দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের সঙ্গে রাজধানী ঢাকার যোগাযোগের অন্যতম প্রধান নৌপথ পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া ফেরিঘাট। বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি) ১৯৪০-১৯৪৫ সালের মধ্যে আরিচা-দৌলতদিয়া নৌপথে যানবাহন পারাপার শুরু করে।
পরবর্তীতে যানবাহন পারাপারে সময় বাঁচাতে ও নৌপথের দূরত্ব কমাতে ২০০১-২০০২ সালে আরিচা থেকে ফেরিঘাট পাটুরিয়ায় স্থানান্তর করা হয়।
সরকারি সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, এ নৌপথে সার্বক্ষণিক ১৯টি ফেরি চালু রাখার নির্দেশনা থাকলেও কখনোই ফেরির সংখ্যা ১৯ এর ঘরে পৌঁছায় না। সর্বোচ্চ ১৫টি পর্যন্ত হয়।
শনিবার (০৬ মে) রাতে পাটুরিয়া ঘাটে গিয়ে দেখা যায়, নৌপথে বর্তমানে ১২টি ফেরি দিয়ে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। একটি ফেরি বসা রয়েছে এক সপ্তাহ ধরে। ইঞ্জিন ওভার হোলিং করার জন্য বসিয়ে রাখা হয়েছে কে-টাইপ ফেরি কুমারীকে। শনিবার সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ৠাম মেরামতের জন্য বসে ছিল রো রো ফেরি আমানত শাহ। দুপুরের পর মোটরের কাজের জন্য ভাসমান কারখানায় আসে ইউলিটি ফেরি চন্দ্র মল্লিকা।
ওইদিন সন্ধ্যা নাগাদ আমানত শাহ ও চন্দ্র মল্লিকার মেরামত করা হলে কবে নাগাদ শেষ হবে কুমারীর কাজ তা নিশ্চিত করে বলতে পারেন নি বিআইডব্লিউটিসির ভাসমান কারখানা মধুমতির দায়িত্ব প্রাপ্ত কর্মকর্তারা। পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে বর্তমানে ৬টি রো রো, ৫টি ইউটিলিটি ও দু’টি কেটাইপ ফেরিতে যানবাহন পারাপার করা হচ্ছে। রো রো ফেরিগুলোর বয়স ২৫ বছরের বেশি হওয়ায় সবধরনের মেরামতের পরও ছয়মাসের বেশি একটানা চলতে পারেনা। যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয়। ছোটখাট ত্রুটিগুলো স্থানীয়ভাবে মেরামত করা গেলেও আন্ডার ওয়াটার কোপালসন সিস্টেমের কাজের জন্য পাঠানো হয় নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে। ঈদ সামনে রেখে কোপালসন সিস্টেম কাজের জন্য বীরশ্রেষ্ট হামিদুর রহমান, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান ও শাহ জালালকে নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়েছে।
আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার এ নৌপথে পর্যায়ক্রমে ৫টি ইউটিলিটি বরাদ্দ দিয়েছে। শুষ্ক মৌসুমে কম সময়ে নদী পাড়ি দিতে পারলেও বর্ষা মৌসুমে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে যায় এসব ফেরি। আসন্ন বর্ষা মৌসুমেও ঝড়-বৃষ্টি ও নদী উত্তাল বন্ধ থাকবে এসব ফেরি।
কে-টাইপ ফেরির প্রধান কাজ হচ্ছে দক্ষিণ-দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের মন্ত্রী-এমপি ও ভিআইপিদের গাড়ি পারাপার করা। এর বাইরে সাধারণ যানবাহন পারাপার করা হলেও ওঠানামায় ব্যয় হয় অন্য ফেরির তুলনায় তিনগুণ সময়। নৌপথের প্রতিকূল অবস্থা অতিক্রম করে বারোমাস যানবাহন পারাপারের ভরসা রো রো ফেরি। আর রো রো ফেরিগুলোর অবস্থা এতটাই দুর্বল যে প্রতিনিয়তই ত্রুটি দেখা দিচ্ছে।
এবিষয়ে বিআইডব্লিউটিসি ভাসমান কারখানা মধুমতির সহকারী প্রকৌশলী আব্দুল মান্নান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা চেষ্টা করে যাচ্ছি নৌপথের যানবাহন পারাপার স্বাভাবিক রাখতে। বহুদিনের পুরনো ফেরিগুলোতে মাঝে মধ্যে সমস্যা দেখা দেয়। সেগুলো স্থানীয়ভাবে মেরামত করা না গেলে নারায়ণগঞ্জ ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়। এতে সময় বেশি লাগে।
বাংলাদেশ সময়: ১৩০৮ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৭
এসই/জেডএস