সম্প্রতি বাংলানিউজকে কথাগুলো বলছিলেন লালমনিরহাটের কিসামত ভেটেশ্বর গ্রামের ধান চাষি রিয়াজ উদ্দিন।
চলতি মৌসুমে ২০ বিঘা জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ করেছিলেন তিনি।
তিনি আরো জানান, প্রায় ৫০ হাজার টাকা খরচ করে ধান চাষ করেছেন। কিন্তু একটা ধানও গোলায় তুলতে পারছেন না। পরিবার-পরিজন নিয়ে এ বছর কি খাবেন সে চিন্তায় মগ্ন তিনি। প্রতিবছর ধান বিক্রি করেই চলে কিসামত চন্দ্রপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের সংসার। শিলা বৃষ্টি আর ঝড়ে এ বছর তার ছয় বিঘা জমির পাকা ধান মাটিতে পড়ে গেছে। দুই বিঘা জমির ধান দুই দিন আগে ঘরে তুলেছেন। দুই বিঘা জমিতে প্রায় ৪০ মণ ধান পেয়েছেন এবার। শনিবার (২৯ এপ্রিল) বাকি জমির ধান কাটার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন। ছেলে-মেয়েদের ভরণ-পোষণ নিয়ে এখন চিন্তিত তিনি।
মহিষখোচা গ্রামের ধান চাষি রবিউল ইসলাম স্থানীয় এনজিও থেকে ঋণ নিয়ে তিন বিঘা জমিতে ধান চাষ করেন। ধান কাটার উপযোগীও হয়েছিল। দু’এক দিনের মধ্যেই ধান বাড়িতে তোলার কথা ছিল। কিন্তু শুক্রবার (২৮ এপ্রিল) রাতে টানা তিন ঘণ্টার শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে সব কিছু লণ্ডভণ্ড হয়েছে তার। বিক্রি তো দূরের কথা, বাড়িতে নেয়ার মতো একটি ধানও অবশিষ্ট নেই। জমির আইলে বসে কিস্তির টাকা আর খাবারের ধান নিয়ে চিন্তা করছেন এ কৃষক।
এমন অবস্থা লালমনিরহাট সদর, আদিতমারী ও কালীগঞ্জ উপজেলার কয়েক হাজার কৃষক পরিবারের। এ জেলায় কৃষিতে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে আদিতমারী ও সদর উপজেলায়। এ দুই উপজেলায় ধান উৎপাদনও হয়েছিল বেশি। কিন্তু শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে এবার এসব কৃষক ভাতের ধানও ঘরে তুলতে পারছেন না। কৃষক পরিবারে চলছে কান্নার রোল।
লালমনিরহাট কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উপ পরিচালক বিদু ভুষণ রায় বাংলানিউজকে জানান, চলতি মৌসুমে জেলায় ৫২ হাজার ৫৮৫ হেক্টর জমিতে ইরি-বোরো ধান চাষ হয়েছে। শিলা বৃষ্টি ও ঝড়ে জেলার কৃষির ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নিরূপণে মাঠপর্যায়ে কাজ করছে কৃষি বিভাগের লোকজন।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
আরবি/এসআই