হুমায়নের মামলার প্রায় তিন বছর কেটে গেলেও কোনো সুরাহা হয়নি। তার মতোই পলমল গ্রুপের শ্রমিক মুসা ও মোশারফের মামলার বয়সও প্রায় ৩ বছর।
এভাবে বছরের পর বছর ঘুরেও ন্যায়বিচার পাচ্ছেন না অনেক শ্রমিক। বর্তমানে রাজধানীর তিনটিসহ সারাদেশে সাতটি শ্রম আদালত রয়েছে। প্রায় ২০ হাজার শ্রমিকের মামলা এখন ঝুলছে এসব শ্রম আদালতে। আইনের দরজায় এখন কেবলই তাদের নায্য অধিকার পাওয়ার আশা।
মূলত মালিকপক্ষের অসহযোগিতার কারণেই এমনটি হচ্ছে বলে জানান সংশ্লিষ্টরা। মালিকপক্ষকে বার বার মামলার তারিখ দেওয়ার পর তারা প্রায় সময়ই হাজির হন না আদালতে। কখনও কখনও ধার্য তারিখে মালিকের প্রতিনিধি আসেন দায়সারাভাবে। মামলার হয় না কোনো কূল-কিনারা। এক সময় শ্রমিকরাও হতাশ হয়ে পড়েন। মামলার খরচ চালাতে হিমশিম খান। নিরাশ হয়ে এক পর্যায়ে তাদের আসাও বন্ধ হয়ে যায়। মামলাগুলো ঝুলে থাকে বছরের পর বছর। অনেক সময় মালিকপক্ষের সাড়া না পেয়ে আদালত রায় দিলে তখন তারা আপিল করেন।
বিচারের এই দীর্ঘসূত্রতায় হয়রানির শিকার হচ্ছেন শ্রমিকরাই।
গার্মেন্টস শ্রমিক ও শিল্প রক্ষা জাতীয় মঞ্চের সমন্বয়ক তপন সাহা বাংলানিউজকে বলেন, শ্রমিকরা ন্যায্য অধিকার থেকে বঞ্চিত হলেই শ্রম আদালতের দরজায় যান। তাদের প্রাপ্য বুঝিয়ে দিতে শ্রম আদালতও সর্বাত্মক চেষ্টা করেন। তবে মালিকরা বিচারকাজ দীর্ঘ করতে নানা ছক আঁটেন। তারা আদালতে হাজির হতেই চান না। শ্রম আদালত অপেক্ষা করে করে এক পর্যায়ে শ্রমিকদের পক্ষে একতরফা রায় দেন। কিন্তু তারা সেই রায় বাস্তাবায়ন থেকেও বিরত থাকেন। তখন বাধ্য হয়ে আদালত অবমাননার মামলা করতে হয়। বিচারের এই দীর্ঘসূত্রতায় শ্রমিকরা হতাশ হয়ে পড়েন। কখনও কখনও নিজেদের ন্যায্য পাওনা না পেয়ে নীরব হয়ে যান।
তবে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রফতানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সহ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘যেকোনো উদ্যোক্তাই আইনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। মালিকদের কারণেই শ্রম আদালতের মামলাগুলো ঝুলে আছে, এ কথা সত্য নয়। অনেক সময় শ্রমিকরা নিজে থেকেও মামলা চালাতে চান না। সাধারণত আলোচনার মাধ্যমে সমাধানে আমরা নানা ধরনের উদ্যোগ নেই। কোনো শ্রমিক তাদের ন্যায্য পাওনা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জানলে সমস্যার নিরসনে আমরা নিজেরা উদ্যোগ নেই’।
বাংলাদেশ সময়: ০৪১৪ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৭
ইউএম/আরআর/এএসআর