ঢাকা, সোমবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৪ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৪ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

এক ক্লিকেই নাগরিকসেবা আগামী বছর

শাহজাহান মোল্লা, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০১৪৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
এক ক্লিকেই নাগরিকসেবা আগামী বছর কথা বলছেন মেয়র সাঈদ খোকন। ছবি: ডিএইচ বাদল

ঢাকা: প্রথমবারের মতো মেয়র নির্বাচিত হয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন স্মার্ট সিটি গড়বো। সেই কাজের অনেকটা শুরুও করে দিয়েছেন ঢাকা দক্ষিণের মেয়র সাঈদ খোকন। আগামী ৬ মে মেয়াদের দুই বছর পূর্তির প্রাক্কালে বাংলানিউজের সঙ্গে বিশেষ সাক্ষাৎকারে নিজের দেওয়া প্রতিশ্রুতি ও আগামীর ভাবনা তুলে ধরেছেন সাঈদ খোকন।

বাংলানিউজ: আপনি নির্বাচিত হয়ে ঘোষণা দিয়েছিলেন স্মার্ট ও নিরাপদ নগর গড়বেন, সে কাজের অগ্রগতি কতদূর?
 
সাঈদ খোকন:
দেখুন আমি দায়িত্ব গ্রহণের পর ঠিক করেছিলাম প্রথম দুই বছর নগরের মৌলিক সমস্যার সমাধান করবো। সেই কাজ অনেকটাই করে ফেলেছি।

কিছু কাজ আছে আশা করি হয়ে যাবে। স্মার্ট সিটি বলতে যেটা বোঝায় এরই মধ্যে কিছু কাজ করেছি। ধরুন আমরা যে এলইডি বাতি স্থাপন করেছি, সেগুলোর আলো বাড়ানো কমানো কিন্তু এখন একটি অ্যাপসের মাধ্যমেই করতে পারছি। কোথাও কোন সড়কে রাত দুইটার সময় লোক চলাচল বা যানবাহন চলাচল কম, তাহলে মোবাইল অ্যাপসের মাধ্যমেই আলো কমিয়ে দিতে পারছি। আবার বাড়ানো প্রয়োজন হলে বাড়াতে পারছি।
 
এছাড়া আমি দায়িত্ব নেওয়ার পর সকল কর্মকর্তা-কর্মচারীর ডিজিটাল হাজিরা চালু করেছি। এখন আর কেউ ফাঁকি দিতে পারবে না। পরিচ্ছন্নতাকর্মীদের হাজিরা নিশ্চিত করতে মোবাইল ট্রাকিং পদ্ধতি চালু করেছি। এখন কে কখন পরিচ্ছন্নতার কাজ করলো, কয়দিন হলো সব মোবাইলে চলে আসে, সেই হারে বেতন হয়। আমাদের ভাবনায় আছে রাজস্ব ব্যবস্থাও ডিজিটাল করা।  
কথা বলছেন মেয়র সাঈদ খোকন।  ছবি: ডিএইচ বাদলমেয়র বলেন, স্মার্ট সিটি গড়ার কাজ মূলত ২০১৮ সালে শুরু হবে। ওই বছরই দৃশ্যমান হবে বিষয়টি। আমরা এমন ব্যবস্থা চালু করতে চাই যাতে কোনো নাগরিক সমস্যায় পড়লেই একটামাত্র ক্লিকেই  সমাধানের উপায় খুঁজে পান। ইমার্জেন্সি বাটন সিস্টেম চালু করবো। এটা আসলে চমক না, নিয়মিত কাজ। এটা প্রয়োজন।
 
বাংলানিউজ: আপনার প্রতিশ্রুতির মধ্যে ছিলো সকল খেলার মাঠ, কমিউনিটি সেন্টার দখলমুক্ত করা হবে। সেটা কতদূর?
 
সাঈদ খোকন: এই জায়গায় অনেকটা পিছিয়ে আছি। আমাদের কমিউনিটি সেন্টারগুলো ৩০, ৪০ বছরের পুরনো, জরাজীর্ণ। কিছু আছে র‌্যাব ক্যাম্প, কিছু কমিউনিটি সেন্টারে থানা করা হয়েছে। নিরাপত্তার জন্য এগুলোও প্রয়োজন। আমরা ২২টি কমিউনিটি সেন্টার করার একটি প্রকল্প দিয়েছিলাম পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে। সেখানে থেকে কমতে কমতে ৩টিতে এসে ঠেকছে। আমাদের অর্থের সংস্থানও সেরকম নেই। আমাদের পরিকল্পনা আছে ২২টি না হলেও কিছু কমিউনিটি সেন্টারকে আধুনিক মানের করা। এসবই ভাবনার পর্যায়ে রয়েছে।
 
খেলার মাঠ নিয়ে মেয়র বলেন, আমাদের জল ঢাকা প্রকল্পের আওতায় ১২টি খেলার মাঠ, ১৯টি পার্ক আন্তর্জাতিক মানের করার উদ্যোগ নিয়েছি। ৭০জন আন্তর্জাতিক মানের আর্কিটেক্ট তাদের ডিজাইন দিয়েছেন। এরই মধ্যে ২৩ থেকে ২৫টি টেন্ডার অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বাকি ৬-৭টি প্রক্রিয়াধীন। এই বছরেই ৮০ শতাংশ কাজ হয়ে যাবে। সোহরাওয়ার্দি উদ্যানের মতো বড় মাঠগুলোর কাজ শেষ করতে ২০১৮ সালের মাঝামাঝি চলে যাবে।
 
বাংলানিউজ: নগরীতে রাজনৈতিক দলের সভা-সমাবেশ সাপ্তাহিক ছুটিতে আনার কথা বলেছিলেন, সেই অবস্থান থেকে কোথায় আছেন? 
কথা বলছেন মেয়র সাঈদ খোকন।  ছবি: ডিএইচ বাদলসাঈদ খোকন: এটা আসলে শুক্র-শনিবারই হওয়া উচিত। এটাতে পাবলিক দুর্ভোগ অনেক বেড়ে যায়। আমাদের প্রধানমন্ত্রীও তাই চান, যোগাযোগ মন্ত্রীও একমত পোষণ করেছেন। সভা-সমাবেশ শুক্র, শনিবার করলেই ভাল হয়। সমাবেশ করে আমরা যে অর্জন করি, সেগুলো আসলে ভোগান্তিতে ম্লান হয়ে যায়।
 
বাংলানিউজ: একজন মেয়র হিসেবে নগরবাসীর জন্য নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করারও আপনার দায়িত্ব, আপনি কি মনে করেন?
 
সাঈদ খোকন: নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে আমাদের ভেজালবিরোধী অভিযান অব্যাহত আছে। এটা আসলে আমাদের একার কৃতিত্ব না। এখানে বিএসটিআই, খাদ্য অধিদপ্তর, র‌্যাবসহ আরও কয়েকটি সংস্থা কাজ করছে। যেকারণে এখন ফরমালিনের দৌরাত্ম্য অনেকটাই কমে গেছে। আসছে রমজানেও আমাদের জোরালো অভিযান থাকবে।
 
বাংলানিউজ:
সময় দেওয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ।

সাঈদ খোকন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
 
আগামী ৬ মে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনে মেয়র হিসেবে দুই বছর পূর্ণ করবেন সাঈদ খোকন। ২০১৫ সালের ২৮ এপ্রিল প্রথমবারের মতো বিভক্ত সিটি কর্পোরেশনে ভোট হয়। এরপর ৬ মে শপথ নেন নির্বাচিত মেয়ররা।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৭৪০ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
এসএম/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।