বুধবার (১৯ এপ্রিল) চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক মো. এহসানুল হক আসামিদের কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
আসামিরা হলেন-শরীয়তপুর সদর উপজেলার বিনোদপুর ঢালী কান্দি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক এসএম কাউছার ও দপ্তরী জাহিদুল ইসলাম।
পুলিশ জানায়, প্রধান শিক্ষক এসএম কাউছার ও দপ্তরী জাহিদুল ইসলাম বিভিন্ন সময় ছাত্রীদের সঙ্গে অশ্লীল কথাবার্তা বলতেন। সুযোগ বুঝে তারা ছাত্রীদের ফুঁসলিয়ে লাইব্রেরি ও ফাঁকা রুমে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি করতেন। ৯ এপ্রিল স্কুলের টিফিন চলাকালীন স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসএম কাউছার স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির দুই ছাত্রীকে লাইব্রেরিতে ডেকে নিয়ে অশ্লীল ও যৌন উত্তেজনামূলক কথাবার্তা বলেন।
অপরদিকে, দপ্তরী জাহিদুল ইসলাম বেপারী স্কুলের পঞ্চম শ্রেণির এক ছাত্রীকে স্কুলের ফাঁকা রুমে ডেকে নিয়ে যৌন হয়রানি করেন।
এ ঘটনার পর ওই ছাত্রীরা বাড়িতে গিয়ে বিষয়টি তাদের অভিভাবকদের জানায়। পরে অভিভাবকরা ইউএনও বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেন।
মঙ্গলবার (১৮ এপ্রিল) উত্তেজিত এলাকাবাসী স্কুলে জড়ো হয় এবং প্রধান শিক্ষক এসএম কাওছার ও দপ্তরী জাহিদুল ইসলামের শাস্তির দাবিতে শ্লোগান দিতে থাকেন। খবর পেয়ে পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খলিলুর রহমানসহ পুলিশের একটি দল ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে এবং অভিযুক্তদের থানায় নিয়ে আসে।
এরপর রাতে যৌন হয়রানির শিকার এক ছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে রাতে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পালং মডেল থানায় মামলা দায়ের করেন।
এদিকে, অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক এসএম কাউসারকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে বলে জানান জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবুল কালাম আজাদ।
যৌন হয়রানির শিকার এক ছাত্রীর বাবা হাবিবুর রহমান সরদার বাংলানিউজকে বলেন, স্কুলের প্রধান শিক্ষক এসএম কাউছার ও দপ্তরী জাহিদুল ইসলাম বিভিন্ন সময় মেয়েদের যৌন হয়রানি করে আসছেন। শিক্ষকের ভয়ে ছাত্রীরা কাউকে কিছু না বলায় এতোদিন বিষয়টি গোপন ছিল। একদিন আমার মেয়ে স্কুলে যেতে চাচ্ছিল না। কারণ জানতে চাইলে সে শিক্ষকের দ্বারা যৌন হয়রানির বিষয়টি বলে। পরে এ পর্যন্ত ১০ জনের সঙ্গে খারাপ আচরণের সত্যতা পাওয়া গেছে।
এ ঘটনার সুষ্ঠু বিচার চেয়ে রোববার (১৬ এপ্রিল) প্রথমে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর লিখিত অভিযোগ করি। পরে এলাকায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়লে ইউএনও স্যার আমাকে থানায় মামলা করার পরামর্শ দেন। তাই আমি প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরীর বিরুদ্ধে থানায় মামলা করি।
পালং মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ছাত্রীদের যৌন হয়রানির মামলায় স্কুলের প্রধান শিক্ষক ও দপ্তরীকে গ্রেফতার করে আদালতের মাধ্যমে জেল হাজতে পাঠানো হয়েছে এবং ছাত্রীদের ২২ ধারায় জবানবন্দি নেওয়া হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ১৯, ২০১৭
এনটি/আরএ