মহান মে দিবস সোমবার (১ মে) দুপুরেও খুলনা মহানগরীর ময়লাপোতা এলাকায় ওয়াসার উন্নয়ন কাজে এমন ঘামতে দেখা গেল শ্রমিকদের।
বিশ্বজুড়ে মে দিবসে কর্মবিরতি থাকলেও জীবিকার তাগিদে শ্রমিকদের আজও কাজ করতে হচ্ছে এখানে।
কয়েকজন শ্রমিকের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের কাজ দ্রুত শেষ করতেই মে দিবসে তাদের কাজ করতে হচ্ছে।
আম্বিয়া নামের এক নারী শ্রমিক বলেন, ‘আমাগো ছুটি নাই। পেটের দায়ে কাজ করতে আইছি। সারাদিন শ্রম দিয়ে মজুরি পাই। তা দিয়া পেট চলে। ’
আম্বিয়ার সঙ্গে কথা বলতে দেখে প্রকল্পের কাজে নিয়োজিত চীনের এক প্রকৌশলী এসে কাজ করার ছবি তুলতে নিষেধ করেন। এক পর্যায়ে শ্রমিক দিয়ে সংবাদ সংগ্রহ করতে বাধা দেন।
ওই প্রকৌশলীর নাম ও মে দিবসে শ্রমিকদের দিয়ে কাজ করানোর বিধান আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি কোনো কথা বলেননি। তার পাশে দাঁড়ানো এক শ্রমিক নেতা নাম না জানিয়েই বলেন, ‘স্যার বাংলা ইংরেজি কোনো ভাষা বোঝেন না। ’
তবে ময়লাপোতা মোড়ের এক ওষুধ-দোকানী বাংলানিউজকে জানান, ওই প্রকৌশলী বাংলা ও ইংরেজি সবই বলতে পারেন। সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব না দেওয়ার জন্যই না বোঝার ভান করে আছেন।
ওয়াসা সূত্রে জানা যায়, ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে মহানগরীতে পানির পাইপ ও সুয়ারেজ লাইন বসানোর কাজ শুরু করে ওয়াসা। মহানগরীতে সুপেয় পানির শতভাগ চাহিদা মেটাতে ‘ডিস্ট্রিবিউশন পাইপ নেটওয়ার্ক’ প্রকল্পটির কাজ চলছে। এতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২ হাজার ৫৫৮ কোটি ৩৩ লাখ ৭২ হাজার টাকা।
এর মধ্যে বাংলাদেশ সরকার ৭৫০ কোটি ৪২ লাখ ৯৮ হাজার টাকা, এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি) ৫২৩ কোটি ৭৭ লাখ ৯৬ হাজার টাকা ও জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সি (জাইকা) ১ হাজার ২৮৪ কোটি ১২ লাখ ৭৮ লাখ টাকা অর্থায়ন করছে। এডিবির অর্থায়নে তিনটি ইন্টারন্যাশনাল কন্ট্রাক্ট্র বিডি-আইসিবি প্যাকেজ ও ২টি ন্যাশনাল কন্ট্রাক্ট বিডি-এনসিবি প্যাকেজ ৭টি ডিস্ট্রিবিউশন রিজার্ভার এবং ১০টি ওভারহেড ট্যাংক নির্মাণের মাঠ পর্যায়ের কাজ চলছে। ২০১৮ সালের জুনে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে। বাস্তবায়ন হলে নগরীতে প্রতিদিন ১১০ লাখ লিটার পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে।
পাইপলাইনের কাজের জন্য খোঁড়াখুঁড়ির ফলে নগরবাসীকে জ্যামে আটকে থাকতে হচ্ছে ঘণ্টার পর ঘণ্টা। প্রায়ই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা।
মে দিবসে শ্রমিক দিয়ে কাজ করানোর বিধান আছে কিনা জানতে চাইলে খুলনা ওয়াসার উপ-ব্যবস্থাপনা পরিচালক ও প্রকল্প পরিচালক কামাল উদ্দীন আহমেদ বাংলানিউজকে বলেন, আমি সঠিক জানি না। তবে মঙ্গলবার (২ মে) স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদফতরের (এলজিইডি) ওই রোডের ল্যাবরেটরি টেস্ট হবে। বৃষ্টির কারণে একবার করলেও তা ফেল হয়েছে। তাই আবার বৃষ্টি হওয়ার আগে করতে হবে। তাই হয়তো ওই এলাকায় কাজ চলছে।
ওখানে যারা কাজ করাচ্ছে তারা আমাদের বিদেশি কন্ট্রাক্টরের লোক। চায়না জিও ইঞ্জিনিয়ারিং এ কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৫৫৬ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৭
এমআরএম/আরআর/এইচএ