ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আজকেরডিলের ক্রেতার বাজে অভিজ্ঞতার কথা

অর্থনীতি-ব্যবসা ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
আজকেরডিলের ক্রেতার বাজে অভিজ্ঞতার কথা আজকেরডিল

মার্কেটে গিয়ে দরদাম করা, বেশি দাম চাওয়ায় দোকানির সঙ্গে ঝগড়ার মুখোমুখি হয়েছেন অনেকেই। আজ যে ঘটনার কথা বলতে যাচ্ছি সেটার সঙ্গে অনেকেই পরিচিত নন, কিন্তু এই অভিজ্ঞতার মাত্রাটা একটু বেশিই তিক্তকর|

ক্রেতা ইফতি, পড়েন জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত বিভাগে| 

আধুনিক যুগের অনলাইন ক্রেতা তিনি| তাই ঘরে বসেই একটি প্যান্ট কেনার জন্য অর্ডার দিয়েছিলেন আজকেরডিল.কমে|

কিন্তু মার্কেটে যাওয়ার ঝক্কি কিংবা দোকানির সঙ্গে দামাদামি করার ঝামেলা থেকে মুক্তি পাওয়ার স্বাদটা তার নেওয়া হয়নি, উল্টো বাজে অভিজ্ঞতার শিকার হয়েছেন|

গণিতের ছাত্র হলেও সেনস অব হিউমার ভালো হওয়ায় নিজের সেই বাজে অভিজ্ঞতার কথাও খুব রসিয়ে বর্ণনা করেছেন তিনি| এ নিয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে তিনি একটি পোস্ট দিয়েছেন| 

চলুন তার লেখাটি হুবহু পড়া যাক-

‘ধরুন, আপনি মার্কেটে একটি প্যান্ট কিনতে গেলেন। দেখে-শুনে একটা প্যান্ট পছন্দ করলেন Trial দেওয়ার জন্য।

Trial দেওয়ার আগেই আপনি প্যান্টটির পুরো মূল্য পরিশোধ করলেন। কিন্তু প্যান্টটি আপনার সাইজ মতো হলো না। তাই ফেরত দেবেন। এজন্য আবার ১০০ টাকা দিতে হবে। আর প্যান্টটির মূল্য যা আপনি আগেই পরিশোধ করেছিলেন তা আপনাকে ২২ দিন পরেও ফেরত দেওয়া হলো না। আদৌ ফেরত পাবেন কিনা তাও আপনি জানেন না।  

এরকমটা হলে আপনি বা আপনার পরিবারের কেউ ওই মার্কেট থেকে আর কোনোদিন Shopping করবেন? আমার তো মনে হয় আপনার ১৪ গোষ্ঠীর কাউকে ওই মার্কেটের ধারে কাছেও যেতে দেবেন না।

স্ট্যাটাস

কিন্তু এমনটাই ঘটছে বাংলাদেশের অনেক E-Commerce Site থেকে কেনাকাটার ক্ষেত্রে। আজকে বাংলাদেশের অন্যতম বড় E-Commerce Site আজকেরডিল.কম-এর সঙ্গে আমার একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করছি।  

গত ০৬ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে আজকেরডিল.কম-এ বিকাশের মাধ্যমে অগ্রিম মূল্য পরিশোধ করে একটি জিন্স প্যন্ট অর্ডার করি, যার অর্ডার নং 640932

১১ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে ছিলো ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ।  

১৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে একটি wrong size-এর প্যন্ট ডেলিভারি করেন তারা।

১৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে সঙ্গে সঙ্গেই ফোন করে অভিযোগ করি এবং আমাকে নিজ খরচে পণ্যটি ফেরত পাঠাতে বলা হয় এবং
১৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখেই ১০০ টাকা চার্জ দিয়ে তাদের ঠিকানায় পণ্যটি ফেরত পাঠানোর জন্য সুন্দরবন কুরিয়ারে বুক করি।  

১৫ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে তারা আমাকে ফোন করে জানান যে, পণ্যটি তারা হাতে পেয়েছেন।

২২ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে অভিযোগটি তাদের রিফান্ড সেকশনে আসে, এবং আমার বিকাশ নম্বর চেয়ে মেইল দেওয়া হয়।

২২ এপ্রিল ২০১৭ তারিখেই আমি আমার পার্সোনাল বিকাশ নম্বর দিয়ে তাদের মেইলের রিপ্লাই দেই।  

২৩ এপ্রিল ২০১৭ তারিখে রিফান্ড সেকশন যে আমার বিকাশ নম্বরটি পেয়েছেন তা নিশ্চিত করেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্টজনকে মেইল forward করেন।

আজ ২৮ এপ্রিল ২০১৭। আজ পর্যন্ত টাকা ফেরত পাইনি। আমার ১০০ টাকা কুরিয়ার চার্জ তো ফাউ গেলোই, ওইটা তো আজকেরডিল.কম বাপের জন্মেও ফেরত দেবে না, প্রোডাক্টের মূল্য যেটা আমার প্রাপ্য সেটা কী দেবে নাকি মেরে দেবে তাও জানি না।  

অনেকে হয়ত বলবেন Cash on Delivery নেইনি কেন? ওইটারও একই অবস্থা। কুরিয়ারকে টাকা পরিশোধ না করা পর্যন্ত সিল করা প্যকেট খোলা যাবে না। এখন আপনিই বলেন, প্রোডাক্টের সাইজ, কোয়ালিটি ঠিক আছে কিনা আপনি প্যাকেট না খুলে কীভাবে বুঝবেন? কিন্তু কিছু করার নেই, আগে টাকা পরে প্যাকেট। আর এরপর যদি প্যাকেট খুলে দেখেন সবকিছু ঠিকঠাক নেই তাহলে আবার ফোন করে অভিযোগ করেন, নিজ খরচে প্রোডাক্ট ফেরত পাঠান আর তাদের দয়ার আশায় বসে থাকেন...  

Online থেকে কিছু কেনার আগে সাবধান হোন। পারলে Online avoid করে সরাসরি মার্কেটে গিয়ে দেখে শুনে তারপর কেনেন। কারণ, এই দেশে বাটপারের অভাব নেই। ’

বোঝা গেলো বেশ চটেছেন ইফতি, আর এটা অমুলকও নয়| এ ব্যাপারে জানার জন্য শুক্রবার সকালে ফোন করা হয়েছিল আজকেরডিলের কাস্টমার কেয়ারে| তাদের ওয়েবসাইটে দেওয়া মোবাইল নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়, আর হটলাইনে ডায়াল করলে সেটির রেকর্ডেড ভয়েসটি শুনিয়ে পাক্কা চার মিনিট ঝুলিয়ে রাখলো, কেউ একবার হ্যালোটা বললো না! 

অনলাইনে পণ্য কিনে বাজে অভিজ্ঞতার শিকার তিনিই প্রথম হলেন এমনটাও নয়, অহরহ উদাহরণ পাওয়া যাবে| আবার ভালো অভিজ্ঞতাও রয়েছে অনেকের| 

ক্রেতাদের দাবি, নিজেদের ব্যবসা টিকিয়ে রাখার জন্য অনলাইন মার্কেটগুলোকেই এই ভালো অভিজ্ঞতার পাল্টাটা ভারী করতে হবে| বিক্রি বাড়ানোর চেয়ে গ্রাহক সন্তুষ্টির উপর জোর দিতে হবে আরও| অনেক উপায় রয়েছে গ্রাহককে খুশি করার, শুধু একটু উদারভাবে ভাবতে হবে তাদের।

বাংলাদেশ সময়: ১১৫১ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৮, ২০১৭
এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।