১৯৯৬ সালের গঙ্গা পানি বণ্টন চুক্তির লাভ ক্ষতি ও পানির সঠিক ব্যবহার নিশ্চিত করতেও এই কমিটি কাজ করবে।
বুধবার (১২ এপ্রিল) সচিবালয়ে চীনের পানি সম্পদ মন্ত্রী চেন লিই এর নেতৃত্বে ছয় সদস্যের প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে একথা জানান মন্ত্রী আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।
চীনা প্রতিনিধি দল বাংলাদেশের নদী ড্রেজিং ও খননের ইচ্ছা পোষণ করেছেন বলে জানান মন্ত্রী।
গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্প নিয়ে তিনি বলেন, গঙ্গা ব্যারেজ নিয়ে কিন্তু কোনো দ্বিমত নেই। গতকাল প্রধানমন্ত্রীও কিন্তু স্পষ্ট করে বলেছেন। কোথায় হবে, কীভাবে হবে, প্রশ্ন হচ্ছে নকশার। গঙ্গা প্রকল্প নিয়ে প্রশ্ন নেই, ব্যারেজ প্রজেক্ট হবে।
মন্ত্রী জানান, আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি অন্য অপশন কী কী আছে তা খুঁজতে হাইপাওয়ার টেকনিক্যাল কমিটি করা হবে। এটা পুনঃপরীক্ষা করবো, অন্য কী কী উপায় আছে যাতে ভারত থেকে যে পানি পাচ্ছি সেটার সর্বোত্তম ব্যবহার করতে পারি।
রাজবাড়ীর পাংশায় গঙ্গা ব্যারেজের যে নকশা তৈরি করা হয়েছিলো তা নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। আগের দিন সংবাদ সম্মেলনে একথা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী।
পানি সম্পদমন্ত্রী বলেন, ভারতের কাছ থেকে পাওয়া পানির কীভাবে সুষ্ঠু ব্যবহার হতে পারে, বিশেষ করে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে, সেটা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার জন্য আমরা কমিটি করব।
এক প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত যে প্রজেক্টের বিকল্প দেখা হচ্ছে।
গঙ্গা ব্যারেজের নকশায় ভুল ছিল কিনা- প্রশ্নে পানি সম্পদমন্ত্রী বলেন, না। ফারাক্কা বাঁধ নিয়ে এখানে কথা হচ্ছে, সেই জিনিসগুলো যাতে আমাদের ক্ষেত্রে না হয়, পরে যেন কোনো রকম সমস্যায় না পড়ি সেজন্য আমরা অন্যান্য অল্টারনেটিভস চাচ্ছি।
গঙ্গা ব্যারেজ প্রকল্পের পরিকল্পনায় পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় থেকেই হয়েছিল জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, সেখানে বাইরের কনসালটেন্টরাও ছিলেন।
নদী খননে সহায়তা করবে চীন
বাংলাদেশের নদীগুলো খননে চীন সরকার সহযোগিতা করতে সম্মত হয়েছে বলে জানিয়েছেন পানি সম্পদমন্ত্রী। মন্ত্রী বলেন, পানি সম্পদ উন্নয়ন, নদী শাসন, বন্যা নিয়ন্ত্রণ এবং দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে চীনের অনেক অভিজ্ঞতা আছে, যা আমরা কাজে লাগাতে পারি। এগুলো নিয়ে আলোচনা হয়েছে।
তিনি বলেন, তাদের সহযোগিতায় আমাদের নদীগুলো খননের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেছি। এতে তারাও সম্মত আছেন বলে জানিয়েছেন।
সুনির্দিষ্ট কোনো প্রকল্প নিয়ে আলোচনা হয়েছে কিনা- প্রশ্নে মন্ত্রী বলেন, একটি সমন্বিত প্রকল্পের মাধ্যমে ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা ও মেঘনার ৪০০ কিলোমিটার নদী ব্যবস্থাপনার বিষয়ে চীনের সঙ্গে আমাদের একটি সমঝোতা স্মারক রয়েছে। এটার বিষয়ে একটি স্ট্যাডি রিপোর্ট পাওয়ার পর আমরা এটিকে এগিয়ে নিতে চাই। আমরা চাচ্ছি চীন যাতে এতে যুক্ত হয়।
তিনি বলেন, হাইড্রোলজিক্যাল তথ্য-উপাত্ত আদান-প্রদানের বিষয়ে আলোচনা করেছি। এখন আমরা তিন থেকে চারদিন আগে বন্যার পূর্বাভাস দিতে পারি। চীনকে অনুরোধ করেছি এটা আরও কীভাবে বেশি সময় আগে করা যায় সে বিষয়ে সহায়তা দিন।
পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলাম, প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক প্রধান সমন্বয়ক আবুল কালাম আজাদ, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব জাফর আহমেদ খান বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৫১৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭/আপডেট ১৮০১
এমআইএইচ/বিএস