বৃহস্পতিবার (৬ এপ্রিল) রাজধানীর মহাখালীর ব্র্যাক ইনোভেশন সেন্টারে সংস্থাটির এক অনুষ্ঠানে ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনের চালচিত্র’ শীর্ষক এ গবেষণা প্রতিবেদনে এ চিত্র ওঠে আসে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ও এসডিজি বাস্তবায়নে নাগরিক প্ল্যাটফর্ম, বাংলাদেশ যৌথভাবে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশন ১৮টি জেলায় ৭টি জনগোষ্ঠীর ২ হাজার পরিবারের ওপর গবেষণা চালায়। যাদের মধ্যে সমতল ও পাহাড়ি ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী, দলিত, জেলে, ধর্মীয় সংখ্যালঘু, যৌনকর্মী ও প্রতিবন্ধী রয়েছেন।
প্রতিবেদনে বলা হয়, এসব এলাকার ৩৩ শতাংশ মানুষ শারীরিক সহিংসতার শিকার। দলিত জনগোষ্ঠীর ৪১ দশমিক ৬০ শতাংশ, সমতল ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর ৩৯ দশমিক ৮০ শতাংশ, প্রতিবন্ধীদের ৩৩ দশমিক ৬৭ শতাংশ, জেলেদের মধ্যে ২৩ দশমিক ৭০ শতাংশ এবং ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ২১ দশমিক ৭০ শতাংশ নির্যাতনের শিকার।
গবেষণা প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের গবেষণা দলের প্রধান গবেষক সেলিম আহমেদ পারভেজ।
লিখিত গবেষণাপত্রে তিনি বলেন, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর গড় শিক্ষার হার মাত্র ২৮ দশমিক ৪০ শতাংশ। পড়াশোনা ছেড়ে দেওয়ার বড় কারণ অর্থনৈতিক টানাপোড়েন। এছাড়া সামাজিক বাধা-বৈষম্য, দূরত্ব, সামাজিক সমস্যা, মাতৃভাষায় শিক্ষার অভাব, উৎসাহহীনতা ও জ্ঞানের অভাবে প্রান্তিক শিশুরা শিক্ষা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে।
মানুষের জন্য ফাউন্ডেশনের নির্বাহী পরিচালক শাহীন আনাম জানান, দেশে মোট ৩ কোটি প্রান্তিক জনগোষ্ঠী রয়েছে। যার মধ্যে অধিকাংশই নানা ধরনের বিপত্তি, শোষণ ও বঞ্চনার শিকার। এসব জনগোষ্ঠীকে বাদ দিয়ে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব নয়।
প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জীবনমান উন্নয়নে রাষ্ট্রের রাজনৈতিক প্রতিশ্রুতি, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর বৈষম্য দূরীকরণ, সেবাখাতগুলোকে প্রান্তিক জনগোষ্ঠীবান্ধব হওয়ার কথা এ গবেষণায় উঠে এসেছে।
সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ’র (সিপিডি) ফেলো ড. দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন- অর্থ প্রতিমন্ত্রী এম এ মান্নান, ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা ও চেয়ারম্যান ফজলে হাসান আবেদ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আমেনা মহসীন, বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ডেভেলপমেন্ট স্টাডিজের (বিআইডিএস) গবেষণা পরিচালক ড. কাজী আলী তৌফিক প্রমুখ।
বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৬, ২০১৭
এএম/আরআর/টিআই