ঢাকা, বুধবার, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৬ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

সাইবার ক্রাইম রোধে পিছিয়ে দুদক

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৪৩৫ ঘণ্টা, মে ৮, ২০১৭
সাইবার ক্রাইম রোধে পিছিয়ে দুদক দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল। ছবি: দেলোয়ার হোসেন বাদল

ঢাকা: সাইবার ক্রাইম রোধে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পিছিয়ে রয়েছে বলে মনে করেন প্রতিষ্ঠানটির সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল। তবে দুর্নীতি বন্ধে দুদকের চেষ্টার কোনো কমতি নেই বলেও জানিয়েছেন তিনি। এও বলেছেন, চাইলেই দুর্নীতি বন্ধ করা দুদকের একার পক্ষে সম্ভব নয়। এজন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।

বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শেখ জাহিদুজ্জামানের সঙ্গে তার একান্ত আলাপচারিতার দ্বিতীয় পর্ব পড়ুন....
 
বাংলানিউজ: দুদককে আরও বেশি শক্তিশালী করতে কি প্রয়োজন?
 
আবু মো. মোস্তফা কামাল:  প্রথমত কর্মকর্তাদের দক্ষতার উন্নয়ন করতে হবে। এজন্য কমিশন বর্তমানে বিভিন্ন প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছে।

তবে প্রযুক্তির প্রয়োজন আছে। কেননা যারা অপরাধ করেন তারা প্রযুক্তির সহায়তা নেন। এখানে দুদক অনেকটা পিছিয়ে আছে। বিশেষ করে সাইবার ক্রাইম রোধে পিছিয়ে আছে দুদক। এজন্য আমাদের একটি শক্তিশালী আইটি ইউনিট গড়তে হবে। এ বিষয়ে সরকারের কাছে কমিশনের পক্ষ থেকে একটি অর্গানোগ্রাম পাঠানো হয়েছে। দুদককে আরও গতিশীল করতে নিজস্ব একটি সশস্ত্র ইউনিট প্রয়োজন। এটি নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু হয়েছে। এর পাশাপাশি নিজস্ব একটি গোয়েন্দা ইউনিট প্রয়োজন।
 

শতভাগ দুর্নীতিমুক্ত নয় দুদক
বাংলানিউজ: দুদকে জনবল কিংবা বাজেটের ঘাটতি আছে কি?
 
আবু মো. মোস্তফা কামাল: দুদকের কাজকে আরও বেশী বেগবান করতে বাজেটের ঘাটতি আছে। এছাড়া সশস্ত্র ইউনিট, গোয়েন্দা ইউনিট ও আইটি সেক্টর হলে তাদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন রয়েছে। অর্থ ছাড়া কোনোভাবেই এসব কাজ করা সম্ভব নয়। সুতরাং দুদকের কাজকে আরও বেশি বেগবান ও দুর্নীতি রোধে সরকারের বাজেট বাড়ানো প্রয়োজন। দুদক সচিব আবু মো. মোস্তফা কামাল।  ছবি: বাদল
 
বাংলানিউজ : কোন সেক্টর সবচেয়ে বেশী দুর্নীতিগ্রস্ত?
 
আবু মো. মোস্তফা কামাল: এটি নিয়ে দুদক কোনো ধরনের স্ট্যাডি করেনি। তবে সবচেয়ে বেশি নালিশ আসে ব্যাংক, ভূমি, ত্রাণ, স্বাস্থ্য ও শিক্ষা থেকে। যে বিষয়গুলোর উপর সাধারণ মানুষের জীবিকা জড়িত সেগুলো নিয়েই বেশি নালিশ আছে। তবে যে অভিযোগগুলো আসে কমিশন সেগুলো খতিয়ে দেখে। কিন্তু সম্প্রতিকালে দুর্নীতির অভিযোগে সবচেয়ে বেশি আটক হয়েছেন ব্যাংক কর্মকর্তারা। তাই  দুর্নীতিবাজ যতোই শক্তিশালী হোক রক্ষা পাবে না। দুদক তাদের শাস্তির মুখোমুখি করবেই।  
 
বাংলানিউজ: মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম’র নামে অর্থ পাচার হওয়ার বিষয়টিকে দুদক কিভাবে দেখছে?
 
আবু মো. মোস্তফা কামাল:  মালয়েশিয়াতে সেকেন্ড হোম এর নামে অর্থ পাচার হচ্ছে এমন তথ্য কমিশনে আছে। কয়েকজনের নামের তালিকাও কমিশনে আছে। এজন্য কমিশন একটি টিম গঠন করেছে। টিমটি মানি লন্ডারিং রোধে অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। এফবিআই অর্থ পাচার রোধে দুদককে সহায়তা দেবে। ইতোমধ্যে টিমটি বিভিন্ন জায়গায় তথ্য চেয়ে চিঠি দিয়েছে। সেগুলোর উত্তর পাওয়া গেলে কমিশন ব্যবস্থা নেবে।
 
বাংলানিউজ: অধিকাংশ মামলায় দুদক কেন হেরে যায়?
 
আবু মো. মোস্তফা কামাল: প্রথমত তদন্তের গাফিলতির কারণে মামলায় হেরে যাচ্ছে দুদক।   সময়মতো আদালতে সাক্ষী হাজির না করা, আদালতে হাজির হলেও তথ্য উপাত্ত সঠিকভাবে উপস্থাপন করতে না পারাও মামলায় হারার বড় কারণ। আবার নিজেদের কৌশ‍ুলীদের দুর্বলতার কারণেও দুদক হেরে যায়। সাধারণত মধ্যমানের আইনজীবীদের নিয়োগ দেয় দুদক। কিন্তু দুর্নীতিবাজরা উচ্চমানের আইনজীবী নিয়োগ দেয়। যেখানে দুদকের আইনজীবীরা কোণঠাসা হয়ে পড়েন। ফলে মামলায় দুদক হেরে যায়। এসব একারণেই দুদক প্রায় অর্ধেক মামলায় হেরে যাচ্ছে।
 
বাংলাদেশ সময়: ১০২০ ঘণ্টা, মে ৭, ২০১৭
এসজে/জেডএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।