এ ঘটনার প্রতিবাদে বিক্ষুব্ধ অটোরিকশা চালকরা শহরের জিরো পয়েন্ট এলাকায় সড়ক অবরোধ করে। এসময় তারা বিচারের দাবিতে খণ্ড খণ্ড মিছিলও করে।
মঙ্গলবার (২৫ এপ্রিল) বিকেলে শহরের ঝুমুর সিনেমা হলের সামনে থেকে অটোরিকশা নিয়ে লক্ষ্মীপুর জিরো পয়েন্টে যাওয়ার সময় ওই অটোরিকশা চালককে পেটানো হয়।
আহত অটোরিকশা চালক পলাশকে (২২) উদ্ধার করে লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে। তিনি পলাশ সদর উপজেলার পালের হাট এলাকার নবী হোসেনের ছেলে। আর তাকে পেটানোর অভিযোগ উঠেছে ট্রাফিক পুলিশ সদস্য অর্ক মজুমদারের বিরুদ্ধে। তাকে এরইমধ্যে জেলা পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে।
পলাশ বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, লক্ষ্মীপুর জিরো পয়েন্ট এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় ট্রাফিক পুলিশ অর্ক তার কাছে মাসিক বকেয়া ৫০০ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ৩০০ টাকা দিলে পুরো টাকার জন্য ক্ষিপ্ত হন অর্ক। এসময় তিনি হাতের লাঠি দিয়ে বেদম পেটাতে থাকেন তাকে। একপর্যায়ে এলোপাতাড়ি লাথিতে পলাশ মাটিতে লুটে পড়লেও রক্ষা পাননি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বাংলানিউজকে জানান, খবরটি ছড়িয়ে পড়লে অটোরিকশা চালকরা শহরের মাদাম এলাকায় জড়ো হয়। ঘটনার প্রতিবাদে তারা সড়কে গাছের গুড়ি ফেলে অবরোধ করে রাখে। এসময় তারা খণ্ড খণ্ড মিছিল করে জড়িত পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে স্লোগান দেয়।
খবর পেয়ে জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. শরীফুল ইসলাম ঘটনাস্থল এসে বিচারের আশ্বাস দিয়ে পরিস্থিতি স্বাভাবিক করেন।
ফারুক হোসেন ও কামালসহ কয়েকজন অটোরিকশা চালক বাংলানিউজের কাছে দাবি করেন, জেলার অভ্যন্তরীণ সড়কে নিয়মিত ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলছে। এজন্য ট্রাফিক পুলিশকে মাসিক ৫০০ টাকা হারে চাঁদা দিতে হয়। এছাড়া প্রতিদিন বিভিন্ন অংকের টাকাও পরিশোধ করতে হয়। টাকা উত্তোলনের জন্য ট্রাফিক পুলিশের পাশাপাশি কাঞ্চন, শাহ আলম ও ইউসুফ নামের কয়েকজন দায়িত্ব পালন করেন। টাকা দিতে বিলম্ব হলে ট্রাফিক পুলিশ তাদের যান আটকে রাখে।
আহত পলাশের মা লায়লা আক্তার বাংলানিউজকে বলেন, চাঁদা না পেয়ে পুলিশ আমার নিরাপরাধ ছেলেকে পিটিয়ে তার পা ভেঙে দিয়েছে। নির্দয়ভাবে বেদম পিটিয়ে তাকে আহত করেছে। আমি এ ঘটনার বিচার দাবি করছি।
লক্ষ্মীপুর সদর হাসপাতালের আবাসিক মেডিকেল অফিসার (আরএমও) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আহত পলাশ হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছেন। এক্স-রে রিপোর্টে তার ডান-পা ভাঙার আলামত দেখা গেছে।
লক্ষ্মীপুর ট্রাফিক পুলিশ পরিদর্শক মো. সেলিম বলেন, উচ্চ আদালত সড়কে ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করেছেন। পলাশের অটোরিকশাটি আটক করা হলে তিনি পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। এ নিয়ে তার সঙ্গে ট্রাফিক পুলিশ সদস্যের ধস্তাধস্তি হয়েছে। এ ঘটনায় ট্রাফিক সদস্য অর্ককে পুলিশ লাইনে প্রত্যাহার করা হয়েছে। আমরা আহত চালকের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছি।
বাংলাদেশ সময়: ০২৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এইচএ/