সোমবার (০৮ মে) সকালে ভস্মীভূত ঘরের উঠানে বসতঘর পুড়ে অসহায় বস্তিবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায় তাদের দুঃখ-দুর্দশার কথা। এসময় দেখা যায় নারী, শিশু, বৃদ্ধ, যুবক, শিক্ষার্থী সবাই পোড়া ঘরের পাশে আহাজারি করছেন।
তাদের একজন মো. শাহ আলম শেখ। তিনি বলেন, আমাগে ঘর পুড়ে গেছে, কপালও পুড়ে গেছে। কেউ কোনো সাহায্য করেনি। খোলা আকাশের নিচে রাইত কাটাইছি ৩৫টি ঘরের ২শ’ মানুষ। ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আমাগে আবু হানিফিয়া মাদরাসায় থাকার জন্যি কয়ছিলো, কিন্তু মাদরাসা বলে কেউ যায়নি।
তিনি বলেন, শুনেছি রাতে মেয়র আইছিলো, কিন্তু দেহা অয় নাই।
একই বস্তির ঘর পোড়া কুলসুম বলেন, পরনের কাপড়টা ছাড়া আর কিছুই রক্ষা করতে পারি নাই। সবি পুড়ে গেছে।
পুড়ে যাওয়া ঘরের সামনে মাথায় হাত দিয়ে বসে কুলসুমের মতো দীর্ঘশ্বাস ছাড়ছেন অনেকেই। পরিবার নিয়ে কোথায় গিয়ে মাথা গুঁজবেন তা ভাবিয়ে তুলছে তাদের। কারও কাছ থেকে কোনো সাহায্যের আশ্বাস না পেয়ে হতাশায় ভুগছেন তারা।
সারা রাত খোলা আকাশের নিচে কাটিয়ে সকাল হতে না হতেই হতদরিদ্র এসব বস্তিবাসী ছাইয়ের মধ্যেও কিছু পাওয়া যায় কিনা সে আশায় খোঁজাখুজি শুরু করেন। সহায়-সম্বল হারিয়ে মানুষগুলো এখন সাহায্যের আশায় পথ চেয়ে বসে আছেন।
রোববার (০৭ মে) রাত ১০টায় ওই বস্তিতে আগুন লাগলে প্রায় ১ ঘণ্টা ফায়ার সার্ভিসের ১০টি ইউনিট কাজ করে রাত ১১টায় আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ১২টি মাছের ঘর ও দোকানসহ প্রায় ছোট-বড় ৩৮টি বস্তিঘর ভস্মীভূত হয়ে যায়। এ সময় ফায়ার সার্ভিসের এক কর্মী আহত হন।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, নতুন বাজার চর সংলগ্ন বস্তির নিজাম গলি থেকে আগুনের সূত্রপাত। মুহূর্তের মধ্যে তা পাশ্ববর্তী ইয়াকুব গলিতেও ছড়িয়ে পড়ে। আগুনে ওয়াপদা সড়কের বিপ্লব ফিশ, শিমুল ফিশ, জুবায়ের ফিশ, আলী ফিশ, শাজাহান ফিশসহ কয়েকটি মাছের ঘর ও দোকান ঘর পুড়ে যায়।
চুলা থেকে অথবা বৈদ্যুতিক শর্ট সার্কিট থেকে আগুনের সূত্রপাত বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করছেন স্থানীয়রা।
অগ্নিকাণ্ডে ১০ লক্ষাধিক টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানান ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স খুলনার উপ-পরিচালক এবিএম ফেরদৌস।
বাংলাদেশ সময়: ১২৩৫ ঘণ্টা, মে ০৮, ২০১৭
এমআরএম/জেডএস