ঢাকা, মঙ্গলবার, ১১ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

হাওরে বাঁধ রক্ষায় অবহেলার জবাব চেয়েছে আইএমইডি

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩৪৪ ঘণ্টা, এপ্রিল ৩০, ২০১৭
হাওরে বাঁধ রক্ষায় অবহেলার জবাব চেয়েছে আইএমইডি হাওরে বাঁধ রক্ষায় অবহেলার জবাব চেয়েছে আইএমইডি/ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: ‘হাওর এলাকায় আগাম বন্যা প্রতিরোধ ও নিষ্কাশন’ প্রকল্প বাস্তবায়নে চরম অবহেলা লক্ষ্য করে এর জবাব চেয়েছে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ের বাস্তবায়ন পরিবীক্ষণ ও মূল্যায়ন বিভাগ (আইএমইডি)। প্রকল্প এলাকা পরিদর্শন শেষে ৩০ দিনের মধ্যে জবাব চেয়েছেন সরকারি প্রকল্প তদারকি সংস্থাটির কর্মকর্তারা।

প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ড।

আইএমইডি সূত্র জানায়, গত মার্চ পর্যন্ত প্রায় ছয় বছরে প্রকল্পের আর্থিক অগ্রগতি মাত্র ২২ দশমিক ৮০ শতাংশ হলেও বাস্তব অগ্রগতি শূন্য।

অথচ ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০১৫ মেয়াদে ৬৮৪ কোটি ৯৪ লাখ টাকা ব্যয়ে হাওরের বাঁধগুলো নির্মাণ ও সংস্কারের কথা ছিলো।

দেশের প্রায় ২০ হাজার বর্গকিলোমিটার এলাকা জুড়ে হাওর। হঠাৎ আগাম বন্যায়  ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এখানকার প্রায় ‍দুই কোটি লোক। প্রায় সাড়ে ছয় লাখ টন বোরো ধান বানে ভেসে গেছে।

হঠাৎ বন্যায় হাওরবাসী যখন সর্বশান্ত, তখন নতুন করে আবারও প্রকল্পটি বাস্তবায়নের উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। এখন প্রকল্পের ব্যয় বেড়ে প্রায় ৭০০ কোটি টাকা ও মেয়াদ বেড়ে দাঁড়াচ্ছে ২০২০ সাল পর্যন্ত।
 
পরিদর্শন শেষে আইএমইডি’র প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, অবহেলার কারণেই প্রকল্প এলাকা অষ্টগ্রাম, বাজিতপুর, জামালগঞ্জ, তাহিরপুর, ধরমপাশা, দিরাই, শাল্লা, জগন্নাথপুর, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ, বিশ্বম্ভরপুর, দোয়ারাবাজার, সিলেট সদর, কানাইঘাট, জকিগঞ্জ, গোলাপগঞ্জ, বিয়ানিবাজার, মৌলভীবাজার সদর, শ্রীমঙ্গল, নবীগঞ্জ, বানিয়াচং ও কোম্পানীগঞ্জ উপজেলায় বোরো ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে।

আইএমইডি সূত্র জানায়, প্রকল্পের আওতায় হাওর এলাকায় ১০টি লংবুম এক্সকেভেটর ও ১ হাজার ৯২০টি ডুবন্ত বাঁধ পুনর্খনন করা হয়নি।
 হয়নি একটি মাটিয়ান হাওর ক্রসবাঁধ, ৩৯টি পানি নিষ্কাশন অবকাঠামো, ২৯টি ড্রেনেজ আউটলেট, ৩৫টি গেটেড স্ট্রাকচার, ২২টি ইরিগেশন ইনলেট, ১৪৮টি পুরনো রেগুলেটর পুনর্বাসনের কাজও।

বার বার তাগিদ দিয়েও ৩২ কিলোমিটার কম্পার্টমেন্টাল ডাইক, ৩৩৩ কিলোমিটার অভ্যন্তরীণ খাল পুনর্খনন ও ৪০ কিলোমিটার সুরমা বৌলাই রিভার সিস্টেম খনন কাজ থেমে আছে।
 
পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ড. মোহাম্মদ আলী খান বাংলানউজকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কিছু বলতে পারবো না। আপনি পানি উন্নয়ন বোর্ডের কারো সঙ্গে কথা বলুন’।

প্রকল্প পরিচালক বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী (উত্তর-পূর্বাঞ্চল, সিলেট) মো. আব্দুল হাই বলেন, ‘আমি খুবই ব্যস্ত আছি। এ বিষয়ে এখন কোনো কথা বলা যাবে না’। এটা বলেই ফোন কেটে দেন আব্দুল হাই।  
 
পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের (জিইডি) সদস্য (সিনিয়র সচিব) অধ্যাপক ড. শামসুল আলম বাংলানিউজকে বলেন, ‘হাওরের জন্য প্রকল্পটি অনেক গুরুত্বপূর্ণ ছিলো। যথাসময়ে এটি বাস্তবায়ন করা হলে হাওরের ক্ষয়ক্ষতি অনেকাংশে কম হতে পারতো। প্রকল্পটি সঠিকভাবে বাস্তবায়িত না হওয়ার জন্য যারা দায়ী, তাদের খুঁজে বের করা দরকার। কেনই বা সঠিকভাবে বাস্তবায়িত হলো না, সবাইকে জবাবদিহিতার আওতায় আনতে হবে’।
 
বাংলাদেশ সময়: ০৫৩৮ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৭
এমআইএস/এএসআর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।