ফাঁকা টেবিলে মাথা রেখে তাই হঠাৎ ঘুমিয়ে পড়ে। আবার হাঁক-ডাকে চোখ কচলে ফের কাজে নামে কিশোর শাকিল।
মাসিক মজুরি মাত্র দুই হাজার টাকা। শাকিলের মতোই জনাপঞ্চাশেক শিশু-কিশোর অমানুষিক পরিশ্রম করছে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল হাইওয়ে রেস্টুরেন্ট ফুড ভিলেজে।
অভিজাত এ রেস্টুরেন্টে কয়েকদিন পর পরই খাবারের দাম বাড়ানো হলেও সামান্য মজুরি মেলে ওদের।
দিনাজপুর, বগুড়া, রাজশাহীসহ উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন রুটের দূরপাল্লার যাত্রীবাহী বাসগুলো ফুড ভিলেজের সামনে যাত্রাবিরতি করে। দিন-রাত সব সময় ভিড় থাকে এখানে। হাজার হাজার যাত্রীকে খাবার পরিবেশনে রেস্টুরেন্টে দু’শিফটে কাজ করেন চার শতাধিক শ্রমিক। তাদের বেতন মাত্র দেড় হাজার টাকা থেকে সাড়ে তিন হাজার টাকা। আট ঘণ্টা কাজ করানোর আইন থাকলেও রেস্টুরেন্টটিতে ১২ ঘণ্টা কাজ করতে হয় বলেও অভিযোগ কর্মীদের।
দোতলায় কর্মরত মমিন, সানোয়ার, মাসুদ বা রফিকদের মতো যুবক ওয়েটাররাও তিন বছর ধরে ১২ ঘণ্টা করে শ্রম দিলেও বেতন পান ৩ হাজার টাকার মধ্যে।
ওয়েটার রফিক ও মমিন বলেন, ‘প্রতিদিন এখানে দেড় থেকে দুই লাখ টাকার ব্যবসা হয়। আমাদের বেশিরভাগ সময় ওভারটাইমও করতে হয়। কিন্তু ডিউটির তুলনায় মজুরি কম’।
‘একটা কাজ নিয়ে পড়ে আছি, এটাই শান্তি। এ কাজটা না থাকলে তো পরিবারের সবার খাবারের ব্যবস্থাও হবে না’- বলেন সানোয়ার।
মধ্যবয়সী শ্রমিক গফুর বলেন, ‘মে দিবস বলে আমাদের কাজ তো আর বন্ধ থাকবে না। প্রতিদিনের মতোই ১২ ঘণ্টার ওপরে ডিউটি করতে হবে ঠিকই। কিন্তু মজুরি বাড়বে না’।
ফুড ভিলেজের ম্যানেজার মহব্বত আলী বাংলানিউজকে বলেন, ‘হোটেল শ্রমিকরা মজুরির বাইরে টিপসও পান। এর চেয়ে বেশি তাদের মজুরি দেওয়া সম্ভব নয়’।
বাংলাদেশ সময়: ১২৫৬ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৭
এমএএএম/আইএ/এএসআর