বৃহস্পতিবার (০৬ এপ্রিল) সকালে স্কুলগুলোতে গিয়ে এ চিত্র দেখা গেছে।
স্কুল তিনটি হলো-মিজানপুর ইউনিয়নের চর জৌকুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়, সূর্যনগর দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয় ও দয়াল নগর মোজাহার আলী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
চর জৌকুড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. ময়নুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ৩ এপ্রিল সন্ধ্যার দিকে ঝড়ে আমাদের বিদ্যালয়ের চার কক্ষ বিশিষ্ট দু’টি ঘর ভেঙে পড়েছে। অন্য একটি ঘরের দু’টি কক্ষ কোনো রকম জোড়াতালি অবস্থায় রয়েছে। কিন্তু তারপরও ওই দুইটি কক্ষে অষ্টম ও দশম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। কিন্তু সপ্তম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে খোলা আকাশের নিচে। এছাড়া স্থানীয় জহুরুল ইসলামের পরিত্যক্ত দু’টি টিনের ঘরে ষষ্ঠ ও নবম শ্রেণির ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। বিদ্যালয়ের এ বেহাল অবস্থার ফলে চরম বিপাকে পড়েছেন ৫৫০ শিক্ষার্থী ও ১১ জন শিক্ষক। শিক্ষার্থীদের উপস্থিতিও অনেক কমে গেছে। এভাবে চলতে থাকলে বিদ্যালয়টি অকেজো হয়ে পড়তে পারে।
তিনি আরো বলেন, বিদ্যালয়টি পুণরায় নির্মাণে সহযোগিতা চেয়ে জেলা প্রশাসক, জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার কাছে লিখিত আবেদন করা হয়েছে।
সূর্যনগর দ্বি-মুখি উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আবদুস সালাম বিশ্বাস বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীর সংখ্যা নয় শতাধিক। এমনিতেই শ্রেণিকক্ষের সমস্যা ছিল। তার ওপর ঝড়ে চার কক্ষ বিশিষ্ট টিনসেড ঘরটি ভেঙে যাওয়ায় এখন চরম বিপাকে পড়েছি। নিরূপায় হয়ে খোলা আকাশের নিচেই ক্লাস নিতে হচ্ছে। জরুরি ভিত্তিতে ভবনটি মেরামতের জন্য সংশ্লিষ্ট সরকারি দপ্তরে আবেদন করা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, গ্রামাঞ্চলের হলেও বিদ্যালয়টিতে অনেক মেধাবী ছাত্র-ছাত্রী লেখাপড়া করে। তাদের অধিকাংশই গরিব। অনেক সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও শিক্ষার্থীরা বরাবরই ভালো রেজাল্ট করে থাকে। জরুরি ভিত্তিতে ক্ষতিগ্রস্ত ভবনটি ঠিক করা না হলে শিক্ষাদান ব্যাহত হবে। যার নেতিবাচক প্রভাব পড়বে ছাত্র-ছাত্রীদের ওপর।
অপরদিকে, দয়াল নগর মোজাহার আলী বেসরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক রিমা খাতুন বাংলানিউজকে বলেন, ৩ এপ্রিলের ঝড়ে আমাদের স্কুলের একমাত্র টিনের ঘরটি ভেঙে পড়েছে। তাই তিনদিন ধরে বাধ্য হয়ে খোলা আকাশের নিচেই ক্লাস নেওয়া হচ্ছে। স্কুলটিতে ১৫৭ জন শিক্ষার্থী থাকলেও খোলা আকাশের নিচে ক্লাস নেওয়ার কারণে অনেকেই স্কুলে আসছে না। আবার যারা আসছে প্রচণ্ড গরমের মধ্যে তাদেরও ক্লাস করতে সমস্যা হচ্ছে। স্কুলটির নিজস্ব কোনো অর্থ না থাকায় কবে নাগাদ স্কুলটি মেরামত করতে পারবো তা নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় পড়েছি। এ ব্যাপারে সরকারের সহযোগিতা কামনা করছি।
রাজবাড়ী সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সৈয়দা নূরমহল আশরাফী বাংলানিউজকে বলেন, বিদ্যালয় তিনটি পুণরায় নির্মাণে আর্থিক সহযোগিতা চেয়ে আবেদন করা হয়েছে। এরই মধ্যে বিদ্যালয় তিনটির সার্বিক অবস্থা পরিদর্শনের জন্য লোক পাঠানো হয়েছে। এ বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৭
এসআই