ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

চা শ্রমিকের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম চলছে

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, ডিভিশনাল সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯৫৮ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৭
চা শ্রমিকের অধিকার সুপ্রতিষ্ঠিত করার সংগ্রাম চলছে চা পাতা ওজন দিচ্ছেন নারী চা-শ্রমিকরা, ছবি: দুর্জয় শুভ

মৌলভীবাজার: দু’টি পাতা একটি কুঁড়ির অন্তরালের মানুষেরা আজও জর্জরিত নানা সমস্যায়। সুপ্রতিষ্ঠিত হয়নি চা শ্রমিকদের বিভিন্ন অধিকার। কর্মস্থলের নানান সুযোগ-সুবিধা, উন্নত আবাসন, সুচিকিৎসা প্রভৃতির অভাব আজও পোড়ায় তাদের। আন্দোলন, আলোচনা, সমালোচনা কোনোকিছুই দাগ কাটে না অধিকাংশ মালিকের।

২০ দফা দাবি নিয়ে চা বাগানের মালিকপক্ষের সঙ্গে দীর্ঘদিন আন্দোলন করছে শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন (বাচাশ্রই)। মালিকপক্ষের সঙ্গে তারা দফায় দফায় আলোচনা অব্যাহত রেখেছে শ্রমিকদের নানান স্বার্থসংশ্লিষ্ট বিষয়ে।



এ ব্যাপারে বাংলানিউজকে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক এবং চা-শ্রমিক নেতা রামভজন কৈরি বলেন, চা শ্রমিকদের অধিকার এখনও সম্পূর্ণভাবে বাস্তবায়ন হয়নি। সর্বশেষ আমরা মালিকপক্ষের সঙ্গে যে চুক্তিপত্র করেছি তার অনেক কিছুই বাস্তবে দেখা যায়নি। তবে আমরা শ্রমিক অধিকারের ন্যায়সংগত দাবিগুলোতে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছি।

যেমন ধরা যাক, চা শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক গ্রুপ বিমা এবং গ্র্যাজুয়িটির কথা। শ্রম আইনেও এর বাস্তবায়নের কথা জোর দিয়ে উল্লেখ রয়েছে। কিন্তু আজও চা বাগানগুলো আমাদের চা শ্রমিকদের বাধ্যতামূলক গ্রুপ বিমা ও গ্র্যাজুয়িটি দিচ্ছে না।

অস্থায়ী শ্রমিকদের মজুরি স্থায়ী শ্রমিকদের ৮৫ টাকার সমান দিতে হবে। কিন্তু ফিনলে চা কোম্পানির চা বাগানসহ আরও দু-চারটা ব্যক্তিমালিকানাধীন চা বাগান আমাদের অস্থায়ী শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ৮৫ টাকা দিচ্ছে না। তবে অন্য চা কোম্পানিগুলো তা দিচ্ছে। মাটির ঘর তৈরি করলে মেরামত বাবদ তাৎক্ষণিক ৫ হাজার দেওয়ার কথা। কিন্তু শ্রীমঙ্গলের চা বাগানগুলো সেটাও ঠিকমতো দিচ্ছে না। দাবি এ শ্রমিক নেতার।
চা পাতা তুলছেন একজন নারী শ্রমিক।  ছবি: দুর্জয় শুভ
বর্তমানে চা শ্রমিকদের মজুরি, বোনাস, স্যানিটেশন, সুপেয় পানির ব্যবস্থাসহ ২০টি দাবি নিয়ে আমরা আলোচনা করে যাচ্ছি। অস্থায়ী শ্রমিকদের স্থায়ী শ্রমিকে পদোন্নতি দেওয়ার কথাও আমাদের দাবিতে রয়েছে। বিশেষ করে নারী চা শ্রমিকদের কর্মস্থলে অর্থাৎ, প্রতিটি সেকশনে প্রক্ষালনকক্ষ এবং শৌচাগার সুবিধার বিষয়টি আমাদের অন্যতম একটি দাবি। জানান রামভজন কৈরি।  

মজুরি প্রসঙ্গে এ শ্রমিক নেতা বলেন, আরও একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো- আমরা চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি ২৩০ টাকা করে নির্ধারণ করতে চাচ্ছি। বাগানভিত্তিক কোনো প্রকার শ্রেণীবৈষম্য যেন না থাকে। সব চা বাগানে একই মূল্য নির্ধারণের জোর দাবি আমাদের।

বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্র জানায়, সারাদেশে কর্মরত মোট চা শ্রমিক ১ লাখ ৪০ হাজার। এর মধ্যে ৫২ শতাংশ নারী চা শ্রমিক। ‘এ’, ‘বি’ এবং ‘সি’ ক্যাটাগরির চা বাগানগুলোতে যথাক্রমে চা শ্রমিকদের দৈনিক মজুরি হচ্ছে ৮৫, ৮৩ ও ৮২ টাকা।

বাংলাদেশে মোট চা বাগানের সংখ্যা ১৬৩টি। তবে ফাঁড়ি বাগানসহ (বড় বাগানকে দু’-তিনভাগে ভাগকরণের নাম) চা বাগানের সংখ্যা ২৪০টি বলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন সূত্র থেকে জানা যায়।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৫১ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৭
বিবিবি/এএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।