ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

আমার রাজনীতি কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের জন্য

সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৪২১ ঘণ্টা, মে ১, ২০১৭
আমার রাজনীতি কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের জন্য

ঢাকা: আপামর জনসাধারণের কল্যাণে কাজ করে যাচ্ছেন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এইটুকু ভরসা রাখবেন আমার রাজনীতি আপনাদের জন্য, বাংলাদেশের কৃষক-শ্রমিক-মেহনতি মানুষের জন্য। আমি আছি আপনাদের সাথে।

সোমবার (০১ মে) বিকেলে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে জাতীয় শ্রমিক দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী।

এবারের জাতীয় শ্রমিক দিবসের প্রতিপাদ্য ‘শ্রমিক মালিক গড়বো দেশ – এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘এইটুকু বলতে পারি আমার রাজনীতি জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে এবং জনগণের উন্নয়নের জন্য। এখানে আমাদের চেয়ে কারো দরদ বেশি উথলে উঠতে পারে আমি বিশ্বাস করি না। ’

বাংলাদেশের শ্রম ব্যবস্থা নিয়ে যারা বিদেশে নালিশ করেন তাদের সমালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা কথায় কথায় বিদেশের কাছে নালিশ করতে যান, তারা নিজের দেশের ক্ষতি করে, শ্রমিকের ক্ষতি করে, মানুষের ক্ষতি করে, মালিক ও শিল্পের ক্ষতি করে। এটা তারা কেন উপলব্ধি করে না সেটা আমি বুঝতে পারি না। ’

শেখ হাসিনা বলেন, ‘একটা শ্রেণি আছে যাদের কাজই হচ্ছে দেশে খবর নাই, বিদেশে মেসেজ পাঠাতে থাকে বাংলাদেশের বিরুদ্ধে। তাদের কাজটা কী তারা কি ভাড়া খাটে? কোন বিদেশি এজেন্সির ভাড়া খেটে এটা করেন কিনা সেটাই আমার সন্দেহ। ’

‘নইলে দেশে কী হলো তা দেশে বসে সমাধান না করে মুরব্বি খুঁজতে যাবেন পরদেশে। তারা এসে কী করবে খবরদারি করবে। এই খবরদারির পর ইন্ডাস্ট্রি বন্ধ হয়ে যায় তবে যারা কাজ করে খায় তাদের ভাগ্যে কি জুটবে। ’

শ্রমিকদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ‘এদের উস্কানিতে.. নিজেরা চাকরি হারালে তারা এসে কি খাবার দিয়ে যাবে? বিপদে পড়লে সাহায্য দেয়, আহত হলে চিকিৎসা দেয়। কিছু করে করে না। তাহলে তাদের স্বার্থ কী?’

শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি, বিভিন্ন দুর্ঘটনার শিকার শ্রমিক ও তাদের পরিবারকে সহায়তাসহ শ্রমিকদের কল্যাণে নেয়া সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী।

তিনি বলেন, ‘শ্রমিক ভাই বোনেরা এইটুকু বিশ্বাস করবেন আপনারা এই দেশের উন্নয়নের অংশীদার। অর্থনীতি যতবেশি উন্নত হবে ওই বেতন ভাতার জন্য আন্দোলন করা লাগবে না। আপনাদের বেতন ভাতা বাড়ানোর ব্যবস্থা আমরা করবো এবং করে যাচ্ছি। ’

শ্রমিক মালিক একটা হৃদ্যতাপূর্ণ সর্ম্পকের ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা বলেন, ‘একে অপরের পরিপূরক হবে তবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে। ’

মালিকদের উদ্দেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যারা শ্রম দিয়ে ইন্ডাস্ট্রি চালু রাখে, অর্থ উপার্জনের পথ করে দেয় তাদের ভালো-মন্দ দেখা, কর্মপরিবেশ উন্নত করা, নিরাপত্তা নিশ্চিত করা আপনাদের দায়িত্ব। অবশ্যই সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেবেন। ’

সততা, আন্তরিকতার সঙ্গে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘যে শিল্প থেকে আপনাদের জীবনজীবিকা নির্বাহ হয়, খেতে পারেন, সংসার চালাতে পারেন সেটা যেন ভালোভাবে চলে এবং সেটা যেন টিকে থাকে এই দায়িত্বটা আপনাদের।

অপ্রতিষ্ঠানিক শ্রমিকদের কল্যাণে পদক্ষেপ নিতে সরকারের পরিকল্পনার কথা জানান প্রধানমন্ত্রী।

আগামী দিনে অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বিকাশমান শিল্পের জন্য দক্ষ ম্যানেজার ও শ্রমিকসহ দক্ষ জনশক্তির তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করে শেখ হাসিনা।

বিদেশ যাওয়ার ক্ষেত্রে যথাযথ প্রক্রিয়া অবলম্বন ও সরকারের দেয়া সুযোগ সুবিধা কাজে লাগানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেউ যেন কোন দালালের খপ্পরে পড়ে না যান।

শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মুজিবুল হক চুন্নুর সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি মন্নুজান সুফিয়ান, বাংলাদেশ এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের (বিইএফ) সভাপতি সালাউদ্দিন কাশেম খান, বিজিএমইএ সভাপতি সিদ্দিকুর রহমান, শ্রমিক লীগের সভাপতি শুক্কুর মাহমুদ, আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বাংলাদেশের পরিচালক শ্রীনিবাস রেড্ডি। স্বাগত বক্তব্য রাখেন শ্রমসচিব মিকাইল শিপার।

বাংলাদেশ সময়: ২০১৯ ঘণ্টা, মে ০১, ২০১৭
এমইউএম/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।