ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অব্যবস্থাপনায় হাওর অঞ্চলে ৬ হাজার কোটি টাকার ফসল নষ্ট

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
অব্যবস্থাপনায় হাওর অঞ্চলে ৬ হাজার কোটি টাকার ফসল নষ্ট

ঢাকা: সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জের হাওর এলাকায় সরকার ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের অব্যবস্থাপনার কারণে ৬ হাজার কোটি টাকার ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে বলে অভিযোগ বিশিষ্টজনদের।

তারা বলেছেন, দেশে প্রতি বছর এতো বড় বড় বাজেট হচ্ছে, সেই বাজেটে হাওর অঞ্চলের মানুষের জন্য কত শতাংশ বরাদ্দ দেওয়া হচ্ছে। আজ হাওর সংশ্লিষ্ট সরকারি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অব্যবস্থাপনা ও দুর্নীতির কারণে প্রায় ২ কোটি মানুষের জীবন অনিশ্চিতায় পড়ে গেছে।

বিগত কয়েক দিনের বন্যায় এ দুই জেলার হাওর এলাকায় চাষ হওয়া ৯০ শতাংশ ফসল পানিতে তলিয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। এর ক্ষতিপূরণ এখন কে দেবে?

বুধবার (১২ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে ‘আগাম বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত হাওরের ফসল ও জনজীবন: সরকার ও জনগণের করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল আলোচনায় তারা এ মন্তব্য করেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে অ্যাসোসিয়েশন ফর ল্যান্ড রির্ফম অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (এএলআরডি) ও বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতি (বেলা)।

আলোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে মানবধিকার নেত্রী সুলতানা কামাল বলেন, হাওর অঞ্চলের মানুষ সারা বছরই বিভিন্ন প্রাকৃতিক সমস্যায় ভোগেন। তাদের এ সমস্যা এবং বিভিন্ন দাবি দাওয়া আমাদের সবাইকে ঐক্যবদ্ধ হয়ে জাতীয় পর্যায়ে তুলতে হবে। আর যারা বাঁধ নির্মাণ ও বিভিন্ন দুর্যোগ প্রস্তুতির কাজে দুর্নীতি করছে তাদের বিরুদ্ধে আমাদের রুখে দাঁড়াতে হবে। যদি এসব দুর্নীতিবাজদের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানো খুব সহজ নয় তার পরেও আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে।

হাওর অঞ্চলে বাঁধ নির্মাণে ও বিভিন্ন দুর্যোগ প্রস্তুতির কাজে অপরিকল্পিত এবং সমন্বয়হীনভাবে নেওয়া হয়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, বাঁধ নির্মাণের কোনো সমন্বয় না থাকায় আজ এ অবস্থা হয়েছে। যখন বাঁধ নির্মাণের কাজ শুরু করা দরকার ছিল তখন করা হয়নি। আর যখন পানিতে হাওরের ফসল তলিয়ে গেছে তখন একটি গোষ্ঠী বাঁধ নির্মাণের নামে সরকারি টাকা লুটেপুটে খেয়েছে।  

তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায় হাওর অঞ্চলের কৃষকদের সামান্য কয়েক টাকার ঋণের দায়ে মামলা করে ব্যাংকগুলো। কিন্তু হাজার হাজার কোটি টাকার ঋণ খেলাপিদের কেউ কিছু বলে না। এসব বাদ দিয়ে কৃষি ব্যাংকে সম্পূর্ণ কৃষকবান্ধব হতে হবে। বিনাসুদে দীর্ঘ মেয়াদি ঋণ দিতে হবে।

সুনামগঞ্জ ও কিশোরগঞ্জ হাওর এলাকা থেকে আসা কয়েকজন কৃষক আলোচনা সভায় বলেন, আমরা আজ শেষ হয়ে গেছি। আমাদের জীবনযাপনের এখন আর কিছু বাকি নেই। স্থানীয় এমপি ও ঠিকাদারদের জন্য আমাদের আজ এ অবস্থা। তারা সময় মতো বাঁধ নির্মাণ করে টাকা পয়সা লুটেপুটে খেয়েছে। আর বাঁধ না থাকায় আমাদের জমির ফলস পানিতে তলিয়েছে।  

সভায় আরও বক্তব্য রাখেন বেলার প্রাধন নির্বাহী অ্যাড. সৈয়দা রিজওয়ান হাসান, এএলআরডি উপ-নির্বাহী পরিচালক রওশন মনি, পরিবেশ ও হাওর উন্নয়ন সংস্থার সভাপতি কাসেম রেজা ও এএলআরডির নির্বাহী পরিচারক শামসুল হুদা প্রমুখ।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
এমএ/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।