কারণ নিচে নেমে গেছে ভূগর্ভস্ত পানিস্তর। নলকূপের হাতল চাপতে চাপতে অবশ হয়ে আসতে চায় হাত।
তাই পানির জন্য কাকডাকা সকালে ছুটতে হয় গাঁও-গেরামের মানুষদের। দুপুর ও বিকেলেও একই কাজ করতে হয় তাদের। সংসারের প্রয়োজনে পানির জন্য ছুটতে হয় অনেক আঁকা-বাঁকা পথ। পাড়ি দিতে হয় জমির আইল। এভাবে কষ্টকর উপায়ে পানি সংগ্রহ করে চরম দুর্ভোগে জীবন চালাচ্ছেন গ্রামের মানুষ।
![পানি নিয়ে দুর্ভোগ- ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Bogra-Water-320170413062816.jpg)
এছাড়া আদমদীঘি, শিবগঞ্জ, গাবতলী ও সদর উপজেলা। বাকি ধুনট, সারিয়াকান্দি ও সোনাতলা উপজেলায় এ সময়টায় খাবার পানির খুব একটা সঙ্কট দেখা দেয় না। জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপতরের কার্যালয় সূত্র এসব তথ্য জানায়।
টিনের ঘেরা ও ছাউনি বিশিষ্ট একটি ঘর। ঘরে ভেতর বসানো হয়েছে বিদ্যুৎচালিত গভীর নলকূপ। চলতি মৌসুমে বোরোর জমিতে সেচ দিতে দিনরাতের নির্দিষ্ট সময় এই নলকূপ চালানো হয়। দল বেঁধে পালা করে মানুষ সেখান থেকে পানি সংগ্রহ করেন। ডুব-গোসল দেন। কাপড়-চোপড় পরিষ্কার করেন। থালা বাসন ধোয়ার কাজ সারেন।
বোরোর জমিতে সেচ দিতে এরকম অংসখ্য নলকূপ বসানো হয়েছে জেলার বিভিন্ন এলাকায়। এসব নলকূপ থেকে গাঁও গেরামের মানুষ সাংসারিক প্রয়োজনে পানি সংগ্রহ করে থাকেন নিয়মিত।
![পানি নিয়ে দুর্ভোগ- ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Bogra-Water-420170413062846.jpg)
পানি সঙ্কটের কারণে গরু, মহিষ, মানুষকে একই ডোবা বা পুকুরে বাধ্য হয়ে গোসলের কাজ সারত হচ্ছে। এতে করে নানা রোগ ব্যাধিতে আক্রান্ত হচ্ছে প্রত্যন্ত অঞ্চলের মানুষ।
এসব ভুক্তভোগীরা আরো জানান, পানি সমস্যার কারণে প্রত্যেক বছরের এসময়ে স্বজনদের বাসাবাড়িতে নিয়ে আসা যায় না। নিমন্ত্রণ করা যায় না জামাই-বেটিদের। কেননা পানীয় জলের প্রকট সমস্যায় ঠিকমত তাদের আপ্যায়নও করা যায় না যোগ করেন তারা।
জেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুজ্জামান বাংলানিউজকে জানান, পানির সমস্যা দূর করতে জেলায় ২ লাখের মত ভার্টিকেল নলকূপ স্থাপন করা হয়েছে। অন্যসব নলকূপ পরিবর্তন করে সেগুলোকেও ভার্টিকেল নলকূপে রূপান্তর করা হয়েছে।
![পানি নিয়ে দুর্ভোগ- ছবি: আরিফ জাহান-বাংলানিউজ](http://www.banglanews24.com/media/imgAll/2016October/bg/Bogra-Water-520170413063025.jpg)
অপর এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, সমস্যাটি সমাধানকল্পে আপতত কোন উপায় দেখছি না। পর্যাপ্ত বৃষ্টিপাতই শুধু এ সমস্যার সমাধান দিতে পারে। এক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা নিয়ে এগুতে হবে। বাঁধ দিয়ে জলাধার গড়ে তুলতে হবে।
এভাবে বছরের এই সময়টিতে অনেকটা পানিসঙ্কট দূর করা সম্ভব বলেও মন্তব্য করেন প্রকৌশলী মো. আনোয়ারুজ্জামান।
বাংলাদেশ সময়: ০৬২২ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
এমবিএইচ/জেএম