রোববার (০৭ মে) বিকেলে মুসা বিন শমসের শুল্ক গোয়েন্দায় হাজিরা দিয়ে চলে যাওয়ার পর সংবাদ সম্মেলনে তিনি একথা জানান।
মইনুল খান বলেন, প্রিন্স মুসার বিরুদ্ধে তিনটি মামলা হবে।
তিনি আরও বলেন, মুসাকে আমাদের তদন্ত কর্মকর্তারা জিজ্ঞাসাবাদ করেছেন। তিনি তার পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য দিয়েছেন এবং স্বাভাবিকভাবে কথা বলেছেন। আবার অনেক প্রশ্নের উত্তরও দিয়েছেন। এছাড়া আমাদের তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে যে তথ্য রয়েছে সে তথ্যে মুসা অপরাধী। তাই তার বিরুদ্ধে ৩টি মামলা দায়ের করা হবে।
শুধু তাই নয়, জব্দকৃত গাড়িটি মুসা ৫০ লাখ টাকা দিয়ে কিনেছেন। যেখানে ১৭ লাখ টাকা ট্যাক্স দেওয়া হয়েছে। গাড়িটিতে সরকারের ট্যাক্স ফাঁকি দেওয়া হয়েছে ২ কোটি ১৫ লাখ টাকা।
গাড়িটি ব্রিটিশ এক নাগরিক ফরিদ কবীর আমদানি করেছিলেন। মাত্র ৬ মাসের জন্য গাড়িটি বাংলাদেশে আনা হয়। কিন্তু ৬ মাস পেরিয়ে গেলেও গাড়িটি আর ফেরত দেওয়া হয়নি। অবশেষে গাড়িটি ৫০ লাখ টাকা বিক্রি করে বিদেশে চলে যান ফরিদ কবীর। তাই ফরিদ কবীর হবেন প্রধান আসামি। আর সহযোগী আসামি হিসেবে মুসা থাকবেন, সংবাদ সম্মেলনে বলেন মইনুল খান।
এর আগে বেলা ৩টার পর প্রিন্স মুসাকে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদফতর। প্রায় দুই ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ শেষে বিকেল ৫টার দিকে বের হন মুসা।
গত ২০ এপ্রিল (বৃহস্পতিবার) শুল্ক গোয়েন্দা অধিদপ্তরে হাজির হওয়ার কথা থাকলেও হাজির না হয়ে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিন মাসের সময় চেয়ে আবেদন করেন। এ সময় এক চিঠিতে মুসা জানান, ডায়াবেটিসসহ বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত তিনি। এমনকি তার বাকশক্তিও লোপ পেয়েছে। এজন্য সশরীরে উপস্থিত হয়ে বক্তব্য দেওয়ার জন্য তিন মাসের সময় চাওয়া হয়েছে।
আবেদনের সঙ্গে তিনি স্নায়ুরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কাজী দ্বীন মোহাম্মদ ও প্রফেসর এমএ আজহারের কাছ থেকে নেওয়া শারীরিক অসুস্থতার সনদও যুক্ত করেন।
পরবর্তীতে শুল্ক ফাঁকি ও অর্থপাচারের বিষয়ে জবানবন্দি দিতে ২২ এপ্রিল (শনিবার) ‘কথিত’ ধনকুবের প্রিন্স মুসা বিন শমসেরকে দুই সপ্তাহ সময় দেয় শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর। এর আগে অসুস্থতার কারণ দেখিয়ে তিন মাসের সময় চাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে দুই সপ্তাহের সময় দেওয়া হয়েছে বলে তখন বাংলানিউজকে জানান শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মইনুল খান।
জালিয়াতির মাধ্যমে শুল্ক ফাঁকি দিয়ে আনা গাড়ি রেঞ্জ রোভার ব্যবহার করায় প্রিন্স মুসা বিন শমসেরকে ২৩ মার্চ (বৃহস্পতিবার) তলব করে শুল্ক গোয়েন্দা অধিদফতর। ২০ এপ্রিল বিকেল ৩টায় শুল্ক গোয়েন্দা সদর দফতরে তাকে হাজির হতে বলা হয়। একই সঙ্গে ভোলা বিআরটিএতে নিবন্ধন ভোলা ঘ ১১-০০৩৫ গাড়ি গ্রহণকারী ফারুকুজ্জামান চৌধুরীকেও তলব করা হয়।
মুসা বিন শমসেরকে শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরে জিজ্ঞাসাবাদ করেন শুল্ক গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের যুগ্ম পরিচালক শফিউর রহমান, উপ-পরিচালক এইচ এম শরিফুল হাসান, সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ জাকারিয়া ও সহকারী রাজস্ব কর্মকর্তা ইয়াকুত জাহিদ।
‘আমি কোনো ট্যাক্স ফাঁকি দেইনি’
প্রিন্স মুসা’র জিজ্ঞাসাবাদ চলছে
নারী দেহরক্ষী নিয়ে শুল্ক গোয়েন্দায় প্রিন্স মুসা
বাংলাদেশ সময়: ১৮৫০ ঘণ্টা, মে ০৭,২০১৭
এসজে/জেডএস