ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৮ মাঘ ১৪৩১, ১১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ১১ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

অর্থপাচাররোধে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে চুক্তির সুপারিশ

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
অর্থপাচাররোধে বিভিন্ন সংস্থার সঙ্গে চুক্তির সুপারিশ

ঢাকা: অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে সমঝোতা স্মারক করতে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রতি সুপারিশ করেছে এপিজি।

এশিয়া প্যাসিফিক গ্রুপের মানি লন্ডারিং (এপিজি) হচ্ছে ‘অর্থ পাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন’ বিষয়ে মানদণ্ড নির্ধারণকারী এশিয়া অঞ্চলের সংস্থা। এটি ১৯৯৭ সালে ব্যাংককে প্রতিষ্ঠিত।

সংগঠনটির জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক রয়েছে।
 
অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক সংগঠন এপিজি’র সঙ্গে সমন্বয়, তদারকি, এ সংক্রান্ত তথ্য আদান-প্রদানসহ সুনির্দিষ্ট বিষয়ে কাজ করে থাকে বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্স ইউনিট (বিএফআইইউ)।
 
অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধে বিভিন্ন দিক-নির্দেশনা এবং নীতি প্রণয়ন ও বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গঠিত ওয়ার্কিং কমিটির সম্প্রতি করা এক বৈঠক সূত্রে এপিজির এ সুপারিশের কথা জানা গেছে।
 
বৈঠক সূত্র জানায়, দেশে অর্থপাচার, জঙ্গি ও সন্ত্রাসী কাজে অর্থায়ন এবং চোরাচালানসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে ব্যাংকের মাধ্যমে নগদ টাকার লেনদেন বাড়ছে। ব্যাংকগুলোতে ২০১৫-১৬ অর্থবছরে সন্দেহজনক নগদ লেনদেন (এসটিআর) হয়েছে ১ হাজার ৩শ’ ৭টি। আগের অর্থবছরে পরিমাণ ছিল ১ হাজার ৯৪টি। এক বছরের ব্যবধানে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ১৯ দশমিক ৪৬ শতাংশ।  
 
এগুলো খতিয়ে দেখে সন্ত্রাসী ও জঙ্গি কার্যক্রমের প্রমাণও মিলেছে। তাই লেনদেনকারীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক সরকারের আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে জানিয়েছে। তবে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলো মানি লন্ডারিং প্রতিরোধ (সংশোধন) আইন অনুযায়ী মামলার চার্জশিট দেওয়া বিলম্ব হওয়ায় মামলা নিষ্পত্তিতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হচ্ছে।
 
বৈঠকে বলা হয়, ‘এপিজির সুপারিশ ও ওয়ার্কিং কমিটির সিদ্ধান্ত অনুয়ায়ী বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ও নিয়ন্ত্রণকারী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিএফআইইউ’র পারস্পরিক তথ্য বিনিময় ও সক্ষমতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষর করতে হবে’।

এ বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের উপসচিব রিজওয়ানুল হুদা বলেন, সবক্ষেত্রে যোগ্য ও সম্যক জ্ঞানসম্পন্ন তদন্ত কর্মকর্তা নিয়োগ না করা হলে ফলাফল ভালো হবে না। এজন্য আইন প্রয়োগকারী সংস্থার কর্মকর্তাদেরে দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
 
বাংলাদেশ ব্যাংকসহ দেশের সব বাণিজ্যিক ব্যাংক কড়া নজরদারি করলেও থেমে নেই অর্থপাচার ও সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন। তাদের ভয়াবহ সব কর্মকাণ্ডের জন্য অস্ত্রসহ অন্যান্য সামগ্রী যোগাতে বিপুল অর্থ আসে ব্যাংকিং চ্যানেল ও হুন্ডির মাধ্যমে। তবে সম্প্রতি হুন্ডির তৎপরতা কমলেও জঙ্গি ও লেনদেন হচ্ছে ব্যাংকিং চ্যানেলে।
 
২০১৬ সালে গুলশানে হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা, কিশোরগঞ্জে ঈদের জামাতেও হামলা চালায় জঙ্গিরা। এসবের জন্য জঙ্গিদের বিপুল অর্থ ব্যয় হয়েছে। এসব অর্থের উৎস ও যোগানদাতাদের চিহ্নিত করতে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী ও নিয়ন্ত্রণ সংস্থার সঙ্গে চুক্তি করা প্রয়োজন বলে মনে করে এপিজি।
 
২০০৪ সালের ২১ আগস্ট তৎকালীন বিরোধীদলীয় নেত্রী শেখ হাসিনার সমাবেশে গ্রেনেড হামলা এবং ২০০৫ সালের ১৭ আগস্ট ৬৩ জেলায় একযোগে আদালত চত্বরে সিরিজ বোমা বিস্ফোরণের মধ্য দিয়ে জঙ্গিদের কার্যক্রমের প্রকাশ পায়। পরবর্তীতে একটু কমে এলেও ২০১৫ সালে বিচ্ছিন্নভাবে দেশের বিভিন্ন জায়গায় টার্গেট কিলিংয়ের মাধ্যমে হত্যা করা হয় বেশ কয়েকজনকে।
 
বাংলাদেশ ফিন্যান্সিয়াল ইন্টিলিজেন্টস ইউনিটের মহাব্যবস্থাপক দেব প্রসাদ দেবনাথ বলেন, অর্থপাচার, সন্ত্রাসে অর্থায়ন ও জঙ্গিবাদ বিষয়ক অপরাধ তদন্তে বিভিন্ন আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সঙ্গে চুক্তি ছাড়াও উক্ত অপরাধের সঙ্গে অর্থের সংশ্লিষ্টতা খতিয়ে দেখার জন্য প্রজ্ঞাপন জারি করা প্রয়োজন।
 
বাংলাদেশ সময়: ২১৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ১২, ২০১৭
এসই/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।