এমন দৃশ্য ঘাটে হরহামেশা ঘটছে। লাগছে যানজট।
মূলত ফেরিঘাট নিয়ে ‘প্রকল্প বাণিজ্য’ করতেই ঘাট নষ্ট হওয়ার পর তা মেরামত করা হয় না বলে একটি সূত্র জানায়।
শনিবার রাতভর দেশের বৃহত্তর এই ফেরিঘাট দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় অবস্থান করে এসব বিষয়ে জানা ও দেখা যায়।
রাত ১১টা ৩০ মিনিটে ‘ফেরি এনায়েতপুরী’ দৌলতদিয়া থেকে গাড়ি উঠানো শুরু করে। ১২টি বাস জায়গা হয় ফেরিতে। আরও দু-একটি প্রাইভেট কার ৩টি ট্রাক উঠানো শেষ হয় ১১টা ৪৫ মিনিটে।
আরও পড়ুন: জরাজীর্ণ ফেরিতে পাটুরিয়া-দৌলতদিয়ায় যানবাহন পারাপার
বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন করপোরেশনের (বিআইডব্লিউটিসি) ৯টি রো-রো ফেরি, ছয়টি ইউটিলিটি ফেরি ও তিনটি কে টাইপ ফেরি এখানে চলাচল করে। দিনে সব ফেরি মিলে আড়াইশো ট্রিপ হয়। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ায় এ সংখ্যা কমে আসে। পার হয় দুই হাজার থেকে ২৫শ গাড়ি।
মাঝে মাঝে ফেরি ও ঘাটে সমস্যা দেখা দিলো ‘ওয়ান স্টপ সার্ভিস’ দেওয়ার মতো কোনো ব্যবস্থা নেই এখানে। প্রশাসনের একটি হেল্প ডেক্স দৌলতদিয়ায় দেখা গেলেও রাতে সেটি তালাবদ্ধ দেখা গেছে।
নিয়মিত ফেরি পার হন এমন কয়েকজন যাত্রী বাংলানিউজকে জানান, সামনে বর্ষা মৌসুমে দুইদিন পর পর ঘাট ভাঙবে। তখন দেখা যাবে ঘাটের সংখ্যা কমে গেছে, যানজট বেশি লাগবে। সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নিতে পারবে না বিআইডব্লিউটিসি।
নৌ-মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা জানান, গত ঈদে যখন ঘাট ভেঙে যায় তখন হাজার হাজার গাড়ি পারাপারের অপেক্ষায় তীরে দাঁড়িয়ে ছিল। ঘটনার কয়েকদিন পরও বিআইডব্লিউটিসি তা মেরামত করতে ব্যর্থ হয়। সড়কে যানবাহন চলাচল স্বাভাকি করতে সড়ক ও সেতু মন্ত্রণালয় থেকে নৌ পরিবহন মন্ত্রীকে ফোন করা হয়। তিনি দীর্ঘ প্রক্রিয়ার কথা জানান। শেষে প্রধানমন্ত্রীকেও বিষয়টি জানানো হয়। ওই সময় সড়কমন্ত্রী জোর তাগিদ দেন নৌমন্ত্রীকে। দুই মন্ত্রণালয়ের চেষ্টায় কয়েকদিন বিকল থাকার পর স্বাভাবিক হয় ফেরি। এবার রোজা বা ঈদে এমন হবে না তা কে বলতে পারে!
ফেরি এনায়েতপুরীরে মাস্টার শামসুল ইসলাম জানান, প্রবল স্রোতে ঘাট ভেঙে যাচ্ছে নিয়মিত। এখন যেখানে ঘাট, কাল সেখানে পল্টুন ছুটে যাবে স্রোতের কারণে। কিন্তু বিআইডব্লিউটিসি থেকে স্থায়ীভাবে ঘাট ও পল্টুন বসাতে পারে না। আর যেভাবে বসানো হয় তাতে বাস এবং ট্রাক উঠতে অনেক সময় নেয়। বাঁক নিতে গিয়ে উল্টে যাওয়ার মতো অবস্থা হয়। ঝুঁকি নিয়ে বড় বাস ও ট্রাকগুলো ফেরিতে ওঠে।
ফেরি পরিচালনার আরেকজন কর্তাব্যক্তি জানান, নৌ ও সড়ক দুই মন্ত্রণালয়ের এখানে দায় আছে। বেশিরভাগ ট্রাক অতিরিক্ত মালামাল নিয়ে ফেরি পার হয়। পরে মানিকগঞ্জে রাস্তায় স্থাপিত এক্সেল লোড কন্ট্রোল থেকে টাকা দিয়ে পার হয়ে যায়। কোনো ট্রাককে শাস্তি পেতে দেখা যায় না। এসব বন্ধ না করলে ঘাটে শৃঙ্খলা আসবে না।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৬ ঘন্টা, মে ০৭, ২০১৭
এসএ/আইএ