ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

শেষ দেখা করে গেলেন জঙ্গি রিপনের স্বজনেরা

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪৫০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
শেষ দেখা করে গেলেন জঙ্গি রিপনের স্বজনেরা শেষ দেখা করে চলে গেছেন জঙ্গি রিপনের ২৫ জন স্বজন

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের সামনে থেকে: সাবেক ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলার দায়ে ফাঁসি কার্যকর হতে যাওয়া জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপনের সঙ্গে তৃতীয় দফায় শেষ দেখা করে বের হয়েছেন তার স্বজনেরা।

সিলেট কেন্দ্রীয় কারাগারের কনডেম সেলে রাখা রিপনকে বুধবার (১২ এপ্রিল) রাত ১২টা ০১ মিনিটে এ কারাগারের ফাঁসির মঞ্চে ঝুলিয়ে কার্যকর করা হবে মৃত্যুদণ্ডাদেশ।
 
রিপনের ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতির চলার সময়েই সন্ধ্যায় তৃতীয়বারের মতো শেষ সাক্ষাতে আসেন তার ২৫ জন স্বজন।

 

দু’টি লাইটেস ও একটি সিএনজি অটোরিকশাযোগে দেখা করতে আসেন তারা। রিপনের বাবা-মাসহ তাদের কয়েকজন প্রথমে কারাগারের ভেতরে ঢোকেন। বাকিরা পর্যায়ক্রমে ভেতরে গিয়ে দেখা করেন বলে জানিয়েছেন জেল সুপার ছগির মিয়া।

তবে প্রায় এক ঘণ্টা ২৫ মিনিট ধরে রিপনের সঙ্গে কথা বলে রাত আটটা ২৬ মিনিটে কারাফটক দিয়ে বের হয়ে যাওয়ার সময় কোনো কথা বলেননি তার স্বজনেরা।

এর আগে বিকেলে জেল সুপার বাংলানিউজকে জানান, ১২ এপ্রিল রাত ১২টা ০১ মিনিটে বা ১৩ এপ্রিলের প্রথম প্রহরে ফাঁসি কার্যকর করা হবে। এর সকল প্রস্তুতি শেষ হয়েছে। জোরদার করা হয়েছে কারাগার ও এর আশপাশের এলাকার নিরাপত্তা।

তিনি জানান, ফাঁসি কার্যকর করবেন জল্লাদ ফারুক। তার সহযোগী থাকবেন আরও চার জল্লাদ এবং নতুন হিসেবে আরও ৬ জনকে সহযোগিতার জন্য দেওয়া হচ্ছে। জল্লাদ ফারুক ৮৫ বছরের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি।

এদিকে ফাঁসির আগে জঙ্গি রিপনকে তওবা পড়াবেন শাহ আবু তুরাব জামে মসজিদের ইমাম হযরত মাওলানা মুফতি মো. বেলাল উদ্দিন। বাদ এশা তাকে কারাগারে নিয়ে যাওয়া হবে বলে নিজেই জানিয়েছেন মুফতি বেলাল।

এর আগে রাষ্ট্রপতির প্রাণভিক্ষার আবেদন নামঞ্জুরের পর মঙ্গলবার (১১ এপ্রিল) ও রোববার (০৯ এপ্রিল) দু’দফায় রিপনের সঙ্গে শেষ সাক্ষাৎ করে যান তার বাবা আ. ইউসুফ, মা আজিজুন্নেছা, ভাই নাজমুল ইসলাম ও স্ত্রী এবং চাচা আব্দুন নুর, চাচি আজিজুন্নেছা, চাচাতো বোন রুমেনা, ফুফাতো বোন লুৎফা বেগম ও ফুফাতো ভাই জাবির হোসেন।

জঙ্গি দেলোয়ার হোসেন রিপন মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কোনাগাঁও গ্রামের আ. ইউসুফের ছেলে।

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত অন্য দু’জন নিষিদ্ধ ঘোষিত হরকাতুল জিহাদের (হুজি) শীর্ষনেতা ‘মুফতি’ আব্দুল হান্নান ও জঙ্গি শরীফ শাহেদুল আলম বিপুলেরও ফাঁসি কার্যকরের চূড়ান্ত প্রস্তুতি চলছে গাজীপুরের কাশিমপুর হাইসিকিউরিটি কেন্দ্রীয় কারাগারে।  

২০০৪ সালের ২১ মে সিলেটের হযরত শাহজালালের (র.) মাজারে তৎকালীন ব্রিটিশ হাইকমিশনার আনোয়ার চৌধুরীর ওপর গ্রেনেড হামলা হয়। হামলায় আনোয়ার চৌধুরী, সিলেটের জেলা প্রশাসকসহ অর্ধশতাধিক ব্যক্তি আহত এবং নিহত হন দুই পুলিশ কর্মকর্তাসহ তিনজন।

মামলার বিচার শেষে ২০০৮ সালের ২৩ ডিসেম্বর বিচারিক আদালত সিলেটের দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল ৫ আসামির মধ্যে ‘মুফতি’ হান্নান, বিপুল ও রিপনকে মৃত্যুদণ্ড এবং মহিবুল্লাহ ও আবু জান্দালকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেন।

হাইকোর্ট ও আপিল বিভাগ এ রায় বহাল রাখার পর গত ২৭ মার্চ পৃথকভাবে ‘মুফতি’ হান্নান, বিপুল ও রিপন স্ব স্ব কারা কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা চেয়েছিলেন। গত ০৮ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি প্রাণভিক্ষার আবেদন নাকচ করে দেওয়ার পর তিন জঙ্গির ফাঁসি কার্যকর করতে যাচ্ছে স্ব স্ব কারা কর্তৃপক্ষ।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
এনইউ/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।