ঢাকা, বুধবার, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

জঙ্গি শামীমের তথ্যের ভিত্তিতে ঝিনাইদহে আস্তানার সন্ধান

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৮ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৭
জঙ্গি শামীমের তথ্যের ভিত্তিতে ঝিনাইদহে আস্তানার সন্ধান

ঢাকা: জঙ্গি শামীমের তথ্যের ভিত্তিতে ঝিনাইদহে দুই জঙ্গি আস্তানার সন্ধান পাওয়া গেছে বলে জানিয়েছেন কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম (সিটিটিসি) ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম।

রোববার (০৭ মে) ডিএমপি মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা জানান।

মনিরুল ইসলাম বলেন, গত ৫ মে ঝিনাইদহ থেকে জঙ্গি শামীমকে গ্রেফতার করা হয়।

গুলশান হামলায় অংশ নেওয়া নিবরাসসহ কয়েকজন হামলার আগে ঝিনাইদহে অবস্থান করে। সে সময় তাদেরকে ঝিনাইদহে থাকার ব্যবস্থা করেছিল শামীম।

শামীমকে প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, তার বাড়িতে মাটির নিচে বস্তায় অস্ত্র ও বিস্ফোরক লুকানো আছে। তার দেওয়া তথ্যানুযায়ী ঝিনাইদহ সদর এলাকায় বাড়িটিতে অভিযান চালানো হয় ও বাড়ির মাটির নিচ থেকে বস্তাটি উদ্ধার করা হয়। ধারণা করা হচ্ছে বস্তাটিতে বিস্ফোরক রয়েছে।

শামীমের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, মহেশপুরের আস্তানাটিতে অভিযান চালানো হয়। অভিযান শুরু হলে একজন ঘরের ভেতর থেকে সুইসাইডাল ভেস্টসহ বাইরে এসে বিস্ফোরণ ঘটায়। এর পর পাল্টা প্রতিরোধে পুলিশ সদস্যরা গুলি চালায়। সে পুলিশের গুলি অথবা আত্মঘাতী বিস্ফোরণে সেখানেই মারা যায়।

এ সময় সিটিটিসির এডিসি নাজমুল করিম ও ঝিনাইদহের এক সহকারী উপ পরিদর্শক (এএসআই) আহত হন। নাজমুলের হাত ভেঙেছে, তাকে চিকিৎসার জন্য ঢাকায় আনা হচ্ছে, আর ওই এএসআই মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়েছেন, তবে আশঙ্কামুক্ত।

তিনি জানান, এর পরপরই আরেক জঙ্গি ঘরের দরজায় এসে বিস্ফোরণ ঘটায়। সেও ওই বিস্ফোরণে মারা যায়।

মহেশপুরের বাড়ির মালিক জহির ও তার ছেলেকে জঙ্গি সংশ্লিষ্টতার অভিযোগে গ্রেফতার করে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।

তিনি আরো বলেন, আস্তানায় নিহত দুই জঙ্গি বহিরাগত বলে জানা গেছে। গত ২০ তারিখে ঝিনাইদহের পুরাহাটিতে জঙ্গি আব্দুল্লার বাড়িতে যে অভিযান চালিয়ে বিস্ফোরকের ল্যাবরেটরি পাওয়া যায়, এ দুইজন সেখানেই থাকতেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। সেই আস্তানায় অভিযানের খবর পেয়ে ওই বাড়ি থেকে পালিয়ে এসে জঙ্গি জহিরের বাড়িতে অবস্থান নেয় তারা।

অভিযান এখনো চলছে, বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট পথে রয়েছে। তারা পৌঁছালেই ভেতরে কি পরিমাণ বিস্ফোরক রয়েছে তা জানা যাবে।

এক প্রশ্নের জবাবে মনিরুল ইসলাম বলেন, বিভিন্ন কৌশলগত কারণে বর্ডার এলাকায় বর্তমানে জঙ্গিরা আস্তানা গাড়ছে। বিভিন্ন দেশ থেকে অস্ত্র ও বিস্ফোরক সরবরাহ সহজ এ কারণে হতে পারে। আবার বর্তমানে জঙ্গিদের বাসা ভাড়া পেতে সমস্যা হচ্ছে। সেজন্য সহযোগীদের থাকার জন্য ও নিরাপদ আস্তানা গড়ে তুলছে নিজেদের বাড়িতেই।

‘বর্তমানে নিজেদের আত্মরক্ষার্থে বা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সঙ্গে প্রতিরোধ করতে প্রতি আস্তানাতেই প্রচুর পরিমাণ বিস্ফোরক মজুদ রাখা হচ্ছে, এটা ট্রেন্ড হয়ে দাঁড়িয়েছে’ বলেন তিনি।

জঙ্গি শামীমের সঙ্গে নব্য জেএমবির সমন্বয়ক তামিম চৌধুরীর সহযোগী হিসেবে ঝিনাইদহে অবস্থান করতো উল্লেখ করে তিনি বলেন, সে পুরাতন জেএমবি থেকে নব্য জেএমবিতে যোগদান করে। ঝিনাইদহে আব্দুল্লাহ ছিল বড় নেতা। তার পরে হয়তো আরো দু’একজন আছে যাদেরকে গ্রেফতার করা সম্ভব হয়নি। তবে নেতৃত্ব শূন্যতার কারণে নিচের দিকের অনেক নেতাই গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বে চলে আসছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৭০৮ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৭
পিএম/জেডএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।