আর এ কাজ ‘অবৈধ’ উল্লেখ করে আপত্তি জানালে শেভরনের বাংলাদেশি কর্মকর্তাদের অবরুদ্ধ করে রাখা হয়। এ নিয়ে গুলশান থানায় শেভরন কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরি করেছে কোম্পানিটির কর্মচারী ইউনিয়ন।
সূত্র জানায়, গত আট মাস ধরে শেভরনের সঙ্গে দাবি দাওয়া নিয়ে কর্মচারীদের স্নায়ুযুদ্ধ চলছে। যা গত দু’দিনে চরমে উঠেছে।
যেহেতু কোম্পানি পরিবর্তন হয়ে যাচ্ছে, সে কারণে চাকরির নিশ্চয়তা এবং অর্জিত গ্র্যাচুইটির টাকার নিশ্চয়তা চেয়েছিলেন কর্মকর্তারা। এজন্য একটি ‘কম্প্রেশন প্যাকেজ’ চেয়েছিলেন তারা। এছাড়া শ্রম আইনানুসারে কল্যাণ তহবিলে কোম্পানির মুনাফার পাঁচ ভাগ দেয়ার কথা। ১০ বছর ধরে তাও দেয়নি শেভরন। এ বিষয়টি এখনও হাইকোর্টে বিচারাধীন।
কর্মচারী ইউনিয়নের মহাসচিব শাহরিয়ার আবদীন বাংলানিউজকে বলেন, আট মাস ধরে এসব নিয়ে আলাপ-আলোচনার নামে কালক্ষেপণ করে শেভরন। ২২ মে চূড়ান্তভাবে জানিয়ে দেয়, এটা হবে না। এ পরিস্থিতিতে শ্রম আইনের ২১০ ধারা অনুসারে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল ডিসপোর্ট’ ঘোষণা দেন শেভরনের কর্মকর্তারা।
শেভরনের আরেক কর্মকর্তা জানান, চীনের হিমালয় এনার্জি কোম্পানি লিমিটেডকে সবকিছু বুঝিয়ে দিতে যাচ্ছে শেভরন। এজন্য কর্মকর্তাদের প্রযুক্তিগত কাজ করতে নির্দেশ দেয়া হয়েছে।
এ দুই কর্মকর্তা আরো জানান, বিক্রির জন্য আইটি রিলেটেড কাজগুলো করানো হচ্ছিলো তাদের দিয়ে। কিন্তু শেভরন উৎপাদন-অংশীদারিত্ব চুক্তির (পিএসসি) আওতাভুক্ত কোম্পানি। সে কারণে এখানে যতো ‘এসেট’ কেনা হয় তা পেট্রোবাংলা থেকে ‘রি-ইমভাসমেন্ট’ বা পরিশোধ করা হয়। এটা করা হলে আল্টিমেটলি এ প্রপার্টির মালিক হয়ে যায় পেট্রোবাংলা। এরকম বিলিয়ন-মিলিয়ন ডলারের আইটি সফটওয়্যার যেগুলো ইন্টেলেকচুয়াল প্রপার্টি তারা এখন নিয়ে যাচ্ছে। পেট্রোবাংলার কাছে হস্তান্তর করছে না।
কর্মচারী ইউনিয়ন নেতারা বলেন, পেট্রোবাংলার সঙ্গে আমরা যোগাযোগ করে দেখেছি, এখনও বিক্রি বা হস্তান্তরের জন্য কোনো অনুমোদন নেয়নি শেভরন।
ইউনিয়নের সভাপতি নাসিম আজিম বাংলানিউজকে বলেন, ট্রানজেকশনের কাজ করতে আপত্তি দেয়ার পর ম্যানেজমেন্ট থেকে সবাইকে চাকরিচ্যুতির হুমকি দিয়ে ই-মেইল করা হয়। এসময় তারা শেভরনের পরিচালক (অপারেশন্স) গর্ডন মুরির সঙ্গে দেখা করতে চাইলে বহুতল ভবনের লিফট এবং বের হওয়ায় গেট তালাবদ্ধ করে রাখা হয়। ভেতরে তিন ঘণ্টা আটকে থাকার পর ‘ফায়ার এক্সিট’ দিয়ে বের হয়ে আসতে সক্ষম হন তারা। এরপরই গুলশান থানায় গিয়ে সাধারণ ডায়েরি করা হয়।
বাংলাদেশে উৎপাদিত মোট গ্যাসের অর্ধেকই শেভরন নিয়ন্ত্রিত গ্যাসক্ষেত্র থেকে আসে। এখন কোম্পানিটি এসব ক্ষেত্র হিমালয় এনার্জি কোম্পানি লিমিটেডের কাছে বিক্রি করে দেবে। হিমালয় এনার্জি কোম্পানিটি চীনের জেনহুয়া অয়েল এবং বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান সিএনআইসি করপোরেশনের একটি প্রতিষ্ঠান। এ দেশে থাকা ২০০ কোটি ডলারের সম্পদ এ বছরেই বিক্রি করতে চায় মার্কিন এ কোম্পানিটি।
বাংলাদেশ সময় ০৮২৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
এসএ/এসএইচ