তার সঙ্গে কাজ করেন বয়সে তরুণ মাজহারুল। জীবন জীবিকার তাগিদে মাত্র ৩শ’ টাকা পারিশ্রমিকে কঠিন পরিশ্রমের কাজ করে আসছেন তিনিও।
আজ কি দিবস বলতেই খানিকটা হেসে শাহজাহান বলেন- জানি না। তেমনি মাজহারুলকে জিজ্ঞেস করলেও উত্তর না-সূচক। তিনি বলেন, সকালে কাজে আসি, সন্ধ্যায় যাই। তিনশ’ টাকা রোজ পাই।
সিলেটের রিকাবিবাজার-সুবিদবাজার সড়কে নগর উন্নয়নে সড়ক প্রশস্ত করণের কাজে নিয়োজিত এই শ্রমিকরা। কেউ কেটে ফেলা বিশাল গাছের শেকড় তুলছেন। কেউবা ব্যস্ত ড্রেন থেকে মাটি কাটতে।
পাশেই পরিত্যাক্ত ড্রেনের ভাঙা ইট ট্রাকে তুলছিলেন তুলছিলেন নগরীর সদর উপজেলার এয়াপোর্ট এলাকার বাসিন্দা আনোয়ার ও শওকত। তারা বলেন, মে দিবসতো বুঝি-কিন্তু সন্ধ্যার সময় ভাত দিবো কে? সংসারের যোগান দিতে কাজ করতে হচ্ছে।
তাদের সঙ্গে কাজে যোগ দিয়েছেন এক নারীসহ সুনামগঞ্জের কয়েকজন বাসিন্দা। সম্প্রতি পানিতে ধান নেওয়ায় তারা এক আত্মীয়ের মাধ্যমে এসে সিলেট সিটি করপোরেশনের রাস্তার কাজে যোগ দেন বলে জানালেন আলকাস মিয়া।
আজ মহান মে দিবস। দিবসটিকে কেন্দ্র করে হোটেল-মোটেল বন্ধ রয়েছে। পরিবহণ শ্রমিকরা কর্ম বিরতি দিয়ে মে পালন করলেও জীবিকার তাগিদে মাজহারুল ও শাহজাহানদের কর্মঘণ্টার জন্য কোনো ছুটি নেই। কেননা, একদিন কাজ না আসলে বৌ-বাচ্চা থাকতে হবে অনাহারে।
প্রায় ৪কোটি টাকা ব্যয়ে মীরের ময়দান পয়েন্ট (পুলিশ লাইন্সের প্রধান ফটক) থেকে সুবিদবাজার ব্লু বার্ড স্কুল অভিমুখী রাস্তাটি ৩৫ ফুট থেকে ৫০ ফুটে উন্নীত হচ্ছে। নগরীর রিকাবিবাজার পয়েন্ট থেকে মেট্টোপলিট পুলিশ লাইন্স ফটক পর্যন্ত ৩২০ মিটার রাস্তা সম্প্রসারণ কাজ হয়েছে আগেই।
সড়কটিকে নান্দনিক করতে সড়ক ডিভাইডারে লাগানো হয়েছে গাছ, ফুলগাছ, বসানো হয়েছে বৈদ্যুতিক পুল ও নান্দনিক ডিজাইনে করা হয়েছে আইল্যান্ড প্রটেক্টর। এবার পুলিশ লাইন্স ফটক থেকে ব্লু-বার্ড স্কুলের সামনে পর্যন্ত ৮৯০ ফুট রাস্তার সম্প্রসারণ কাজ অব্যাহত রয়েছে। এরই মধ্যে রাস্তা সম্প্রসারণে পুলিশ লাইন্সের সীমানা প্রাচীর ভেঙে নতুন করে তৈরি করে দিয়েছে সিসিক কর্তৃপক্ষ। অথচ এই উন্নয়নের নেপথ্যের কারিগর শ্রমিকরা সব সময়ের জন্য অবহেলিত।
এ ব্যাপারে সিলেট সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা এনামুল হাবীব বাংলানিউজকে বলেন, মে দিবস হিসেবে শ্রমিকদের কর্মবিরতিতে রাখা যেতো। তবে বৃষ্টিপাত হলে কাজ করানো মুশকিল। তাই আজ কিছু শ্রমিকরা কাজ করছে।
বাংলাদেশ সময়: ২১৫৩ ঘণ্টা, মে-০১, ২০১৭
এনইউ/এমজেএফ