দুর্বৃত্তরা এসব ব্যক্তিদের আয়ের সম্বল ছিনিয়ে নেওয়ার পর খুনের ঘটনা ঘটিয়ে যাচ্ছে বলে ধারণা করছে পুলিশ। কিন্তু দুর্বৃত্তদের ঠেকানো যাচ্ছে না।
জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের বলি হয়েও নিহত হয়েছেন একজন। এসব খুনের ঘটনায় মামলা হয়েছে। এ পর্যন্ত একটি খুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটনে সক্ষম হয়েছে পুলিশ। বাকি খুনের ঘটনাগুলো এখনো কোনো কূল-কিনারা হয়নি। এতে আতঙ্কের মধ্যে রয়েছেন মানুষ।
তবে বসে নেই পুলিশ। খুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটন ও খুনিদের ধরতে তৎপরতা অব্যাহত রয়েছে বলে দাবি পুলিশের।
সম্প্রতি ঘটে যাওয়া বগুড়ার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে অনুসন্ধানে সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে এসব তথ্য ওঠে আসে।
সর্বশেষ বৃহস্পতিবার (২০ এপ্রিল) শহরের মালতিনগরে স্টাফ কোয়ার্টারের ভেতরে পুকুরের পানিতে ভাসমান একটি মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। নিহত ব্যক্তির নাম আনছার আলী। তিনি কাহালু উপজেলার সিন্ধুরাইন গ্রামের কছিম উদ্দিনের ছেলে।
সদর থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) আবু সাঈদ বাংলানিউজকে জানান, তিনি পেশায় ছিলেন রিকশা চালক। কাহালু উপজেলা থেকে বগুড়া শহরে এসে রিকশা চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করতেন। জীবিকার তাগিদে মাঝে মধ্যে ওই স্টাফ কোয়ার্টারেও থাকতেন। শুক্রবার (২১ এপ্রিল) দুপুর পর্যন্ত এ ঘটনায় কোনো মামলা হয়নি।
বুধবার (১৯ এপ্রিল) পুলিশ গোপালবাড়ি-চালিতাবাড়ি আঞ্চলিক সড়কের পাশের একটি ধান খেতে গলাকাটা অবস্থায় তোতা মিয়া নামে এক ব্যক্তির মরদেহ উদ্ধার করে। তিনিও একজন ভ্যান চালক। এ ঘটনায় মামলা হয়েছে। তবে খোয়া যাওয়া ভ্যানটি উদ্ধার করতে পারেনি পুলিশ।
একইদিন কাহালু উপজেলার দরগাহাট এলাকা থেকে ভ্যান চালক সিদ্দিকুর রহমানের মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। তিনি শাজাহানপুর উপজেলার চকদুলহা গ্রামের মৃত আবুল হোসেনের ছেলে।
কাহালু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নূর-ই আলম সিদ্দিকী বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় মামলা নেওয়া হয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত উল্লেখ করার মতো কোন অগ্রগতি নেই। ভ্যানটিও উদ্ধার করা যায়নি।
রোববার (১৬ এপ্রিল) শহরের নিশিন্দারা মন্ডলপাড়ায় কাউন্সিলরের কার্যালয়ে সামনে বালু ব্যবসায়ী হজরত আলীকে খুন করা হয়। ১৬ নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর জহুরুল ইসলামের নির্দেশে ৮ জন কিলার এ খুনের ঘটনায় অংশ নেয়।
পরদিন নিহতের মা মেরিনা বেগম বাদী হয়ে সদর থানায় পৌরসভার ১৬ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর জহুরুল ইসলাম ছাড়াও ৭ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৩-৪ জনকে আসামি করে মামলা করেন।
সদর থানার পুলিশ পরিদর্শক (ওসি-তদন্ত) আসলাম আলী বাংলানিউজকে জানান, এ ঘটনায় শাওন নামের একজনকে গ্রেফতার করা হয়। খুনের দায় স্বীকার করে সে আদালতে জবানবন্দি দিয়েছে।
এখন মূলহোতা কাউন্সিলর জহুরুল ইসলামসহ অন্য ঘাতকদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। তবে পলাতক থাকায় এখনো তাদের গ্রেফতার করা যায়নি।
এর আগে বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) বগুড়ার গাবতলীতে জমিজমা সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে প্রতিপক্ষের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে গুরুতর আহত বৃদ্ধ জেল্লাল রহমান চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান।
এছাড়া বগুড়া শহর এলাকায় প্রায়ই ছিনতাইয়ের ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে সন্ধ্যার পর থেকে দল বেধে বা বিচ্ছিন্নভাবে ছিনতাইয়ের কাজটি করে, অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।
বগুড়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমদাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, খুনের ঘটনার রহস্য উদঘাটনে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি। স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদঘাটন করা হয়েছে। আসামি গ্রেফতার করা হয়েছে। অপর আসামিদের গ্রেফতারে চেষ্টা চলছে।
তিনি আরো জানান, ছিনতাইকারীদের ধরতে ও ছিনতাইরোধে টহল পুলিশের তৎপরতা জোরদার করা হয়েছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৬৪২ ঘণ্টা, এপ্রিল ২১, ২০১৭
এমবিএইচ/জেডএস