বুধবার (২৪ মে) বেলা ১১টায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসি রাজু ভাস্কর্য, স্বোপার্জিত স্বাধীনতা চত্বর জুড়ে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
ঘণ্টাব্যাপী মানববন্ধনে আফিয়ার বিভাগের শিক্ষক, সহপাঠীরাসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের হাজারো শিক্ষার্থী অংশ নেন।
আফিয়ার কোর্স শিক্ষক ড. নিয়ামুল নাসের বলেন, সে নিউমোনিয়া নিয়ে সেন্ট্রাল হাসাপাতালে ভর্তি হয়। পরবর্তীতে বলা হল ক্যান্সার হয়েছে। আর মৃত্যুর সার্টিফিকেটে ডেঙ্গু না ক্যান্সার নট কনফার্ম লেখার কারণে রহস্য তৈরি হয়েছে। আমরা কোনো চিকিৎসকের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি না। আমরা আফিয়ার মৃত্যুর অবহেলায় জড়িতদের বিচার দাবি করছি।
তিনি বলেন, আফিয়া খুবই মেধাবী ছাত্রী ছিল। ক্লাসে তার উপস্থিতির হার ছিল ৯৫ ভাগ। আমি নিজে তার কয়েকটা কোর্সের খাতা দেখেছি। সবগুলো কোর্সে সে এ প্লাস পেয়েছে। সে বাইরে সময় দেয়ার কোনো প্রশ্নই ওঠে না। মৃত্যুর পর আফিয়ার ওপর অপবাদ দেওয়ার তিনি তীব্র নিন্দা জানান।
ডাক্তারদের মধ্যে সমন্বয়হীনতা রয়েছে উল্লেখ করে শিক্ষক নিয়ামুল নাসের বলেন, রিপোর্ট তৈরি করে যন্ত্র। আর সেটির ব্যাখ্যা দেন ডাক্তাররা। কিন্তু তিনজন ডাক্তার ভিন্ন ভিন্ন কথা বলেছেন। সেন্ট্রাল হাসাপাতালে কোনো কিছুর সমন্বয় ছিল না।
প্রাণিবিদ্যা বিভাগের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী জাবের খান এ সময় তিনটি দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো- সেন্ট্রাল হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে অবহেলার জন্য ক্ষমা চাইতে হবে। সেন্ট্রাল হাসপাতালের চিকিৎসক ফারহানা সীম কর্তৃক আফিয়ার ওপর মিথ্যা অপবাদের বিচার ও বিএমএ’র প্রেসনোটের জন্য ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে।
মানববন্ধনের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. গাউসিয়া ওয়াহিদুন্নেসা চৌধুরী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার গ্রুপের এডমিন মোতাকাব্বির খান প্রবাস, এসএম রাসেলসহ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীরা বক্তব্য রাখেন।
শিক্ষার্থীরা বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে মেডিকেলের বিভিন্ন ফেসবুক পেজে নোংরা কথা লেখা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। আমরা চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে নয়, যারা আফিয়ার মৃত্যুর ঘটনায় অবহেলা করেছে তাদের বিচার দাবি করছি। যাতে আর কোনো মেধাবী ছাত্রকে এভাবে অকালে চলে যেতে না হয়।
মানবন্ধনে শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন ধরনের লেখা সম্বলিত প্ল্যাকার্ড প্রদর্শন করেন। এতে লেখা ছিল- ‘চিকিৎসা সেবা আমাদের অধিকার’, ‘জীবন বাঁচাতে দিয়েছি রক্ত, আজ নাকি আমরা সন্ত্রাসীর ভক্ত’, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী একটি স্বপ্নের মৃত্যু হয়েছে , আমরা শোকাহত’, ‘মূল ঘটনা ধামাচাপা দিতে মৃত্য ব্যক্তির চরিত্রে কালিমা কেন’? ‘মৃত রোগীকে আইসিওতে রেখে ব্যবসা বন্ধ কর, জাতির পিতার বাংলায় অবহেলায় মৃত্যু নয়’।
গত ১৭ মে আফিয়াকে ধানমন্ডির সেন্ট্রাল হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিৎসক ১৮ মে বেলা ১২টায় তাকে মৃত ঘোষণা করেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪২৫ ঘণ্টা, মে ২৪, ২০১৭
এসকেবি/জিপি/এমজেএফ