ঢাকা, মঙ্গলবার, ১২ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৫ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

ঢাকার যানজট কমাতে সংশোধিত পরিবহন পরিকল্পনা

মফিজুল সাদিক, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৩০ ঘণ্টা, মে ৫, ২০১৭
ঢাকার যানজট কমাতে সংশোধিত পরিবহন পরিকল্পনা ডিটিসিএ

ঢাকা: ঢাকা মহানগরী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার জনসংখ্যার আয়তন দিনকে দিন বেড়েই চলেছে। এই বাড়তি মানুষের চাপটাও গিয়ে পড়ছে যাত্রীবাহী যানবাহনের ওপর।

যাত্রী পরিবহনে দৈনিক ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকায় দৈনিক গড়ে তিন কোটি ট্রিপ বা লোক চলাচল তৈরি হচ্ছে। একজন লোক যতবার চলাচল করে ততটা ট্রিপ তৈরি হয়।

এ হিসেবেই দিনে তিন কোটি ট্রিপ। আগামীতে জনসংখ্যা যতো বাড়বে এই ট্রিপের সংখ্যাও ততো বাড়বে। একথা জানাচ্ছে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষ (ডিটিসিএ)।

ডিটিসিএ সূত্র জানায়, ঢাকা ও এর পাশ্ববর্তী এলাকার লোকসংখ্যা যে হারে বাড়ছে তাতে করে অদূর ভবিষ্যতে যানবাহনের ট্রিপ আরও বাড়বে। ঢাকার যানজটের জন্য অনেকাংশে পার্শ্ববর্তী জেলাগুলো দায়ী। বিশেষ করে নারায়ণগঞ্জ, মুন্সীগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, গাজীপুর এবং নরসিংদী।

রাজধানীর যানজট নিরসনে কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা(এসটিপি) অনুযায়ী, বাড়তি যাত্রীর চাপ সামলাতে ২০২৫ সালে ৪ কোটি এবং ২০৩৫ সালে ৫ কোটি ট্রিপ (বা লোক চলাচল) তৈরি হবে। এখন থেকেই সংশোধিত এসটিপি অনুযায়ী যানজট নিরসনে নতুন করে ভাবতে হবে। তা না হলে অদূর ভবিষ্যতে ঢাকার জনজীবন যানজটে স্থবির হয়ে পড়বে বলে জানায় ডিটিসিএ।

ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী এলাকাকে যানজট মুক্ত করতে এসটিপি অনুযায়ী প্রকল্প বাস্তবায়ন জরুরি বলে বনে মনে করে ডিটিসিএ। ডিটিসিএ-এর নির্বাহী পরিচালক কায়কোবাদ হোসেনের নেতৃত্বে এসটিপি পাস হয়।

কায়কোবাদ হোসেন বাংলানিউজকে বলেন, এখন ঢাকা ঘিরে তিন কোটি লোক চলাচল বা ট্রিপ তৈরি হয়। সামনের দিনগুলোতে ট্রিপের সংখ্যা আরও বাড়বে। এই যান-জটলা থেকে নগরবাসীকে মুক্ত করতে এসটিপি অনুযায়ী কাজ করতে হবে। এসটিপিতে পাঁচটি মেট্রোরেল নির্মাণের কথা রয়েছে। এগুলো হয়ে গেলে ১৭ শতাংশ ট্রিপ মেট্রোরেল কাভার করবে। আছে ৯০ কিলোমিটার সার্কুলার রেলপথ নির্মাণের কথাও।

এখন ঢাকার জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৮০ লাখ। ২০৩৫ সালে হবে ২ কোটি ৬৫ লাখ । তখন বাড়বে ট্রিপের সংখ্যাও। বাড়বে যানবাহনও। ঢাকা ও এর পার্শ্ববর্তী এলাকা মিলে প্রতিদিন গড়ে তিন কোটি ট্রিপ তৈরি হলেও সুষ্ঠুভাবে গন্তব্যে পৌঁছাতে পারেন না যাত্রীরা। অনেক সময় যানবাহনে ঝুঁকি নিয়ে বাদুড়ঝোলা হয়ে ও দাঁড়িয়ে গন্তব্যে পৌঁছাতে হয় তাদের।

এই বিশাল পরিবহন-চাহিদা মেটানোর জন্য সংশোধিত এসিটিপি-তে স্বল্প, মধ্য ও দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা গ্রহণের সুপারিশ করা হয়েছে। সংশোধিত এসটিপি’র আওতায় পাঁচটি ম্যাস র্যাপিড ট্রানজিট-এর বা এমআরটি(যা মেট্রোরেল নামে পরিচিত), দু’টি বাস র‌্যাপিড ট্রানজিট(বিআরটি), তিনটি রিং রোড, আটটি রেডিয়াল সড়ক, ছয়টি এক্সপ্রেসওয়ে, ২১টি ট্রান্সপোর্টেশন নির্মাণ এবং ট্রাফিক ম্যানেজমেন্ট, ট্রাফিক সেফটি ব্যবস্থা উন্নয়ন ও বাস পরিবহন সেক্টর পুর্নগঠনের পরিকল্পনা করা হয়েছে।

কৌশলগত পরিবহন পরিকল্পনা(এসটিপি) সংশোধন ও হালনাগাদের সঙ্গে সঙ্গে ২০০৫ সালে প্রণীত এসটিপি আরবান ট্রান্সপোর্ট পলিসি এবং ইনস্টিটিউশনাল ডেভলপমেন্ট রিপোর্টও হালানাগাদ করা হয়েছে।

ঢাকা মহানগরীর অভ্যন্তরীণ সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নয়ন, মহানগরীর প্রবেশ ও নির্গমন মহাসড়কের যানজট নিরসন ও আধুনিক গণপরিবহণ ব্যবস্থার প্রবর্তনের লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে ২০ বছর মেয়াদী এসটিপি গ্রহণ করা হয়। আর জাপান ইন্টারন্যাশনাল কো-অপারেশন এজেন্সির (জাইকা) সহায়তায় সংশোধিত এসটিপি প্রকল্পটি ২০১৪ সালের ২৭ অক্টোবর গ্রহণ করা হয়। প্রকল্পের আওতায় পরামর্শক প্রতিষ্ঠান এটি হালনাগাদ করে। সংশোধন করে ২০১৫-২০৩৫ মেয়াদে এটি বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়।

এর আলোকেই নতুন নতুন প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। এর বাইরে কোনো প্রকল্প গ্রহণ করা যাবে না। সংশোধিত এসটিপি পরিকল্পনা কমিশনে পাঠিয়েছে ডিটিসিএ। যাতে করে প্রয়োজন অনুযায়ী প্রকল্প গ্রহণ করে ঢাকা ও পার্শ্ববর্তী জেলাগুলোতে সুষ্ঠু ও যানজটমুক্ত নিরাপদ ও আধুনিক পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা সহজ হয়।

বাংলাদেশ সময়: ০৬৩০ ঘণ্টা, মে ০৫, ২০১৭
এমআইএস/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।