তবে ভবনটি তৈরি করা হয়েছিল শিক্ষা ও জ্ঞানের পরিপূর্ণ চর্চা ও বিকাশের স্থল পাথরঘাটা পাবলিক লাইব্রেরি হিসেবে। সে ভবনেই এখন চলছে পৌরসভার কার্যক্রম আর স্টিলের আলমারিতে বইয়ের বদলে শোভা পাচ্ছে অতিথি আপ্যায়নের কাপ-পিরিচ।
১৯৭৯ সালের দিকে পাথরঘাটা উপজেলা পাবলিক লাইব্রেরির ভবনটি নির্মিত হয়। একতলা এ ভবনে একটি মিলনায়তনও রয়েছে। তবে বাস্তবে কখনোই পাবলিক লাইব্রেরি বা গণগ্রন্থাগার হিসেবে রুপ নেয়নি।
ভবনটি নির্মাণের পর কয়েক বছর স্থানীয় শিল্পী ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা এখানে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান করেন এবং জাতীয় দিবসের বিভিন্ন অনুষ্ঠান হতো। পরবর্তীতে কিছুদিন ওই ভবনে তৎকালীন পাথরঘাটা থানা হাকিম আদালতের কার্যক্রম পরিচালিত হয়।
১৯৯১ সালে পাথরঘাটা পৌরসভা গঠনের পর থেকেই পৌরসভার কার্যক্রম এখানে শুরু হয়। আজ পর্যন্ত ওই ভবনেই পৌরসভার সকল দাফতরিক কার্যক্রম চলে আসছে।
সরেজমিনে দেখা গেছে, উপজেলা গণগ্রন্থাগারের ইতিহাসের সাক্ষী হিসেবে দাঁড়িয়ে আছে মাত্র ছোট একটি স্টিলের আলমারি। আলমারিটিতে সাদা রং দিয়ে লেখা পাথরঘাটা পাবলিক লাইব্রেরি, তাও অস্পষ্ট। ওই ভবনের মিলনায়তনসহ খালি জায়গায় পৌর কর্তৃপক্ষ ১০টি কক্ষ তৈরি করে চালাচ্ছে পৌরসভার দাফতরিক কার্যক্রম।
ভবনের আর কোথাও গ্রন্থাগারের কোনো চিহ্ন দেখা যায়নি।
২৩ বছরের যুবক মো. জসিম উদ্দিন বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি জানিই না, পাথরঘাটায় কোনো দিন পাবলিক লাইব্রেরি আছে বা ছিল। আপনার কাছেই শুনলাম এই পাবলিক লাইব্রেরির কথা’।
পাথরঘাটা পৌরসভার সংরক্ষিত কাউন্সিলর নারীনেত্রী মুনিরা ইয়াসমিন খুশি বলেন, ‘এখানে কোনোদিনই গ্রন্থাগার চলতে দেখিনি। তবে, শুনেছি, এ ভবনটি লাইব্রেরির জন্য নির্মাণ করা হয়েছিল’।
প্রান্তিক জনপদের চারণ কবি ইদ্রিস আলী খান বাংলানিউজকে বলেন, ‘স্থানীয় শিল্পীদের উদ্যোগে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান হয়েছে মাত্র দুই বছর। এরপর থানা বিচারিক আদালত বসতেন। পরে পৌরসভার দফতরে পরিণত হয়। পাবলিক লাইব্রেরি সত্যিকার অর্থে পাবলিকের কোনো কাজেই আসেনি। পাঠক আসাতো দূরের কথা, বই বা পত্রিকা- কিছুই দেখতে পাইনি এ পাবলিক লাইব্রেরিতে’।
পাথরঘাটা পৌরসভার মেয়র আনোয়ার হোসেন আকন বাংলানিউজকে বলেন, ‘কখনোই এ ভবন গ্রন্থাগার হিসেবে ব্যবহার হতে দেখিনি। নামেই ছিল পাবলিক লাইব্রেরি’।
বাংলাদেশ সময়: ০৫১৭ ঘণ্টা, মে ১৩, ২০১৭
এএসআর