কবি কাজী নজরুল ইসলামের এই ক’টি লাইন যেন প্রতিধ্বনি তুলছিল সেদিন বুড়িগঙ্গার তীরে। নৌকায় আসা গাছের চালান থেকে একটি কণ্ড কাঁধে করে কারখানায় নিয়ে যাচ্ছিলেন একদল শ্রমিক।
দেশের বিভিন্ন স্থান থেকেই নৌপথে এ ঘাটে আসে কাঠ। কাঠগুলো প্রথমে নদীর পানিতে ভিজিয়ে রাখা হয় কয়েকদিন। তারপর প্রয়োজনে শ্রমিকরা দলবেঁধে সেগুলো পানি থেকে টেনে তুলেন।
নদী পাড়ের ঢালে বেয়ে এই গাছ তুলতে শ্রমিকদের যথেষ্ট বেগ পেতে হয়।
দলগতভাবে এ কাজটি করতে হয়। প্রায় চার মণ ওজনের এই ভেজা গাছ ঢালে বেয়ে উঠতে একে অপরকে আঁকড়ে ধরে থাকেন তারা।
আবার এক মণ ওজনের একটি ভেজা গাছ সুঠাম দেহের অধিকারী একজনই নিতে পারেন।
নদী থেকে ভারী একটি গাছ তুললে আনলে একজন শ্রমিক মাত্র ১৫ টাকা পেয়ে থাকেন। দিনে একজন শ্রমিক অমানুষিক পরিশ্রমের কাজের বিনিময়ে মাত্র ৩শ’ থেকে ৪শ’ টাকা আয় করে থাকেন।
বাঁশ ভেজানোর কাজে ব্যস্ত দুই শ্রমিক। অন্য একটি বাঁশ দিয়ে ঠেলে বাঁশগুলো এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নিয়ে যাচ্ছেন।
শ্রমের মর্যাদা ও শ্রমিকের অধিকার আদায়ের প্রতীক মহান মে দিবস বছর ঘুরে আবারও সামনে উপস্থিত। কিন্তু শ্রমিক আদায়ের আন্দোলনের ঐতিহাসিক দিন ১৮৮৬ সালের ৪ মে স্মরণে এ দিবসটি এতো শত বছর ধরে পালন করে এলেও শ্রমিকদের ভাগ্যোন্নয়নের লক্ষ্মণ দেখা যাচ্ছে না। বরং আজো প্রাপ্য মজুরির জন্য শ্রমিকদের লড়তে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। এই লড়াই শেষ কবে?
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪৮ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
জিপি/এইচএ