এক রাতে প্রতিবেশীদের কাছে ধরা পড়লে মৌসুমীকে রেখে পালিয়ে যান। এরপর থেকে প্রতিবেশীরা মৌসুমীকে নানা কথা বলে অপমান করতে শুরু করেন।
মঙ্গলবার (০২ মে) দুপুরে রাজধানীর হাজারীবাগ এলাকার মাদ্রাসা গলির ১০১/ডি ষড়কুঞ্জ নামে তিনতলা বাসার নিচতলায় এ ঘটনা ঘটে। দুপুরে কর্মস্থল থেকে বাসায় ফিরে সিলিং ফ্যানের সঙ্গে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে আত্মহত্যা করেন মৌসুমি আক্তার (২০)।
এ ঘটনায় হাজারীবাগ থানায় দায়ের করা আত্মহত্যায় প্ররোচনার মামলায় বাড়ির তত্ত্বাবধায়ক ও তার স্ত্রীসহ চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তবে মূল আসামি আজিম শেখ এখনও রয়েছেন ধরা-ছোঁয়ার বাইরে। মৌসুমীর বাবা ওমর ফারুক বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, আমার মেয়েকে মারা গেছে, তাকে তো আর ফিরে পাবো না। কিন্তু যারা আমার মেয়েকে ত্যক্ত-বিরক্ত করছে তাদের যেন শাস্তি হয়। যারা মৌসুমীকে আত্মহত্যা করতে বাধ্য করছে তাদের শাস্তি চাই। আমি আজিমের শাস্তি দাবি করছি।
মামলার তদন্ত সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা হাজারীবাগ থানার উপ পরিদর্শক (এসআই) আবু সায়েম বাংলানিউজকে জানান, এই ঘটনার তদন্ত চলছে। এরই মধ্যে চারজনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। আর মূল আসামি আজিম শেখকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, শিকদার গার্মেন্টর্সে চাকরি করতেন মৌসুমী। তার সহকর্মী লক্ষ্মী রানীর মাধ্যমে বেশ কয়েক মাস আগে আজিমের সঙ্গে পরিচয় থেকে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে মৌসুমীর। এই সম্পর্কের কারণেই বৌ-বাজারের বাসা ছেড়ে ষড়কুঞ্জের বাসায় পাশাপাশি রুমে ওঠেন তিনি।
এরপর ৩০ এপ্রিল রাতে তাদের অনৈতিক কর্মকাণ্ড দেখে ফেলেন প্রতিবেশীরা। এসময় আজিম পালিয়ে যান। আর স্থানীয়রা মৌসুমীকে ডেকে এনে অপমান অপদস্ত করেন। এরপর দেখা হলেই তাকে যাচ্ছে তাই বলে অপমান করতেন স্থানীয় কয়েকজন। এই অপমান সহ্য করতে না পেরে ২ মে আত্মহত্যা করেন মৌসুমী।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মৌসুমীর আগে একটি বিয়ে হয়েছিল। সে ঘরে তার একটি ছেলেও আছে। আগের স্বামীর সঙ্গে বনিবনা না হওয়ায় মামলা চলছে। তাই ছেলে বর্তমানে মৌসুমীর বাবা-মায়ের সঙ্গে ফরিদপুরে থাকে।
হাজারীবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) সুবাস কুমার পাল বাংলানিউজকে বলেন, প্রতিবেশীদের নানান কটূক্তি সহ্য করতে না পেয়ে মৌসুমী আত্মহত্যা করেছেন। এই ঘটনায় ওই বাসার তত্ত্বাবধায়ক বিষয়টি পুলিশকে না জানিয়ে পরিস্থিতি জটিল করে ফেলেন। মূল আসামিকে পালিয়ে যেতেও সহায়তা করেন তিনি।
বাংলাদেশ সময়: ০৮০৭ ঘণ্টা, মে ০৬, ২০১৭
এসজেএ/এসআই