খুলনা বিভাগীয় গণগ্রন্থাগারের এমন ঝুঁকিপূর্ণ দোতলা ভবনেই চলছে পাঠকদের পড়াশোনা।
শনিবার (২৯ এপ্রিল) সরেজমিনে মহানগরীর বয়রা জিপিও এলাকার অর্ধশতাধিক বছরের পুরনো এ গ্রন্থাগারে গেলে নানা শঙ্কার কথা জানান পাঠকরা।
বই পড়তে আসা সরকারি বিএল কলেজের ছাত্র জিসান বলেন, ‘শঙ্কায় থাকি, কখন মাথার ওপরে ছাদের প্লাস্টার ধসে পড়ে। বিশেষ করে বর্তমানে কালবৈশাখী ঝড় এলে খুব ভয় লাগে’।
আল-আমিন বলেন, ‘বৃষ্টি হলে ভবনের ছাদ চুইয়ে পানি পড়ে। ভেতরের দেওয়ালগুলো স্যাঁতসেঁতে হয়ে যায়। জানি না, কবে ভূমিকম্পে ধসে পড়ে’।
বৃহৎ গ্রন্থাগারটি ঘুরে দেখা গেছে, পাঠকক্ষের অধিকাংশ চেয়ার-টেবিলই ফাঁকা। শিশু কর্নারে কোনো শিশু পাঠক নেই। নারী পাঠকের সংখ্যা হাতে গোনা দুই একজন। ওয়াইফাই জোনও নেই।
এখানে রয়েছে রেফারেন্স বিভাগ ও সাধারণ বিভাগ। সাহিত্য, বিজ্ঞান, গবেষণা, ইতিহাস, কাব্যগ্রন্থ, সাধারণ জ্ঞান, ধর্মীয় গ্রন্থ ও সাধারণ গ্রন্থসহ বিভিন্ন বিষয়ের লাখো বই সেলফগুলোতে সাজানো। টেবিলে টেবিলে রাখা হয়েছে জাতীয় ও আঞ্চলিক দৈনিক, সাপ্তাহিক, ষান্মাসিক, মাসিক ও ত্রৈমাসিক পত্র-পত্রিকাসহ চাকরির পত্রিকাও। তবে তিন ঘণ্টা অবস্থান করে ৩০ জনও পাঠক পাওয়া যায়নি।
গ্রন্থাগার সূত্রে জানা গেছে, ১৯৬৪ সালে প্রায় আড়াই একর জমিতে দোতলা ভবনে গ্রন্থাগারটির কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার পর থেকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়-স্কুলের ছাত্রসহ সব শ্রেণী-পেশার মানুষ পড়াশোনার জন্য এটি ব্যবহার করে আসছেন।
গ্রন্থাগারটির আওতায় ১০টি জেলা সরকারি গণগ্রন্থাগারের প্রশাসনিক ও আর্থিক কার্যক্রমও পরিচালিত হয়। বর্তমানে অবকাঠামো ও জনবল সংকটসহ নানা সমস্যার শিকার এটি।
এখানে ১৮ জনের জনবল কাঠামো থাকলেও কর্মরত আছেন ১৩ জন।
গ্রন্থাগারের উপ-পরিচালক হরেন্দ্রনাথ বসু বলেন, এখানে ১ লাখ ১২ হাজার বই রয়েছে। প্রতিদিন গড়ে প্রায় সাড়ে ৪শ’ পাঠক আসেন। এর মধ্যে অর্ধেক নারী বলেও দাবি করেন তিনি।
তিনি বলেন, ৫০ বছরেরও বেশি সময় আগে স্থাপিত এ ভবনে আর কোনো সংস্কার করা হবে না। এখানে নতুন আধুনিক ভবন করা হবে। এজন্য বিকল্প প্রকল্প প্রস্তাব জমা দেওয়া হয়েছে।
পাঠকক্ষ সহকারী অখিল দেবনাথ বাংলানিউজকে জানান, ১৮টি জাতীয় ও ৫টি স্থানীয় দৈনিক, কয়েকটি সাপ্তাহিক ও কয়েকটি ত্রৈমাসিক রাখা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
এমআরএম/এএসআর