ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৩ ফাল্গুন ১৪৩১, ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫, ২৭ শাবান ১৪৪৬

জাতীয়

তিন বছরের আগে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন অসম্ভব

শেখ জাহিদুজ্জামান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১০৪৩ ঘণ্টা, মে ৯, ২০১৭
তিন বছরের আগে ভ্যাট আইন বাস্তবায়ন অসম্ভব বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ। ছবি: দীপু মালাকার-বাংলানিউজ

নতুন ভ্যাট আইনে হয়রানি যেমন বন্ধ হবে তেমনিভাবে ভ্যাট ফাঁকিও বন্ধ হবে। ভ্যাট আইনে যে সমস্যাগুলো আছে নতুন আইনে সেগুলো ঝেড়ে ফেলা হচ্ছে। আর নতুন ভ্যাট আইনটি বাস্তবায়নে সময় লাগবে প্রায় তিন বছর।

এজন্য ব্যবসায়ীদের চাহিদা অনুযায়ী নতুন ভ্যাট আইনটি আরও সংশোধন করা প্রয়োজন। বাংলানিউজের সঙ্গে একান্ত আলাপচারিতায় একথা বলেছেন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।

সাক্ষাৎকারটি নিয়েছেন বাংলানিউজের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট শেখ জাহিদুজ্জামান

বাংলানিউজ: নতুন ভ্যাট আইন সম্পর্কে আপনার অভিমত কি?

আবদুল মাতলুব আহমাদ: বড় ব্যবসায়ীদের জন্য নতুন ভ্যাট আইনটি সমস্যা না হলেও ছোট ব্যবসায়ীদের জন্য সমস্যা। নতুন ভ্যাট আইন বাস্তবায়নের আগে সবার ট্রেনিংয়ের প্রয়োজন। কিন্তু কয়েকজনকে ট্রেনিং করিয়ে একটি আইন বাস্তবায়ন করা যায় না। অপরদিকে এনবিআর,ব্যবসায়ী ও জনগণ সবাই কিন্তু ভ্যাট ফাঁকি দেয়।  নতুন আইনে এই ফাঁকি বন্ধ হবে। এছাড়া ৮ লাখের বেশি নিবন্ধনকারীর মধ্যে মাত্র ৩২ হাজার নিবন্ধনকারী ভ্যাট দেন।  কিন্তু নতুন আইনে সবাইকে ভ্যাট দিতে হবে।   সুতরাং এটাও একটা ভালো দিক। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।  ছবি: দীপু মালাকার-বাংলানিউজবাংলানিউজ: নতুন ভ্যাট আইন ব্যবসায়ীবান্ধব কি?

আবদুল মাতলুব আহমাদ: নতুন ভ্যাট আইনটি অবশ্যই ব্যবসায়ীবান্ধব। নতুন আইনটির মধ্যে অনেক ভালো দিক আছে। যেমন, ভ্যাট রেয়াত নেওয়া, ভ্যাট অনলাইনে দেওয়া। ফলে এনবিআর’র সাথে আর কারও সাক্ষাৎ হবে না। আর সেটা না হলেই তো হয়রানি বন্ধ হয়ে যাবে। তাই অবশ্যই এটি ব্যবসায়ীবান্ধব। তবে নতুন ভ্যাট আইন যেমন ব্যবসাবান্ধব, তেমনিভাবে যারা এখনো ভ্যাট দেওয়ার সামর্থ্য রাখে না তাদের জন্য এই ভ্যাট আইনটি নয়। এছাড়া জুলাইয়ের আগে সবাই অনলাইনে রেজিস্ট্রেশন না করলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া হবে ---এমনটাও কখনো গ্রহণযোগ্য নয়।

বাংলানিউজ: এনবিআর যদি সেবামূল্যের উপর ভ্যাট না কমায় সেক্ষেত্রে কি করবেন?

আবদুল মাতলুব আহমাদ: ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে এনবিআর’কে সেবামূল্যের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাটের পরিবর্তে ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপের একটি প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। সেই প্রস্তাব যদি এনবিআর মেনে না নেয় তাহলে ব্যবসায়ীদের কিছুই করার নেই। কেননা এটা সরকারের সিদ্ধান্ত। অর্থাৎ ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপ করা হলে সবার জন্য ভালো হবে। এরপর আস্তে আস্তে সেবামূল্যের উপর ভ্যাট বাড়ালে কারও কোনো সমস্যা হবে না। কেননা এখানে ডাক্তার, আইনজীবী,শিক্ষক সবাই আছে। তাই সেবামূল্যের উপর ১৫ শতাংশ ভ্যাট আরোপ অযৌক্তিক। এজন্য ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সেবামূল্যের উপর ৭ শতাংশ ভ্যাট আরোপের প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।

বাংলানিউজ: নতুন ভ্যাট আইন  বাস্তবায়ন হলে লোকাল শিল্প হুমকির মুখে পড়বে বলে মনে করেন?

আবদুল মাতলুব আহমাদ: একথা একদমই ঠিক নয়। আমরা সবসময় চেষ্টা করছি লোকাল শিল্পকে বাঁচিয়ে সামনের দিকে এগিয়ে যেতে। যারা এই ধরনের কথা বলছেন তাদেরকে ভ্যাট আইন সম্পর্কে আরও জানতে হবে। নতুন ভ্যাট আইনে যেখানে সাপ্লিমেন্টারি ডিউটি যাবে সেখানে নতুন কোনো পদ্ধতি নেওয়া হচ্ছে। অর্থাৎ কোনো না কোনো ডিউটি দিয়ে রাখা হবে যাতে লোকাল শিল্প ক্ষতির সম্মুখীন না হয়। দেশীয় শিল্পকে হুমকির সম্মুখীন করে আমরা কোনো আইন চাই না। এবং  সেটা হচ্ছেও না। বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সভাপতি আবদুল মাতলুব আহমাদ।  ছবি: দীপু মালাকার-বাংলানিউজবাংলানিউজ: এনবিআর বারবার রাজস্ব আহরণের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে কেন ব্যর্থ হচ্ছে?

আবদুল মাতলুব আহমাদ: প্রতিবছরই বাজেটের আকার বাড়ছে। যেখানে এনবিআর-এর টার্গেট বাড়া ছাড়া কমছে না। সেজন্য এনবিআর তাদের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনে হিমশিম খাচ্ছে।

অপরদিকে অর্থমন্ত্রীর সিস্টেম হচ্ছে একটু বেশি টার্গেট দেওয়া। কিন্তু শেষের দিকে এসে আবার বাজেটের আকার কমানো হচ্ছে। অর্থাৎ কমানো বাজেট সফল হচ্ছে। তাই এনবিআর ভালো কাজ করছে এতে কোনো সন্দেহ নেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৩৫ ঘণ্টা, মে ০৯, ২০১৭
এসজে/জেএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।