আশির দশকে অনেকটা দায়সারাভাবে চট্টগ্রামের হাটহাজারী থেকে টানানো হয় প্রায় ১শ’ ৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বিদ্যুতের লাইন। এ লাইন দিয়েই চলছে খাগড়াছড়ির ৮ উপজেলা ছাড়াও পাশের জেলা রাঙ্গামাটির নানিয়ারচর, বাঘাইছড়ি ও লংগদু উপজেলা।
দিনে বিদ্যুৎ পাওয়া যায় মাত্র ৪ থেকে ৫ ঘণ্টা। তবে লো-ভোল্টেজের কারণে থেমে থাকে মটর ও ক্ষুদ্র কল-কারখানার মেশিনের চাকা। বিদ্যুতের অভাবে ভোগান্তিতে পড়েছেন হাসপাতালের রোগীরা। বিভিন্ন আবাসিক ভবনে দেখা দিয়েছে পানীয় জলের সংকট। শিক্ষার্থীদের লেখাপড়াও ঘটছে মারাত্মক ব্যাঘাত।
বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) সূত্রে জানা গেছে, খাগড়াছড়িতে বিদ্যুৎ চাহিদা ১৭-১৮ মেগাওয়াট হলেও ক্রটিপূর্ণ লাইন দিয়ে চাহিদা অনুযায়ী বিদ্যুৎ সরবরাহ সম্ভব হচ্ছে না। হাটহাজারী রিয়েল উপকেন্দ্র থেকে খাগড়াছড়ির বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা হয়। উপকেন্দ্রে কোনো যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দিলেই ১১টি উপজেলায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. নয়ন ময় ত্রিপুরা বলেন, বিদ্যুৎ না থাকলে হাসপাতালের রোগীরা পড়েন ভোগান্তিতে। হাসপাতালের জেনারেটর দিয়ে বেশিক্ষণ বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায় না। বিদ্যুতের অভাবে রোগীদের জরুরি চিকিৎসা সেবাও দেওয়া যায় না।
খাগড়াছড়ির ব্যবসায়ী লিয়াকত আলী চৌধুরী আক্ষেপ করে বলেন, দেশে এ ধরনের বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা হয়তো আর নেই। বিদ্যুৎ ভোগান্তির কারণে ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে।
বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের কয়েকজন কর্মচারী বলেন, বিদ্যুতের খুঁটিগুলো অধিকাংশই জঙ্গল আর পাহাড়ে। ক্রটি খোঁজার জন্য দীর্ঘ লাইনের প্রত্যেকটি খুঁটি যাচাই-বাছাই করতে অনেক সময় লেগে যায়।
খাগড়াছড়ি বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আবু জাফর বলেন, পুরাতন ও ক্রটিপূর্ণ লাইন দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহ ধরে রাখা আমাদের কাছে বিরাট চ্যালেঞ্জ। বৈরী আবহাওয়াতে কোনোভাবেই বিদ্যুৎ সরবরাহ করা সম্ভব হচ্ছে না। খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গা থেকে গুইমারা পর্যন্ত বিদ্যুতের লাইনে ক্রটি থাকায় সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। লাইনে মেরামত কাজ চলছে। দ্রুতই স্বাভাবিক হবে বলে তিনি জানান।
এদিকে খাগড়াছড়িতে নির্মাণাধীন গ্রিড সাব স্টেশনের কাজ চললেও সেখান থেকে কবে নাগাদ সুফল পাওয়া যাবে সেটি স্পষ্ট করে জানাতে পারেননি তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৩, ২০১৭
আরআর/জেডএস