বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) চারুকলা অনুষদে সরেজমিনে দেখা যায়, মঙ্গলশোভাযাত্রার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত শিক্ষার্থী এবং শিক্ষকেরা। চলছে বাঁশ, বেত আর কাঠের তৈরি বিভিন্ন কাঠামোর সাজসজ্জা ও রঙ করার কাজ।
মঙ্গলশোভাযাত্রার আয়োজকদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, এরই মধ্যেই তাদের ৯০ শতাংশ কাজ শেষ হয়ে গেছে। বাকি ১০ শতাংশ কাজ রাতের মধ্যেই শেষ হয়ে যাবে। এখন বাকি শুধু কিছু কাঠামোর ও পেপার মার্ক্সের রঙ করা, আলপনা করা। এসব কাজ শেষ হলেই ভোরে চারুকলা অনুষদের সামনের রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে মঙ্গলশোভাযাত্রার কাঠামো রাখা হবে। পরে সকাল ৯ টায় মঙ্গলশোভাযাত্রা শুরু হবে।
চারুকলার মঙ্গল শোভাযাত্রার প্রস্তুতির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সবুজ দাস বাংলানিউজকে বলেন, আমাদের কাজ প্রায় শেষ পর্যায়ে। আশা করি, রাতের মধ্যে মঙ্গলশোভাযাত্রার সব কাজ শেষ হয়ে যাবে। আমরা গত দুই দিন ধরে টানা কাজ করছি। এখন আমাদের সঙ্গে শেষ মুহূর্তের কাজ যোগ দিয়েছেন, হাত মিলিয়েছেন আমাদের অনুষদের শিক্ষকরাও।
তিনি বলেন, কাজ শেষ হলেও একটি দুঃখ থেকেই যাবে। মঙ্গলশোভাযাত্রার অংশগ্রহণ না করতে পারার। কারণ দুই রাত দুই দিন টানা কাজ করে শোভাযাত্রার দিন শরীর ক্লান্ত হয়ে যায়। তাই আমরা যারা এই কাজের সঙ্গে জড়িত কেউই অংশ নিতে পারব না। প্রতি বছর এমন হয়ে থাকে।
১৯৮৯ সাল থেকে শুরু হওয়া মঙ্গল শোভাযাত্রা এখন ইউনস্কোঘোষিত বিশ্বঐতিহ্য। এই বিষয়টি মাথায় রেখে আয়োজকরা চেষ্টা করেন বড় পরিসরে মঙ্গলশোভাযাত্রা উদযাপন করতে। এছাড়া সাংস্কৃতিক আন্দোলনের মধ্য দিয়ে অসাম্প্রদায়িক ও ঐক্যবদ্ধ চেতনায় সারা বিশ্বে পরিচিত হবে বাংলাদেশ-- এটাও প্রত্যাশা আয়োজকদের। উল্লেখ্য, এবারের মঙ্গলশোভাযাত্রায় শিক্ষার্থীরা হাতি, ঘোড়া, ময়ূর, পাখি ও বাঘসহ ১১টি বড় কাঠামোর কাজ করছেন। এছাড়া অসংখ্য মুখোশ বানানোর কাজও করছেন তারা। এসব শিল্পকর্মের মাধ্যমে তারা সুন্দরবনে বাঘের বিলুপ্ত হবার হুমকি এবং সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসার প্রতীকী রূপ তুলে ধরার চেষ্টা করছেন। চারুকলা অনুষদের ১৮ ও ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থীরা দ্বায়িত্ব পেয়ছেন এবারের মঙ্গলশোভাযাত্রার প্রস্তুতির। এবারের মঙ্গলশোভাযাত্রার স্লোগানে রবীন্দ্রনাথকেই করা হয়েছে পরমাশ্রয়: ‘আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর’।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৩, ২০১৭
এমএ/জেএম
** ‘পহেলা বৈশাখে নিরাপত্তার সব প্রস্তুতি সম্পন্ন’