেও তারা সুদৃষ্টি দেবেন।
বগুড়া থেকে সমাবেশে যোগ দিতে আসা মসজিদের ইমাম ফজলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, সৌদি আরব থেকে আসা দুই ইমামের মুখ থেকে আজ ৩৬০টি মসজিদ নির্মাণের ঘোষণা আসবে। এটি বাংলাদেশের জন্য ভালো খবর। আমরা চাই প্রধানমন্ত্রীর যোগ্য নেতৃত্বে ইসলামী বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আরো ভালো হোক। এ ধরনের কর্মকাণ্ড আরো বিস্তার লাভ করুক।
বাংলাদেশ সময়: ১৬২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৭
এজেড/জেডএস