‘স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের হাতে হাতে এখন মোবাইল ফোন। সবাই ইন্টারনেট ব্যবহার করেন।
লাইব্রেরি বিমুখ পাঠকদের বিষয়ে এসব কথা বলেন গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বীর মুক্তিযোদ্ধা খলিলুর রহমান। সরেজমিনে লাইব্রেরিটিতে গেলে খলিলুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, Ôএটা ডিজিটাল বাংলাদেশ। কিছুদিন আগেও আজকের খবর দৈনিকে পড়তে হতো পরদিন। কিন্তু এখন আর সেটা নেই। অনলাইন নিউজপোর্টালগুলো যখনকার খবর তখনই দিচ্ছে পাঠকদের। বেশিরভাগ দৈনিক পত্রিকাও অনলাইনে এসেছে। এসব কারণে মানুষ অনলাইনে ঝুঁকে পড়েছেন। আর দিন দিন তারা লাইব্রেরি বিমুখ হচ্ছেন’।
গাইবান্ধা পাবলিক লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবে প্রায় ২৫ লাখ টাকা মূল্যের বিভিন্ন ধরনের ৯/১০ হাজার বই রয়েছে। চারটি দৈনিক পত্রিকাও রাখা হয়। অথচ এখানে বইয়ের পাঠক দিনে মাত্র ১০/১২ জন। দৈনিক পত্রিকা পড়তে আসেন আরও কম, ৫/৬ জন।
খলিলুর রহমান আরো বলেন, ২/৩ বছর আগেও ১০/১২টি জাতীয় দৈনিক পত্রিকা রাখা হতো লাইব্রেরিতে। তখন পাঠকও ছিলো প্রচুর। লাইনে দাঁড়িয়ে পত্রিকা পড়তেন মানুষ। এখন তিনটি জাতীয় ও একটি স্থানীয় দৈনিক মিলে মাত্র চারটি পত্রিকা লাইব্রেরিতে কেনা হয়। কিন্তু চারটি দৈনিক পত্রিকার পাঠক মাত্র ৫/৬ জন।
লাইব্রেরিয়ান রফিকুল হক চৌধুরী জানান, জেলার এ লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবটির বয়স ১১০ বছর। লাইব্রেরিটিতে ২/৩ বছর আগেও পাঠকরা লাইনে দাঁড়িয়ে বই পড়তেন। তখন বসার জায়গা ও চেয়ার টেবিলও ছিলো কম। এখন বসার জায়গা ও চেয়ার-টেবিল অনেক। কিন্তু দিন দিন লাইব্রেরি বিমুখ হচ্ছেন পাঠকরা। এভাবে আর কিছুদিন চললে লাইব্রেরিতে পাঠক সংখ্যা শূন্যের কোঠায় গিয়ে দাঁড়াবে।
২০০৩ সাল পর্যন্ত লাইব্রেরিটিতে জাতীয় গ্রন্থকেন্দ্র থেকে বার্ষিক ১৫ হাজার টাকা ও ১৫ হাজার টাকার বই আসতো। কিন্তু সেটি ২০০৪ সালে বন্ধ হয়ে যায়। সেই থেকে এসকেএস, একতা, গণ উন্নয়ন ও নাহিদ ফাউন্ডেশনসহ বিভিন্ন এনজিও’র সহযোগিতায় চলছে এ লাইব্রেরি অ্যান্ড ক্লাবটি।
সপ্তাহে শুক্রবার ছাড়া বিকেল ৪টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত খোলা থাকে লাইব্রেরিটি। তিনজন কর্মকর্তা-কর্মচারী সার্বক্ষণিক দায়িত্বে রয়েছেন।
বাংলাদেশ সময়: ০৯৩৭ ঘণ্টা, মে ২১, ২০১৭
এএসআর