ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

উপকূলের বিপন্ন জনপদে পরিবার-পরিকল্পনা সেবা

সোলায়মান হাজারী ডালিম, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১১৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
 উপকূলের বিপন্ন জনপদে পরিবার-পরিকল্পনা সেবা উপকূলের বিপন্ন জনপদে পরিবার-পরিকল্পনা সেবা

ফেনী: বৈরী আবহাওয়া, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস তাদের নিত্যসঙ্গী। ক্ষুধা-দারিদ্র্য এ জনপদের নিত্যকার অনুসঙ্গ। শিক্ষাবঞ্চিত উপকূলের এসব মানুষ জন্ম দেন ঠিকই কিন্তু তাদের সুস্থভাবে বেড়ে তোলা নিশ্চিত করতে পারে না অনেকেই। আর সে কারণেই এসব এলাকায় পরিবার পরিকল্পনা অন্য অঞ্চল চেয়ে বেশি গুরুত্ব বহন করে। 

গুরুত্ব থাকা সত্ত্বেও অধিকাংশ উপকূলীয় এলাকার মানুষই এ ব্যাপারে সচেতন নয়। কিন্তু এ ক্ষেত্রে পুরোই ব্যতিক্রম সোনাগাজী উপকূলীয় এলাকা।

এ উপজেলায় সেবা পাচ্ছে ৩৯ হাজার ৬শ ১৮ দম্পতি। যা উপক‍ূলীয় অন্য এলাকার জন্য দৃষ্টান্ত বলা চলে।  

এ দৃষ্টান্ত স্থাপন সহজে হয়ে ওঠেনি। এজন্য কঠোর পরিশ্রম করতে হয়েছে এখানকার পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তাদের। তেমনি একজন দেলোয়ারা বেগম। তিনি পরিবারকল্যাণ সহকারী। তিনি এক হাতে সামাল দেন সংসার। অন্যদিকে, সারাদিন মাঠ দাপিয়ে প্রত্যন্ত অঞ্চলে সেবা পৌঁছে দেন।

প্রতিদিন সকাল হলেই গ্রামের আর দশটা গৃহবধূর মতো ঘরের কাজ শুরু করেন তিনি, পরিবার-পরিজনদের খাবার তৈরি করেন— এরপর নেমে পড়েন কাজে, ছোটেন বাড়ি বাড়ি। ঘরে ঘরে গিয়ে দম্পতিদের সঠিক পদ্বতি নিতে নির্দেশনা দেন ও স্বাস্থ্য সচেতন করে তোলেন।  

সোনাগাজীতে দেলোয়ারা বেগমের মতো ৩৪ জন পরিবার কল্যাণ সহকারী প্রতিদিন ঘরে ঘরে গিয়ে দম্পতিদের সঠিক পরামর্শ ও নির্দেশনা দেন। পরিবারকল্যাণ সহকারীদের কাজের তদারকি করেন ইউনিয়ন পরিবার পরিকল্পনা পরিদর্শক।

উপজেলার প্রতিটি এলাকায় বাড়ি বাড়ি গিয়ে উঠান বৈঠক আয়োজনের মাধ্যমে দম্পতিদের দীর্ঘমেয়াদী, স্থায়ী পদ্বতি নিতে আগ্রহী করা হয় এবং গর্ভবতীদের প্রসবপূর্ব ও প্রসবোত্তর সেবা নেওয়ার জন্য উদ্বুদ্ধ করা হয়। তাদের নিরাপদ প্রসব সেবা দিতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র থেকে ডেলিভারি সেবা নেওয়ার জন্য কাউন্সেলিং করা হয়। উঠান বৈঠকের আয়োজন করেন পরিবার-পরিকল্পনা পরিদর্শক ও পরিবারকল্যাণ সহকারীরা।

উপজেলায় ৬টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রগুলোতে উপ-সহকারী কমিউনিটি মেডিকেল অফিসার ও পরিবারকল্যাণ পরিদর্শিকারা সাধারণ স্বাস্থ্যসেবা, মা ও শিশু স্বাস্থ্য সেবা, কিশোর-কিশোরীদের প্রজনন স্বাস্থ্য সেবা দিয়ে থাকে। সপ্তাহে ২৪ ঘণ্টা ডেলিভারি সেবাও দেওয়া হয়।

উপজেলার মতিগঞ্জ ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্রে স্থায়ী ও দীর্ঘমেয়াদী পরিবার-পরিকল্পনা পদ্বতির ক্যাম্প (অপারেশন) পরিচালনা করা হয়। উপজেলায় মোট সক্ষম দম্পতির সংখ্যা ৫৩ হাজার ৪শ ২৯, পদ্বতি নেওয়া দম্পতির সংখ্যা ৩৯ হাজার ৬শ ১৮, পদ্বতি নেওয়ার হার ৭৪ দশমিক ১৫ শতাংশ।

সোনাগাজী উপজেলা পরিবার-পরিকল্পনা কর্মকর্তা সাহেদা হোসেন জানান, সোনাগাজী উপজেলায় পরিবার পরিকল্পনার ৫০টি ইউনিটের মাধ্যমে সেবা দেওয়া হয়ে থাকে। পরিবার-পরিকল্পনা বিভাগের অধীনে ৬টি ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র নামে হাসপাতাল রয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭১৯ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
এসএইচডি/এসএনএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।